পেল্লায়: হাসপাতালের বিশাল ভবন রয়েছে। তবে মেলে না উপযুক্ত পরিষেবা। নিজস্ব চিত্র
মহকুমার একমাত্র সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। মাস পাঁচেক আগে পরিকাঠামোর অভাবে এক রোগী ‘রেফার’কে ঘিরে উত্তাল হয়েছিল এই হাসপাতাল। অবশ্য তার পরেও পরিস্থিতি পাল্টায়নি ডেবরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। চিকিৎসকের অভাবে এখনও ফিরে যেতে হচ্ছে রোগীদের। বাড়ছে ক্ষোভ।
আগের গ্রামীণ হাসপাতালের তুলনায় চিকিৎসা পরিষেবা উন্নত হলেও সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের পরিকাঠামোয় এখনও পিছিয়ে রয়েছে ডেবরা। চিকিৎসকের অভাবে মেদিনীপুর মেডিক্যাল বা খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ছুটতে হচ্ছে রোগীদের। অথচ এই হাসপাতালেই গত অগস্টে অপারেশন থিয়েটারের অভাবে এক প্রসূতিকে রেফার করায় ‘তাণ্ডব’ চালিয়েছিলেন প্রসূতির পরিজনেরা। শৌচাগারে টেনে নিয়ে গিয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের গায়ে বিষ্ঠা মাখিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মারধর করা হয়েছিল নার্সদের। তার প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। হাসপাতালে পরিকাঠামোর অভাবে কেন চিকিৎসকদের হেনস্থার মুখে পড়তে হবে, সেই প্রশ্ন তুলেছিল চিকিৎসক সংগঠনগুলি। সেই অবস্থায় স্বাস্থ্য দফতরের কোপে পড়ে বদলতি হতে হয়েছিল নিগৃহীত ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককেই। এমন ঘটনার পরেও কেন ডেবরার এই হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থার মানোন্নয়ন হল না, সেই প্রশ্ন তুলছেন এলাকার বাসিন্দারাই।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস চারেক ধরে এখানে কোনও চর্ম রোগ বিশেষজ্ঞ নেই। অগস্টের ওই ঘটনার পর থেকে হাসপাতালে আসছেন না দুই শল্য চিকিৎসকও। ফলে, ওই দুই বিভাগে দেখাতে আসা রোগীদের অন্য হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে যেতে হচ্ছে। আগে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এক চর্ম বিশেষজ্ঞ ডেবরা হাসপাতালে সপ্তাহে দু’দিন আসতেন। কিন্তু তিনিও এখন আসছেন না। ডেবরার সত্যপুরের বাসিন্দা ঘনশ্যাম রায় বলেন, “আমার পিঠে সমস্যা রয়েছে। আগে বাইরের চিকিৎসককে টাকা দিয়ে দেখাতাম। সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল চালুর পরে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ আসায় সুবিধা হয়েছিল। কিন্তু এখন চার মাস ধরে ফের বাইরে চিকিৎসা করতে হচ্ছে। সুপার স্পেশ্যালিটি হয়ে লাভ কী হল!”
শল্য চিকিৎসক না থাকায় অস্ত্রোপচার করে প্রসব ছাড়া আর কোনও অস্ত্রোপচার হচ্ছে না। ছোট-খাটো অস্ত্রোপচারের জন্যও মেদিনীপুর মেডিক্যালে ছুটতে হচ্ছে। বালিচকের বাসিন্দা ব্যবসায়ী চন্দন পাল বলেন, “সত্যি বলতে সুপার স্পেশ্যালিটি হওয়ায় আগের তুলনায় চিকিৎসা ব্যবস্থায় অনেক উন্নতি হয়েছে। কিন্তু এখন দেখছি চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ, সার্জেন নেই। এত টাকা খরচ করে যখন এত ভাল একটি হাসপাতাল হয়েছে, তখন চিকিৎসা পরিষেবার আরও উন্নতি প্রয়োজন।”
এ প্রসঙ্গে খড়্গপুরের অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পালের বক্তব্য, “আমরা ওই দুই বিভাগের চিকিৎসকের জন্য স্বাস্থ্য দফতরে জানিয়েছি। স্বাস্থ্য দফতর চিকিৎসক নিয়োগ করলেই ওই বিভাগ দু’টি চালু করা যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy