Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

জঙ্গলের বাইরেও বনভোজনে মানা চিল্কিগড়ে

 জঙ্গলকে বাঁচাতে হবে। তাই গত বছর নিষিদ্ধ হয়েছিল প্লাস্টিকের ব্যবহার এবং আগুন জ্বালানো। এ বার জঙ্গলের ত্রিসীমানায় কোনও রকম বনভোজনের আয়োজন করা যাবে না বলে জানিয়ে দিল প্রশাসন।

মূল-ফটক: সাজিয়ে তোলা হয়েছে চিল্কিগড়ের জঙ্গল। নিজস্ব চিত্র

মূল-ফটক: সাজিয়ে তোলা হয়েছে চিল্কিগড়ের জঙ্গল। নিজস্ব চিত্র

কিংশুক গুপ্ত
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৭ ০৬:৩০
Share: Save:

জঙ্গলকে বাঁচাতে হবে। তাই গত বছর নিষিদ্ধ হয়েছিল প্লাস্টিকের ব্যবহার এবং আগুন জ্বালানো। এ বার জঙ্গলের ত্রিসীমানায় কোনও রকম বনভোজনের আয়োজন করা যাবে না বলে জানিয়ে দিল প্রশাসন।

পশ্চিমবঙ্গ জীববৈচিত্র্য পর্ষদের আপত্তিতে চিল্কিগড়ের জঙ্গল (কনক অরণ্য) লাগোয়া এলাকায় বনভোজন নিষিদ্ধ হল। শুক্রবার পর্ষদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার পরে এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামবনি ব্লক প্রশাসন। ফলে আজ, শনিবার থেকে জঙ্গল লাগোয়া কোথাও আর বনভোজন করা যাবে না। শুক্রবার পর্ষদের রিসার্চ অফিসার অনির্বাণ রায়ের নেতৃত্বে চার জনের এক প্রতিনিধি দল জঙ্গল পরিদর্শন করতে আসেন।

ব্লক স্তরের জীববৈচিত্র্য কমিটির সদস্যদের পাশাপাশি স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন এবং বনকর্মীদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন তাঁরা। এর পর জামবনির বিডিও মহম্মদ আলিম আনসারি ও জামবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সমীর ধলকে নিয়ে জঙ্গল এলাকাটি পরিদর্শন করেন পর্ষদের আধিকারিকরা।

জানা গিয়েছে, চিল্কিগড়ের ৬১ একর জঙ্গল এলাকাকে ‘বায়ো ডাইভার্সিটি হেরিটেজ সাইট’ ঘোষণা করতে উদ্যোগী হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ জীববৈচিত্র্য পর্ষদ। ইতিমধ্যে পর্ষদের প্রস্তাব মতো গত বছর থেকে জঙ্গলের ভিতর বনভোজন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

তবে জঙ্গলের বাইরের দিকে বনভোজনের বিকল্প জায়গা করা হয়েছিল। এ দিন প্রতিনিধিরা জঙ্গল পরিদর্শনের পরে জানিয়ে দেন, জঙ্গলের বাইরেও বনভোজন করা যাবে না। কারণ এর ফলে দূষণ ছড়িয়ে জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ পরিবেশের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

চিল্কিগড়ের জঙ্গলের মাঝে রয়েছে কয়েকশো বছরের পুরনো কনকদুর্গার মন্দির। সে কারণে জঙ্গলটিকে কনক অরণ্যও বলা হয়। মন্দির ঘিরে প্রশাসনিক উদ্যোগে পর্যটনের জন্য নানা পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। বছর খানেক আগেও এখানে জমাটি বনভোজনের আসর বসত। দলে দলে আসত পিকনিক পার্টি। আসেন এখনও।

তবে গত বছর শীতের মরসুম থেকে জঙ্গলের ভিতরে বনভোজন বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে জঙ্গলের বাইরে ডুলুং নদীর ধারে বনভোজন চলত। পর্ষদের আপত্তিতে এ বার বন্ধ হল সেটাও।

জামবনির বিডিও মহম্মদ আলিম আনসারি বলেন, “জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় বনভোজনের ফলে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। তাই পর্ষদের আপত্তিতে জঙ্গলের বাইরেও বনভোজন সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ করা হল। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার ক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।”

অনির্বাণবাবু বলেন, “চিল্কিগড়ের ঐতিহ্যবাহী জঙ্গলটি জীববৈচিত্র্যে ভরপুর। জঙ্গলটি বিভিন্ন জীব প্রজাতির আবাসস্থল। সেখানে বনভোজন বা কোলাহল বাঞ্ছনীয় নয়। হেরিটেজ ঘোষণার জন্য পদ্ধতি মাফিক পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chilkigarh Picnic
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE