ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে জখম তপনবাবু। নিজস্ব চিত্র
অফিস সেরে বন্ধুর সঙ্গে দেখা করে শনিবার রাতে বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাঁর।
কিন্তু ফেরেননি ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরের ডাককর্মী তপনকুমার সিংহ। রবিবার দিনভর খুঁজেও কিছু জানতে পারেননি পরিজনেরা।
সেই তপনবাবুকেই রবিবার গভীর রাতে ঝাড়গ্রাম ও বাঁশতলা স্টেশনের মাঝে রেললাইনের ধারে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন রেলকর্মীরা। গোড়ালি থেকে দু’টি পা-ই কাটা গিয়েছে তাঁর। পরে রেলপুলিশ এসে তাঁকে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করায়। ট্রেনের ধাক্কাতেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে অনুমান। তবে কী ভাবে ঘটনাটি ঘটেছে তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ। তপনবাবু কথা বলার অবস্থায় নেই।
পুলিশ সূত্রের দাবি, ঘোরের মধ্যে বিড়বিড় করে তিনি একবার বলেছেন, ট্রেনে চড়তে গিয়ে, লাইন পেরোতে গিয়ে কী হয়ে গেল। কিন্তু যেখানে তপনবাবুকে পাওয়া গিয়েছে, সেখানে ট্রেনের স্টপ নেই। কেনই বা তিনি লাইন পেরোতে যাবেন, তা নিয়েও ধন্দ রয়েছে। ঝাড়গ্রাম রেল পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘একটু সুস্থ হলে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ।’’
জামশেদপুরের আদিত্যপুরের বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের তপনবাবু ডাকঘরের কর্মী। তাঁর স্ত্রী রেণু সিংহের দবি, শনিবার স্কুটার নিয়ে অফিস যাওয়ার সময় তপনবাবু ঘাটশিলায় বন্ধুর বাড়ি যাওয়ার বলেছিলেন। রবিবার সারা দিনেও তিনি বাড়ি না ফেরায় চিন্তা বাড়ে পরিজনেদের। প্রথমে রিং হলেও পরে তপনবাবুর মোবাইল বন্ধ হয়ে যায়।
রেণুদেবী বলেন, “ভেবেছিলাম কোনও কাজে আটকে গিয়েছে। তাই থানা-পুলিশ করিনি। রবিবার রাত আড়াইটে নাগাদ রেলপুলিশ জানায়, ঝাড়গ্রামের কাছে দুর্ঘটনায় জখম হয়েছে ও।”
রেল সূত্রে খবর, রবিবার রাতে রেলের ট্র্যাক-নজরদার টিমের কর্মীরা টহল দেওয়ার সময় ঝাড়গ্রাম ও বাঁশতলা স্টেশনের মাঝে ডাউন লাইনের ধারে পা থেকে রক্ত ঝরছে, এমন অবস্থায় এক ব্যক্তিকে পড়ে থাকেন। পার্সে থাকা পরিচয়পত্রে তাঁর নাম ও বাড়ির ফোন নম্বর পায় রেল পুলিশ।
তপনবাবুর দুই ছেলে। বড় ছেলে দিল্লিতে বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থায় কর্মরত। ছোট ছেলে জামশেদপুরে পলিটেকনিকের ছাত্র। সোমবার সকালে ঝাড়গ্রামে এসেছিলেন রেণুদেবী ও তপনবাবুর ভাই পবনকুমার সিংহ। পবনবাবু দাবি করেন, দাদা নির্বিবাদী মানুষ। কারও সঙ্গে শত্রুতাও নেই। কেন এমন হল সেটাই স্পষ্ট হচ্ছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy