Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

নিখোঁজ রোগীর দেহ ছাদে

সিসিইউ থেকে হঠাৎ রোগী উধাও হয়ে যাওয়ায় প্রশ্নের মুখে পড়েছিল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিরাপত্তা। সেই রোগীর ঝুলন্ত দেহ মিলল হাসপাতালের ছাদে। আবারও সামনে এল জেলার অন্যতম বড় এই হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যস্থার খামতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর ও চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৪৫
Share: Save:

সিসিইউ থেকে হঠাৎ রোগী উধাও হয়ে যাওয়ায় প্রশ্নের মুখে পড়েছিল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিরাপত্তা। সেই রোগীর ঝুলন্ত দেহ মিলল হাসপাতালের ছাদে। আবারও সামনে এল জেলার অন্যতম বড় এই হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যস্থার খামতি।

সোমবার সকালে হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) থেকে নিখোঁজ হয়ে যান সমরেশ হাজরা (৩২)। মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালের পুরনো ভবনের তিনতলার ছাদে তাঁর দেহ মেলে। ছাদের কার্নিশ থেকে বেরনো লোহার শিকে গলায় গামছার ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছিল দেহটি। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “প্রাথমিক অনুমান আত্মহত্যার ঘটনা।” মৃতের কাছে সুইসাইড নোট মিলেছে। সেখানে একাধিক নাম রয়েছে। নোটটি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

মাস খানেক আগে মেদিনীপুর মেডিক্যালের শৌচাগারে এক রোগীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল। নিরাপত্তারক্ষী, সিসিটিভি ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও বারবার এমন ঘটনা ঘটছে কেন? সদুত্তর দেননি হাসপাতাল সুপার তন্ময়কান্তি পাঁজা। নিরাপত্তা নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডুও।

সমরেশের পরিজনেদের অবশ্য দাবি, এটি আত্মহত্যার ঘটনা নয়। সমরেশকে খুন করা হয়েছে। সিবিআইয়ের মতো কোনও তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করানোরও দাবি তুলেছেন পরিজনেরা। সমরেশের দাদা অমলেশ হাজরার কথায়, “ভাই আত্মহত্যা করতে পারে না। নিরপেক্ষ তদন্ত হলেই ঘটনার কিনারা হবে।”

সমরেশ ডব্লুবিসিএস অফিসার। তাঁর বাড়ি হুগলির চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগরে। শালবনিতে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের রাজস্ব আধিকারিকের প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন তিনি। সমরেশ শালবনিতে আসেন গত ৭ জানুয়ারি। ১৮ জানুয়ারি থেকে তিনি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন ছিলেন। হাসপাতাল সূত্রের খবর, অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি।

গত এপ্রিলে নিজের ছাত্রী পৌলমী রায়চৌধুরীকে বিয়ে করেন সমরেশ। কিন্তু চার মাসের মধ্যেই বাপের বাড়ি চলে যান পৌলমী। তাঁর অভিযোগ, শ্বশুরবাড়িতে মানসিক নির্যাতন করা হতো। ছেলের মৃত্যুর জন্য পৌলমীর পরিবারকে দায়ী করেছেন সমরেশের বাবা, দাদা। তাঁদের অভিযোগ, সংসার ছেড়ে বাপের বাড়ি চলে গেলেও ছেলে ভাল চাকরি পাওয়ার পর তাঁর উপর মানসিক চাপ তৈরি করছিল পৌলমীর পরিবার। যদিও তা অস্বীকার করে পৌলমী বলেন, ‘‘বাপের বাড়ি আসার পরে আর যোগ ছিল না। বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ি যা অত্যাচার করেছে, থানায় অভিযোগ করতে পারতাম। কিন্তু ওঁর কথা ভেবেই করিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE