Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণ, অভিযুক্ত কনস্টেবল

সেখ মোশাররফের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও প্রতারণার মামলা দায়ের করেছে রামনগর থানার পুলিশ। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে সেখ মোশাররফের দাবি, ‘‘আমাকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা অভিযোগ করেছেন ওই মহিলা।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:১৯
Share: Save:

বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল এক পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে। পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরের ঘটনা।

অভিযুক্ত ওই কনস্টেবল সেখ মোশাররফকে সপ্তাহখানেক আগে রামনগর থানা থেকে তমলুক থানায় বদলি করা হয়েছে। তবে নির্যাতিতা ওই মহিলা রামনগর থানায় নয়, গত ৩১ জানুয়ারি ডাকযোগে পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসুর কাছে ওই অভিযোগপত্র পাঠান। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘মহিলার অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।’’ সেখ মোশাররফের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও প্রতারণার মামলা দায়ের করেছে রামনগর থানার পুলিশ। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে সেখ মোশাররফের দাবি, ‘‘আমাকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা অভিযোগ করেছেন ওই মহিলা।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা মহিলার বাপেরবাড়ি মুর্শিদাবাদে। সেখানে তাঁর বিয়ে হয়েছিল এবং তাঁদের দু’টি ছেলেও রয়েছে। কিন্তু স্বামীর সঙ্গে ঝামেলার জন্য তিনি ছেলেদের নিয়ে বাপের বাড়িতে থাকতেন। সেই সময় তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর থানার বাসিন্দা উত্তম বেরা ওরফে মণ্টুর সঙ্গে। উত্তম বিভিন্ন জায়গায় লরিতে মালপত্র নিয়ে যেতেন। দিঘা থেকে মাছ নিয়ে তিনি মুর্শিদাবাদ গিয়েছিলেন। তখনই মহিলার সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। পরে ঘনিষ্ঠতা বাড়ায় উত্তম মহিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তিনি রাজি হয়ে যান এবং রামনগরে চলে আসেন।

মহিলা জানিয়েছেন, ২০১৪ সালের ৭ নভেম্বর উত্তমের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁর দাবি, সেই সময় উত্তম তাঁকে জানায়নি যে তার আগের পক্ষের স্ত্রী রয়েছে। বিয়ের পর তিনি শ্বশুরবাড়িতে গেলে তাঁকে মেনে নিতে অস্বীকার করেন উত্তমের বাড়ির লোকেরা। তখনই তিনি জানতে পারেন উত্তমের আগের পক্ষের স্ত্রী রয়েছে। এর পর উত্তম তাঁকে নিয়ে বালিসাইতে ঘর ভাড়া করে থাকতে শুরু করে। মাঝেমধ্যে মুশির্দাবাদ থেকে ছেলেদেরও নিয়ে আসতেন। কিন্তু কিছুদিন পরেই অশান্তি শুরু হয়। উত্তম মাঝেমধ্যেই বাড়ি আসত না বলে মহিলার অভিযোগ। এমনকী টাকাপয়সাও দিত না। ফলে তিনি খুবই সমস্যায় পড়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত ঠিক করেন স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানাবেন।

২০১৬ সালের মাঝামাঝি তিনি রামনগর থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে যান। সেখানে তাঁর সঙ্গে কনস্টেবল সেখ মোশাররফের পরিচয় হয়। নির্যাতিতার দাবি, মোশাররফ তাঁকে আলোপ-আলোচনায় বিষয়টি মিটমাটের কথা বলে। তার পর থেকে মোশাররফ সাহায্যের নামে প্রায়ই তাঁর বাড়িতে যাতায়াত শুরু করে। ক্রমে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর সঙ্গে সহবাস করতে শুরু করে। এর ফলে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। কিন্তু মোশাররফ তাঁকে গর্ভপাত করাতে বাধ্য করে। এর পর তিনি তাঁকে বিয়ে করার কথা বললে বেঁকে বসে মোশাররফ। তিনি থানায় অভিযোগ করবেন জানালে তাঁকে মেরে ফেলার হুমকিও দেয় সে। তিনি ভয় পেয়ে যান। এর পর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় মোশাররফ।

শেষ পর্যন্ত প্রতিবেশী কয়েকজনের পরামর্শে তিনি অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কাছে চিঠি লিখে অভিযোগ জানান। উত্তম বেরার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘মোশাররফের মধ্যস্থতায় ও ক্ষতিপূরণ বাবদ আমার কাছে ৬ লক্ষ টাকা চেয়েছিল। কিন্তু আমি দিতে পারিনি। দেড় বছর ধরে আমার সঙ্গে যোগাযোগ নেই। তবে মোশাররফের সঙ্গে কী হয়েছে জানি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

rape constable
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE