বিভ্রান্তি: রাতে সিগন্যালে জ্বলে লাল আলো। খড়্গপুরে। নিজস্ব চিত্র
রাত বাড়লেই নিয়ম নাস্তি। বরং অনিয়মই তখন হয়ে যায় নিয়ম। সিগন্যাল লাল দেখে কোনও গা়ড়়ি দাঁড়ালে ধাক্কা দিতে পারে পিছনে থাকা গাড়ি। খড়্গপুর শহরের ইন্দা ও পুরাতনবাজার মোড়ে রাত ৯টার পরে এখন দেখা যাচ্ছে এমন ছবি।
সম্প্রতি খড়্গপুর পুরসভার উদ্যোগে ও পুলিশের সহযোগিতায় শহরে চালু হয়েছে ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা। সারাদিন সিগন্যাল মেনে চলাচল করছে যানবাহন। নিয়ম ভাঙলে ট্রাফিক পুলিশের শাস্তির মুখেও পড়তে হচ্ছে গাড়ি-মোটরবাইক চালককে। কিন্তু রাত ৯টার পরেই বদলে যাচ্ছে নিয়ম। অভিযোগ, সিগন্যাল চালু থাকলেও নিয়ম মেনে রাস্তায় চলাচল করছেন না শহরের চালকদের একাংশ। বিশেষ করে ইন্দা এবং পুরাতনবাজার মোড়ে রাতে আইন ভাঙার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। বাইরে থেকে আসা চালকেরা সিগন্যাল দেখে ওই দুই মোড়ে দাঁড়িয়ে পড়ে বিভ্রান্তির শিকার হচ্ছেন।
রাতে যানবাহনের চাপ কম। তাই ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যাও কমে যায়। সিগন্যালে আলো জ্বলছে নিয়ম মেনে। অথচ সিগন্যাল ভাঙলে দেখার কেউ নেই। সেই সুযোগে যথেচ্ছ নিয়ম ভাঙছেন চালকদের একাংশ। ফলে বা়ড়ছে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা। শহরবাসীর একাংশের বক্তব্য, প্রয়োজনে রাতে লাল আলো বন্ধ করে রাখা হোক। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “রাত ৯টার পরে শহরের রাস্তায় যেহেতু যানবাহনের চাপ কমে যায় তখন আমরা ওই সময়ের পরে ট্রাফিক পুলিশ রাখছি না। তবে এটা ঠিক লাল আলো নিয়ম মতো সিগন্যালে জ্বলছে। আমরা এ বার রাত ৯টার পরে কমলা আলো সিগন্যালে জ্বালিয়ে রাখব যাতে যানবাহন সাবধানে রাস্তা পার হয়।”
২০১১সালে শহরের ইন্দা মোড় ও পুরাতনবাজার মোড়ে চালু করা হয়েছিল এই স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল। খরচ হয়েছিল ১১ লক্ষ টাকা। কিন্তু তার পরে কেটে গিয়েছিল প্রায় ৭বছর। চালু হয়েও নিয়ন্ত্রণের অভাবে কার্যকর হচ্ছিল না এই ব্যবস্থা। এ বার পুরসভা উদ্যোগী হয়। কলকাতার যে সংস্থা ওই স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা চালু করেছিল তাদের দিয়ে সিগন্যাল মেরামত করায় পুরসভা। ঠিক হয়েছে, আপাতত ইন্দা ও পুরাতনবাজার মোড়ে থাকা সিগন্যাল ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ। এর পরে শহরের আরও বেশ কয়েকটি মোড়ে সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু হবে।
চালু তো হয়েছে। কিন্তু ইন্দা ও পুরাতনবাজার মোড়ে সিগন্যালে যান নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিশকে। অনেকেই পুরনো অভ্যাসে সিগন্যাল না মেনেই রাস্তা পার হওয়ার চেষ্টা করছেন। আবার অনেকেই হঠাৎ লাল আলো দেখতে পেয়ে রাস্তার মাঝেই দাঁড়িয়ে পড়ছেন। মেদিনীপুরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ আচার্য বলেন, “কয়েকদিন আগে রাত ৯টা নাগাদ খড়্গপুর থেকে মেদিনীপুরে ফেরার সময় সিগন্যালে লাল আলো দেখে দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু দেখলাম অনেকেই সিগন্যালে না দাঁড়িয়ে চলে যাচ্ছে। কোনও ট্রাফিক পুলিশও ছিল না। এটা কেমন নিয়ম! এতে তো বিপদ হবে।’’
লালে বাড়ছে বিভ্রান্তি। বাড়ছে বিপদ। কমলা কি পারবে বিভ্রান্তি কাটাতে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy