Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
কৃষক বাজারের মতোই কি দশা, উঠছে প্রশ্ন

চারমাসেও দোকান বসেনি কর্মতীর্থে

প্রায় চার মাস আগে কর্মতীর্থের ৫৪টি দোকানঘর বিলি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু হাতে গোনা কয়েকটি দোকান খুলছে ইদানীং। যাঁরা দোকান খুলেছেন তাঁদের অভিযোগ, ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ও পুরাতন বাজার থেকে বেশ কিছুটা দূরে বলে ক্রেতারা আসতে চাইছেন না।

ফাঁকা: ঝকঝকে চত্বর। পা পড়ে না ক্রেতার। নিজস্ব চিত্র

ফাঁকা: ঝকঝকে চত্বর। পা পড়ে না ক্রেতার। নিজস্ব চিত্র

আনন্দ মণ্ডল
তমলুক শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৭ ০০:৫৬
Share: Save:

ঝকঝকে বাজার তৈরি হয়েছে। কিন্তু ক্রেতা আসেন না।

এমন রোগেই ভুগছে পাঁশকুড়ার কৃষক বাজার। সেই উপসর্গই আবার দেখা দিচ্ছে পাঁশকুড়া পুরাতন বাজারের কাছে গড়ে ওঠা কর্মতীর্থ মার্কেট কমপ্লেক্সে।

প্রায় চার মাস আগে কর্মতীর্থের ৫৪টি দোকানঘর বিলি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু হাতে গোনা কয়েকটি দোকান খুলছে ইদানীং। যাঁরা দোকান খুলেছেন তাঁদের অভিযোগ, ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ও পুরাতন বাজার থেকে বেশ কিছুটা দূরে বলে ক্রেতারা আসতে চাইছেন না। মার খাচ্ছে ব্যবসা। প্রশাসনও ঠিকমতো প্রচার করেনি বলে অভিযোগ।

বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে রাজ্য সরকারের সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে পাঁশকুড়া পুরসভা অফিসের কাছে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে কয়েকশো মিটার দূরে দোতলা ভবন তৈরি করেছিল। এখানে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসার জন্য রয়েছে মোট ১২০ টি দোকানঘর। তারমধ্যে প্রথম দফায় ৫৪টি দোকানঘরের চাবি তুলে দেওয়া হয়েছে নির্দিষ্ট আবেদনের ভিত্তিতে। কিন্তু তবু কেউ দোকান খুলছেন না কর্মতীর্থ ভবনে।

সপ্তাহের যে কোনও সময় কর্মতীর্থ ভবনে গেলে দেখা যায় বেশিরভাগ দোকানঘরের ঝাঁপ বন্ধ। সু্ন্দর করে সাজানো গোটা চত্বর সুনসান। ঘর ভাড়া নিয়ে আটজন ব্যবসায়ী বসেন স্টেশনারি, বৈদ্যুতিন সামগ্রী, দর্জি, আলু-সব্জি ও খাবারের দোকানে। বৈদ্যুতিন সামগ্রীর দোকানদার অনুপ দিন্দা। তিনি বলেন, ‘‘বেকার যুবক হিসেবে এখানে দোকানঘর পেয়েছিলাম। তারপর প্রায় ৯০ হাজার টাকা জোগাড় করে ব্যবসা শুরু করেছিলাম। কিন্তু লাভ নেই। এখানে তো লোকজন আসে না। বিক্রি বাটা হচ্ছে না।’’

অনুপদের দেখেই যে অন্যরা আর দোকান করার কথা ভাবছেন তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন আর এক যুবক। তিনিও আবেদন করে দোকানের চাবি পেয়েছিলেন। সেই যুবক বলেন, ‘‘যাঁরা দোকান খুলেছেন, তাঁদের অবস্থা তো দেখছি! ব্যবসা করার তো একটা খরচও আছে। প্রথমেই যদি বুঝতে পারি লাভ হবে না, তবে সে খরচটুকুই বা করব কোন ভরসায়?’’

পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলা শাসক (ট্রেজারি) প্রশান্ত অধিকারী অবশ্য বলেন, ‘‘দোকান খোলা হয়নি, এটা আমরা জানি। এ জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। বিলি না হওয়া অন্য দোকানঘরগুলিও সরকারি নিয়মমেনে বিলি হবে। আমরা প্রচারও চালাচ্ছি।’’

তবে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, কৃষক বাজারের মতোই অবস্থা কর্মতীর্থের। এলাকার কৃষকদের ফসল বেচাকেনার সুবিধার জন্য কয়েক কোটি টাকা খরচে পাঁশকুড়ায় গড়ে হয়েছে কৃষক বাজার। পাঁশকুড়ার মেচগ্রামের কাছে ঘাটাল-পাঁশকুড়া সড়কের ধারে বছর খানেক ওই বাজারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলেও এখনও সেখানে অচলাবস্থা চলছে বলে অভিযোগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tamluk Karma Tirtha Market তমলুক
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE