Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ভবিষ্যৎ-চিকিৎসকদের পাশে খুদেরা

ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করা দুঃস্থ কয়েকজন পড়ুয়া মাসিক বৃত্তি পাবেন খুদেদের ওই ক্ষুদ্র সঞ্চয় থেকে।

গৃহপ্রবেশের অনুষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীরা। —নিজস্ব চিত্র।

গৃহপ্রবেশের অনুষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীরা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মহিষাদল শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৮ ০৭:০০
Share: Save:

স্কুলের টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে প্রতি মাসে পাঁচ টাকা করে জমাচ্ছে মহিষাদলের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যমের ছাত্রছাত্রীরা। ক্ষুদ্র সঞ্চয়। কিন্তু উদ্দেশ্য মহৎ। ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করা দুঃস্থ কয়েকজন পড়ুয়া মাসিক বৃত্তি পাবেন খুদেদের ওই ক্ষুদ্র সঞ্চয় থেকে।

সরকারি প্রতিষ্ঠানে ডাক্তারি পড়তে খুব একটা খরচ লাগে না ঠিকই। কিন্তু বহু ক্ষেত্রে আনুষঙ্গিক খরচ চালানোর মত সামর্থ থাকে না দুঃস্থ পড়ুয়াদের। ডাক্তারি পড়ার ক্ষেত্রে অর্থ যাতে কোনও বাধা হয়ে না দাঁড়ায় সেজন্য জোট বেঁধেছে পড়ুয়ারা।

তবে এই জোট বাঁধার প্রক্রিয়াটা শুরু হয়েছিল আগেই। ছাত্রদের নিয়ে ট্রাস্ট গড়ে তুলেছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। ট্রাস্ট তৈরির পর থেকে ১২০০ ছাত্রছাত্রী প্রতি মাসে মাথাপিছু ৫ টাকা করে জমায়। তহবিল বৃদ্ধিতে সাহায্য করেন শিক্ষক, শিক্ষিকারাও। ওই তহবিল থেকে এবার দু’জনকে সাহায্য করা হবে বলে জানাল পড়ুয়ারা। মেহুলি মান্না নামে এক ছাত্রীর কথায়, ‘‘এর আগেও আমাদের স্কুল থেকে এক দাদাকে মেডিক্যালে পড়ার জন্য সাড়ে চার বছর টাকা দেওয়া হয়েছে। এবার আমরাই টাকা দেব এমনটা ভাবতেই আনন্দ হচ্ছে।’’ রীতিমত বিজ্ঞাপন দিয়েই দুঃস্থ ও মেধাবী ছাত্র খোঁজা হবে বলে জানান স্কুলের সাথে যুক্ত প্রাক্তন অধ্যাপক হরিপদ মাইতি।

স্কুলের প্রিন্সিপাল নয়নতারা রায় জানান ,বেশ কয়েকবছর আগে বছরে এককালীন ছাত্র ও ছাত্রীদের কাছ থেকে ৫০ টাকা নেওয়া হয়েছিল। সেই অর্থ দিয়ে বছর কয়েক আগে শুরু হয় এই সমাজসেবা। ট্রাস্টের হাত ধরেই এতোদিন বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে অর্থ সাহায্য থেকে শুরু করে অনাথ আশ্রম ও হোমে খাদ্য ও বস্ত্র সরবরাহ করতো ছাত্র ছাত্রীরা। গত বছর গণেশ মান্না নামে এক বৃদ্ধ পড়শিকে ঘর তৈরি করে দিয়েছিল তারা। নয়নতারা বলেন,‘‘পড়ুয়াদের মাটির কাছাকাছি আনতেই এই উদ্যোগ। আমাদের ছেলেমেয়েদের বেশিরভাগই নিউক্লিয়ার পরিবার থেকে এসেছে। ওদের মধ্যে পরিবারের ধারণা গড়ে তোলার চেষ্টা করছি।’’

এই ট্রাস্টের অর্থ দিয়ে কীভাবে সাহায্য করা হবে সেই বিষয়ে একটি ছাত্রছাত্রীদের কমিটিও তৈরি করে দেওয়া হবে। সেই কমিটি স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের পরামর্শ নিয়েই কাজ করবে। তবে আপাতত পড়ুয়াদের আনন্দের শেষ নেই। কারণ, তাদের প্রিয় গণেশদাদু তো এখন পরিবারেরই অংশ। বুধবার ছিল গণেশদাদুর গৃহপ্রবেশ। সেখানে গিয়ে আনন্দ মেতে উঠল পড়ুয়ারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Doctor Student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE