স্মরণ: বাবার ছবির সামনে আলেইদিতা মিত্র। —নিজস্ব চিত্র।
বাবার মৃত্যুর পরে মেয়ের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছিল। সেই মেয়েকেই এ বার চোয়াল শক্ত করে বলতে শোনা গেল, “আমার নামটা বাবার বড্ড প্রিয় ছিল। নামটার মর্যাদা যেন রাখতে পারি।”
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিহত বাম নেতা গৌতম মিত্রের স্মরণসভা হয়েছে মেদিনীপুরের খয়েরুল্লাচকে। স্থানীয় মিত্র ভবনে পরিবারের তরফে আয়োজিত এই সভাতেই কথাগুলো বলছিলেন মেদিনীপুরের গোপ কলেজের ছাত্রী আলেইদিতা মিত্র, গৌতমবাবুর মেয়ে। কিউবার জনবিপ্লবের নায়ক চে গেভারা-র মেয়ের নামেই নাম আলেইদিতার। স্মরণসভায় হাজির সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস সিংহ বলছিলেন, “আলেইদিতা নামটা আমারই দেওয়া। কিউবা সফরে গিয়ে চে গেভারা-র বাড়ি গিয়েছিলাম। ওঁর মেয়ের নামটা মনে ধরেছিল। গৌতমকে যখন ওর মেয়ের নাম আলেইদিতা রাখতে বলি ও এককথায় রাজি হয়েছিল।” গৌতমবাবুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন তাপসবাবু।
গত ১০ মে কলকাতার এসএসকেএমে মৃত্যু হয় অবিভক্ত মেদিনীপুরে ডিওয়াইএফের জেলা সভাপতি গৌতমবাবুর। স্থানীয় তৃণমূল নেতা বিশ্বজিৎ কর্মকারের নেতৃত্বে তাঁর উপরে হামলা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় তৃণমূলের দুই নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ছাত্র রাজনীতি থেকেই সিপিএমের যুব সংগঠনে আসেন গৌতমবাবু। সুবক্তা ছিলেন, ছিলেন মিশুকে। মানুষ বিপদে পড়েছেন শুনলে ছুটে যেতেন। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেন। পাড়ার রক্তদানে, রবীন্দ্র-নজরুল সন্ধ্যায়, হাসপাতালে রোগীর পাশে, সব জায়গায় গৌতমবাবুকে পাশে পাওয়া যেত। এ দিন তাঁর স্মরণসভার আত্মীয়, প্রতিবেশী, শুভানুধ্যায়ীরা চোখের জলে স্মৃতিচারণ করেছেন। সভায় ছিলেন গৌতমবাবুর স্ত্রী বুলবুল মিত্র, ছেলে আগ্নিকও। স্মরণসভায় বাবার কথা বলতে গিয়ে অঝোরে কেঁদেছেন আলেইদিতা। আত্মীয়, শুভানুধ্যায়ীদের তখন সান্ত্বনা দিয়ে বলেছেন, ‘এগিয়ে চলো আলেইদিতা। আমরা সবাই পাশে আছি।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy