Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

রাস্তায় মিলল তৃণমূল নেতার দেহ

তৃণমূলের কেশিয়াড়ি ব্লক সভাপতি জগদীশ দাস ও কিসান খেত মজদুর সংগঠনের মহকুমা সভাপতি ফটিক পাহাড়ির অনুগামী হিসেবে পরিচিত দলীয় কর্মীদের মধ্যে বিরোধ দীর্ঘদিনের।

খুনের অভিযোগে কেশিয়াড়িতে তৃণমূলের অবরোধ। নিজস্ব চিত্র

খুনের অভিযোগে কেশিয়াড়িতে তৃণমূলের অবরোধ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৫
Share: Save:

স্কুল পরিচালন সমিতির বৈঠক সেরে মঙ্গলবার রাতে বাইকে বাড়ি়র উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। রাত হয়ে গেলেও বাড়ি না ফেরায় খোঁজ শুরু করেন পরিজনেরা। বুধবার সকালে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ির নছিপুর অঞ্চলের ভসরা গ্রামে রাস্তার ধার থেকে উদ্ধার হল মৃত্যুঞ্জয় সাঁতরা (৪৭) নামে ওই তৃণমূল নেতার দেহ। রাতেই মৃতের স্ত্রী রুনা সাঁতরা কেশিয়াড়ি থানায় স্বামীকে খুনের অভিযোগ জানান। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত্যুঞ্জয়বাবুর মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, তাঁকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তৃণমূলের কেশিয়াড়ি ব্লক সভাপতি জগদীশ দাস ও কিসান খেত মজদুর সংগঠনের মহকুমা সভাপতি ফটিক পাহাড়ির অনুগামী হিসেবে পরিচিত দলীয় কর্মীদের মধ্যে বিরোধ দীর্ঘদিনের। নছিপুরে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি কে হবেন, তা নিয়েও দুই গোষ্ঠীর বিরোধ রয়েছে। জগদীশ অনুগামীদের দাবি, ওই এলাকার অঞ্চল সভাপতি বাদল মাইতি। তবে তিনি দীর্ঘদিন অসুস্থ। ফটিক অনুগামীদের পাল্টা দাবি, মৃত্যুঞ্জয় সাঁতরাই ওই এলাকার অঞ্চল সভাপতি ছিলেন।

শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর বিরোধ চললেও ফটিক অনুগামী হিসেবে পরিচিত মৃত্যঞ্জয়বাবুর সঙ্গে জগদীশ দাসেরও সুসম্পর্ক ছিল বলে স্থানীয়দের দাবি। বুধবারের ঘটনাতেও শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর অভিযোগের তির বিজেপির দিকে। বিজেপির পাল্টা দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলই দায়ী। এ দিন ক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মীরা পথ অবরোধ করে। বিজেপি-র পতাকাও পোড়ানো হয় বলে অভিযোগ।

পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে কেশিয়াড়ির নছিপুর হাইস্কুলের পরিচালন সমিতির বৈঠকে যোগ দেন সমিতির সদস্য মৃত্যুঞ্জয়বাবু। বৈঠক সেরে বাইকে ডাডরা গ্রামে বাড়ি ফিরছিলেন। তবে ফেরা হল না। বুধবার ভসরার কাছে রাস্তার ধারে একটি দেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। মৃত্যুঞ্জয়বাবুর বড় ছেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাবার দেহ শনাক্ত করে। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়।

তৃণমূল নেতা ফটিক পাহাড়ির অভিযোগ, মৃত্যুঞ্জয় সাঁতরাকে খুন করা হয়েছে। এর সঙ্গে বিজেপি যুক্ত বলেই তাঁর দাবি। একই ভাবে, দলের ব্লক সভাপতি জগদীশবাবুরও দাবি, তাঁদের দলের নেতাকে খুন করা হয়েছে। বিজেপি বা সিপিএম এই ঘটনায় যুক্ত থাকতে পারে। অভিযোগ মানতে নারাজ বিজেপি-র আদিবাসী মোর্চার জেলা সভাপতি বিনোদ মুর্মু। তাঁর দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে তাঁদের দল যুক্ত নন। তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে এলাকা দখল নিয়ে গোলমালে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির দাবি, তাঁদের দলে গোষ্ঠীকোন্দল নেই। বিজেপি-র লোকেরা এলাকা দখল করতে চাইছে। তাই তাঁদের দলের নেতাকে খুন করা হয়েছে বলে মনে করছে এলাকার বাসিন্দারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Road Blockade TMC Leader Dead Body road
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE