Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

বই পড়ার অভ্যাস গড়তে দৃষ্টান্ত শিরষি-র

বৃহস্পতিবার দুপুরে পাঠাগারের আনুষ্ঠানিক সূচনা করলেন ঝাড়গ্রাম জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত। হাজির ছিলেন ঝাড়গ্রাম জেলার সহকারি বিদ্যালয় পরিদর্শক শুভাশিস মিত্র।

খুদে পড়ুয়াদের বই হাতে তুলে দিচ্ছেন বিশ্বজিৎবাবু। নিজস্ব চিত্র

খুদে পড়ুয়াদের বই হাতে তুলে দিচ্ছেন বিশ্বজিৎবাবু। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৩১
Share: Save:

ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। তা প্রমাণ করে দেখালেন ঝাড়গ্রাম জেলার শিরষি প্রাথমিক স্কুল কর্তৃপক্ষ ও গ্রামবাসীরা। স্কুলের মাটির ঘরের একাংশে চালু হল খুদে পড়ুয়াদের জন্য পাঠাগার। যেখানে নানা ধরনের সহায়িকা, গল্পের বই, নাটকের বই, শিক্ষামূলক বই পড়ার সুযোগ পাবে তারা। সুলভ দামে সেখান থেকে মিলবে খাতা, পেন্সিলও। শুধু খুদেরাই নয়, পাঠাগারে প্রতিদিন খবরের কাগজ পড়ার সুযোগ পাবেন গ্রামবাসীরাও।

বৃহস্পতিবার দুপুরে পাঠাগারের আনুষ্ঠানিক সূচনা করলেন ঝাড়গ্রাম জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত। হাজির ছিলেন ঝাড়গ্রাম জেলার সহকারি বিদ্যালয় পরিদর্শক শুভাশিস মিত্র। এ দিন কয়েকজন পড়ুয়াকে পাঠাগারের বইও দেন বিশ্বজিতৎবাবু।

শিক্ষার অধিকার আইনেই বলা আছে প্রাথমিক স্কুলে অবশ্যই পাঠাগার থাকার কথা। যদিও বাস্তবে বহু স্কুলেই তার অস্তিত্ব নেই। সাধারণত, সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলিতে ক্লাসঘরের সমস্যা থাকে। একটা মাত্র ঘরে গাদাগাদি করে তিনটে ক্লাসের পড়ুয়াদের বসতে হয়। শিরষি প্রাথমিক স্কুলও তার ব্যতিক্রম নয়। স্কুলের পাকা বাড়িতে একটিই ক্লাসঘর। সেখানেই শিশুশ্রেণি, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াদের মিলিজুলি পড়াশোনা। স্কুলের পুরনো মাটির বাড়িতেও একটিই ঘর। সেখানে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়ারা বসে। মাটির ওই ক্লাসঘরের এক পাশে পর্দার আড়ালই তৈরি করেছে এই পাঠাগার। সেখানে রাখা দু’টি আলমারিই বইয়ে ঠাসা। নেই চেয়ার টেবিল। পাঠাগারে চাটাই পেতেই পড়ার ব্যবস্থা। স্কুলের পড়ুয়ার সংখ্যা ৫২। বেশিরভাগই দরিদ্র অনগ্রসর পরিবার থেকে আসা। স্কুলের টিচার-ইনচার্জ হিমাংশুশেখর মাহাতো, সহশিক্ষক আশিস সরকার, দিপালি হাঁসদা বলেন, ‘‘ইন্টারনেট-এর জমানায় বই পড়ার প্রবণতা কমছে। শিরশি গ্রামের পড়ুয়াদের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতেই এই উদ্যোগ।” শুধু বই নয়, পাঠাগারে রাখা হয়েছে খাতা, পেন্সিলও। যাতে পড়ুয়ারা সুলভে তা কেনার সুযোগ পায়।

বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “সদিচ্ছা থাকলে যে কোনও কাজই যে করা যায়, সেটা প্রমাণ করে দিয়েছেন শিরশি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও গ্রামবাসীরা। শিরশি স্কুলের এমন কাজে অন্য স্কুলগুলিও অনুপ্রাণিত হবে।”

পাঠাগারের উদ্বোধন উপলক্ষে এদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে স্কুলের বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীরা। গ্রামের ১২২টি পরিবারের মধ্যে ১১০টি পরিবারের জন্য সরকারি প্রকল্পে শৌচাগার তৈরি হয়েছে। এদিন শৌচাগার ব্যবহারের আবেদন জানিয়ে গ্রামে পদযাত্রাও করে পড়ুয়ারা। তাতে সামিল হন অভিভাবক ও গ্রামবাসীরা। ছিল নবীনবরণ ও স্কুল চত্বরে গাছ লাগানোর কর্মসূচি।

শিরশিতে বাড়ি ঝাড়গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ অমিয় মাহাতোর। তিনি বলেন, “পাঠাগারের পাকা বাড়ি তৈরির জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Child Book Teacher
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE