খাঁদারানিকে সাজিয়ে পর্যটকদের কাছে হাজির করার ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছে বন দফতর। কিন্তু শীতের মরসুমে পিকনিক পার্টির ‘অত্যাচারে’ কাহিল অবস্থা ঝাড়গ্রামের এই নতুন পর্যটনকেন্দ্রের।
তিনদিকে পাহাড় ঘেরা খাঁদারানি ঝিলে বছরভর পরিযায়ী পাখি ও বালিহাঁসের আনাগোনা লেগে থাকে। পাছে দূষণ ছড়ায় তাই বিশালাকায় ঝিলে স্নান করা নিষিদ্ধ। কিন্তু শীতের ছুটিতে বনভোজনে আসা পযর্টকদের ফেলে যাওয়া আবর্জনায় এখন মুখ ঢেকেছে বেলপাহাড়ির খাঁদারানি। শীতের শুরু থেকে এ পর্যন্ত দূষণ যে ভাবে বেড়েছে তাতে পরিযায়ী পাখি আসা কমে গিয়েছে বলে স্থানীয় মানুষের অভিযোগ। উপযুক্ত নজরদারির অভাবে বনভোজনে আসা লোকজন যাবতীয় নোংরা-আবর্জনা ফেলে দিচ্ছেন ঝিলের জলে। প্রশাসনের সতর্কতা বোর্ড থাকলেও তা নিয়ে কারও ভ্রূক্ষেপ নেই।
তিন পাহাড়ের কোলে ওই এলাকায় হইচই, মাইক বাজানো আইনত নিষিদ্ধ। কিন্তু অভিযোগ, তারপরেও ঝিল চত্বরে অবাধে উচ্চস্বরে সাউন্ড বক্স বাজিয়ে বনভোজন, মদের আসর, হুল্লোড় চলে। মদের বোতল, থার্মোকলের থালা, প্লাস্টিকের বাটি-গ্লাস পড়ে থাকে ইতিউতি। এমনকী ঝিলের জলে নোংরা পড়ে তাও দূষিত হচ্ছে।
শীতের শুরু থেকেই পর্যটকদের ভিড় বাড়ে খাঁদারানিকে দেখতে। কিন্তু উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকায় সমস্যায় পড়তে হতো তাঁদের। পরে খাঁদারানিতে ব্লক-প্রশাসনের উদ্যোগে পর্যটকদের জন্য শৌচাগার তৈরি হলেও সেখানে জলের ব্যবস্থা নেই। দরজা উধাও হয়ে নেই আব্রুও। ঝিলের জলে স্নানে নিষেধাজ্ঞা জানিয়ে সরকারি বিজ্ঞপ্তিও থাকলেও তা নামেই। তা মানা হচ্ছে কি না দেখার কেউ নেই। বেলপাহাড়ির বিডিও সন্তু তরফদার বলেন, “সমস্যা মেটানোর জন্য স্থানীয় গ্রামবাসীদের নজরদারির কাজে লাগানো হচ্ছে। নজরদারির পাশাপাশি, ওই এলাকা পরিষ্কার রাখার কাজও করবেন গ্রামবাসীরা। এর জন্য তাঁরা মজুরিও পাবেন। এলাকায় গাড়ি পার্কিং বাবদ আয় থেকে গ্রামবাসীদের মজুরির ব্যবস্থা করা হবে।”
খাঁদারানি বনাঞ্চল হওয়ায় পরিবেশের ক্ষতি না করে পর্যটকদের প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছে ঝাড়গ্রাম বন বিভাগ। ছাউনি-সহ অস্থায়ী বসার জায়গা, পানীয় জল প্রকল্প, শৌচাগার, পাখি দেখার ওয়াচ টাওয়ার, জঙ্গলপথে ট্রেকিং রুট তৈরি করা হবে। বেলপাহাড়ি ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে ঝিলের নিকটবর্তী বারিঘাটি গ্রামে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দার বাড়িতে ‘হোম স্টে’ চালুর ব্যবস্থা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy