Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

অসময়ে বৃষ্টি, ভাবাচ্ছে ডেঙ্গি

এক সময় ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি এলাকাটি ম্যালেরিয়া প্রবণ বলে চিহ্নিত ছিল। এখন ঝাড়গ্রাম জেলার জামবনি, লালগড়, নয়াগ্রামের মতো এলাকাতেও মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়ে চলেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৭ ০২:২০
Share: Save:

নভেম্বরের মাঝামাঝি মশার উৎপাতে জেরবার ঝাড়গ্রাম শহরের বাসিন্দারা। বুধ ও বৃহস্পতিবার নিম্নচাপের বৃষ্টি তাতে আরও ইন্ধন জুগিয়েছে। বৃষ্টির জলে অরণ্যশহরে মশা আরও বাড়তে পারে আশঙ্কায় করছে পুরসভা। ত্রস্ত স্বাস্থ্য দফতরও।

এক সময় ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি এলাকাটি ম্যালেরিয়া প্রবণ বলে চিহ্নিত ছিল। এখন ঝাড়গ্রাম জেলার জামবনি, লালগড়, নয়াগ্রামের মতো এলাকাতেও মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়ে চলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জীববৈচিত্র্যে সার্বিক পরিবর্তনের ফলে মশাবাহিত রোগের প্রবণতা ঢুকে পড়েছে ঝাড়গ্রাম শহরও।

শহরের বিভিন্ন এলাকার জমা জলে ভূরি ভূরি এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে। হেমন্তের বৃষ্টিতে মশার দাপট আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা পতঙ্গবিদদেরা। তাঁদের মতে, বৃষ্টি যেমন হচ্ছে, তেমন সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার করতে হবে জল। কোনও ভাবেই জল জমতে দেওয়া যাবে না, আবর্জনা তো না-ই। স্প্রে করতে হবে উপযুক্ত মশা নাশক।

তবে এই জঞ্জাল সাফাই নিয়েই তৈরি হয়েছে দ্বন্দ্ব। একাংশ নাগরিক যেভাবে জঞ্জাল ও জল জমিয়ে রাখেন তাতে উদ্বিগ্ন পুর কর্তৃপক্ষ। আবার শহরবাসীর অভিযোগ, এমনিতেই শহরের জঞ্জাল আবর্জনা নিয়মিত সাফ করা হয় না। তার উপর ঝড়বৃষ্টি হলে সাফাই কর্মীদের দেখা পাওয়াই ভার। গত মে থেকে অক্টোবর— ছ’মাস মশা বাহিত রোগ ঠেকাতে বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা ও মশা মারার কাজ করেছিল পুরসভা। তবে তার পরেও অরণ্যশহরের ছবিটা বিশেষ বদলায়নি। তাই ওই কর্মসূচি আরও দু’মাস বাড়িয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।

তার উপর শহরের কিছু এলাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই জল জমে যায়। গত কয়েক মাসে শহরের বিভিন্ন এলাকায় জমা জলের নমুনা পরীক্ষা করে স্বাস্থ্য দফতরের পতঙ্গবিদরা অজস্র এডিস মশার লার্ভা পেয়েছিলেন। শহরের প্রান্তিক এলাকায় বাসিন্দাদের ঘরে বাঁশের ফোঁকরেও বৃষ্টির জল জমে মশার লার্ভা মিলেছিল। এ বার অসময়ের বৃষ্টিতে উদ্বেগ বাড়ছে স্বাস্থ্য দফতর ও পুরসভার।

মশা বাহিত রোগ ঠেকাতে সচেতনতা প্রচার ও মশা মারার কর্মসূচি নিয়ে পুরসভা নানা দাবি করছে। তবে বাস্তব ছবিটা উল্টোকথাই বলছে। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত অরণ্যশহরের তিন জন বাসিন্দা ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। তবে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। পুরপ্রধান দুর্গেশ মল্লদেব বলেন, “মশা বাহিত রোগ ঠেকাতে ও মানুষজনকে সচেতন করতে পুরসভার বিশেষ কর্মসূচি ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে।”

তবে একাংশ বাসিন্দাকে কিছুতেই সচেতন করা যাচ্ছে না— সে কথাও সত্য। বাসিন্দারা নির্দিষ্ট জায়গায় ভ্যাটে জঞ্জাল না ফেলে যেখানে সেখানে জঞ্জাল ছড়িয়ে দিচ্ছেন। বাড়ির ভিতরে ও উঠোনে খালি পাত্রে জল জমে থাকছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

rain Dengue
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE