তাণ্ডব: স্কুলে ভাঙচুরের পর। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
কড়া পাহারা, তাই নকল করতে না পারায় মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্রের আসবাবপত্র ও সিলিং ফ্যান ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল কিছু পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। শনিবার ঝাড়গ্রাম শহরের কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশনের ঘটনা।
অভিযোগ, গত কয়েকদিন ধরে পরীক্ষা চলাকালীন কিছু পরীক্ষার্থীকে সতর্ক করা হয়। কড়া পাহারা দেওয়ার ফলে পরীক্ষার ঘরে কয়েকজন পরীক্ষার্থী নকল করার সুযোগ পাচ্ছিল না। এরপর কয়েকদিন আগে ভূগোল পরীক্ষার দিনে স্কুলের বারান্দার সুইচ বোর্ড ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে একাংশ পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। ওই কেন্দ্রে সিট পড়া চারটি স্কুলের মধ্যে ঝাড়গ্রাম শহরের নেতাজি আদর্শ বিদ্যালয় এবং ঝাড়গ্রাম ব্লকের বাঁধগোড়া হাইস্কুলের পরীক্ষার্থীদের সতর্ক করা হয়। তারপরে ফের একই ঘটনা ঘটল।
কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক তথা ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের সেক্রেটারি অনুপকুমার দে বলেন, ‘‘কড়া গার্ড দেওয়ার ফলে কিছু পরীক্ষার্থী নকল করতে না পেরে স্কুল ভবনের নানা জিনিসের ক্ষতি করছিল। পর্ষদের ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ (ঝাড়গ্রাম দক্ষিণ) সুপ্রিয় বর্মনকে বিষয়টি জানাই।’’ শুক্রবার সুপ্রিয়বাবু ওই পরীক্ষার্থীদের সতর্ক করে জানিয়ে দেন, এমন অসংযত কাজকর্ম করলে দু’টি স্কুলের সব পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে পর্ষদের নিয়ম অনুযায়ী কড়া পদক্ষেপ করা হবে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট স্কুলকে ক্ষতিপূরণও দিতে হবে।
কিন্তু এরপরই শনিবার পরীক্ষা শুরুর আগে কিছু পরীক্ষার্থী কুমুদকুমারী স্কুলের পুরনো ভবনের দু’টি খালি ক্লাস ঘরের সিলিং ফ্যানের ব্লেড বাঁকিয়ে দেয় ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। বিষয়টি জানতে পেরে স্কুলের প্রধান শিক্ষক অনুপবাবু ওই দু’টি স্কুলের পরীক্ষার্থীদের ফের সতর্ক করেন এবং দু’টি স্কুলের কর্তৃপক্ষকে টেলিফোন করে বিষয়টি জানান অনুপবাবু। সূত্রের খবর, এরপরই কিছু পরীক্ষার্থী অভিযুক্ত পরীক্ষার্থীর নাম জানিয়ে দেয়। এ দিন ভৌত বিজ্ঞান পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিকেলে পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে দু’দল পরীক্ষার্থীর মধ্যে তুমুল হাতাহাতি শুরু হয়। গণেশ কামার নামে বাঁধগোড়া স্কুলের এক পরীক্ষার্থীর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ওই এলাকায় নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকা পুলিশ কর্মীরা জখম গণেশকে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করান। মারধরে অভিযুক্ত পরীক্ষার্থীদের অবশ্য সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশের দাবি, মারধরের লিখিত অভিযোগ কেউ করেননি। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ (ঝাড়গ্রাম দক্ষিণ) সুপ্রিয় বর্মন বলেন, ‘‘জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা দিচ্ছে যারা, তাদের কাছে এমন আচরণ আশা করা যায় না। অভিযুক্ত পরীক্ষার্থীদের সতর্ক করা হয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘অভিযুক্ত পরীক্ষার্থীরা যে স্কুলের পড়ুয়া, সেই স্কুলকে এমন কাজের জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে পরীক্ষা শুরুর আগে এবং পরীক্ষা শেষের পরে আরও নজরদারি বাড়ানোর জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy