Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পশুকে অজ্ঞানের কৌশল শেখাতে প্রশিক্ষণ বনকর্মীদের

বিশেষ করে অসুস্থ হাতির চিকিৎসার জন্য অজ্ঞান অর্থাৎ ‘ট্র্যাঙ্কুলাইজ’ করার প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। এ নিয়ে বন কর্মীদের প্রশিক্ষিত করতে তাই উদ্যোগী হল বন দফতর। সেই মতো হবে ‘ট্র্যাঙ্কুলাইজেশন ট্রেনিং ও রিফ্রেশার্স কোর্স’। আগামী সপ্তাহে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিড়াকাটা রেঞ্জে হবে এই প্রশিক্ষণ শিবির। ।

অভিযান: হাতিকে অজ্ঞান করানোর তোড়জোড়ে ব্যস্ত বনকর্মীরা। ফাইল চিত্র

অভিযান: হাতিকে অজ্ঞান করানোর তোড়জোড়ে ব্যস্ত বনকর্মীরা। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৭ ০৬:৩০
Share: Save:

জঙ্গলমহলের দুই জেলা পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে হাতির দল। তাদের তাণ্ডব সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে বন দফতর। হুলা জ্বালিয়ে হাতি তাড়ানোর পাশাপাশি তাই হাতিকে বাগে আনতে অজ্ঞান করানোর পদ্ধতিও প্রয়োগ করা হচ্ছে। বিশেষ করে অসুস্থ হাতির চিকিৎসার জন্য অজ্ঞান অর্থাৎ ‘ট্র্যাঙ্কুলাইজ’ করার প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। এ নিয়ে বন কর্মীদের প্রশিক্ষিত করতে তাই উদ্যোগী হল বন দফতর। সেই মতো হবে ‘ট্র্যাঙ্কুলাইজেশন ট্রেনিং ও রিফ্রেশার্স কোর্স’। আগামী সপ্তাহে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিড়াকাটা রেঞ্জে হবে এই প্রশিক্ষণ শিবির। ।

পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলায় বন দফরের মোট চারটি বিভাগ রয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভাগগুলি হল — মেদিনীপুর, রূপনারায়ণ ও খড়্গপুর। আর ঝাড়গ্রামে জেলায় শুধু ঝাড়গ্রাম বিভাগ। প্রতি বিভাগেই ৩-৪ জন কর্মী হাতিকে অজ্ঞান করার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তাঁদের আরও চোস্ত করতেই পিড়াকাটায় শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে।

শুধু হাতি নয়, যে কোনও বন্য পশুকে বাগে আনতে অজ্ঞান করার প্রক্রিয়া প্রয়োগ করা হয়। এ ক্ষেত্রে ওষুধ ভর্তি সিরিঞ্জ বিশেষ বন্দুকে (ডার্ট গান) মধ্যে ভরে দূর থেকে ছোড়া হয়। এক একটি পশুর ক্ষেত্রে ওষুধের মাত্রা এক এক রকম। মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা জানালেন, এটা খুবই দায়িত্বপূর্ণ ও কঠিন কাজ। এ ক্ষেত্রে কর্মীদের অনেকগুলি বিষয় নজরে রাখতে হয়। যেমন হাতি, বানর, হায়না, নেকড়ে, বুনো শুয়োরের ক্ষেত্রে ওষুধের মাত্রা বিভিন্ন রকম হয়। ওষুধের মাত্রা বেশি হলে পশুর মৃত্যু পর্যন্ত হতে। কখনও লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে দ্বিতীয় সিরিঞ্জটি সঙ্গে সঙ্গে তৈরি করে ছুড়তে হয়। কখনও একটি সিরিঞ্জের ওষুধ শরীরে ঢোকার পরে কোনও পশু হিংস্র হয়ে আক্রমণ করতে পারে। সে জন্যও প্রস্তুত থাকতে হয়। আর ওষুধ সিরিঞ্জে ভরার সময় বিশেষ সাবধনতা অবলম্বন করতে হয়। হাতের কোনও ক্ষতস্থানে এই ওষুধ লাগলে মারাত্বক ক্ষতি হতে পারে। রবীন্দ্রনাথবাবুর কথায়, ‘‘এই সব খুঁটিনাটি শেখাতে মাঝেমধ্যেই এই ‘রিফ্রেশার্স কোর্স’ করানো হয়। এতে কর্মীদের দক্ষতা ও মনোবল বাড়ে।’’

এ বারের প্রশিক্ষণ পিড়াকাটা জঙ্গলের ভেতরে হবে। প্রশিক্ষণ দিতে আসবেন বন্যপ্রাণ শাখার টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট সুব্রত পাল চৌধুরী। দু’ই জেলা চারটি বনবিভাগ থেকে মোট ১২ জন বনকর্মী এই প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দেবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Animals Tranquillize Forest Department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE