Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

ছেলের সাপ বাঁচানোর নেশায় ঘুম ছুটেছে বাবা-মা’র

অগত্যা বিষধর সাপকে রাতে ঘরে রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন হলদিয়া টাউনশিপের মিনিমার্কেটের বাসিন্দা সুস্মিতা লাহিড়ী। বৃহস্পতিবার সকালে সাপটিকে বন দফতরের হাতে তুলে দেয় তাঁর ছেলে তথা দশম শ্রেণির পড়ুয়া উৎসব লাহিড়ী। বন্ধুদের মধ্যে সে ‘স্নেক বয়’ এবং হলদিয়ার ‘স্টিভ আরউইন’ নামে পরিচিত।

উদ্ধার: বোতলবন্দি চন্দ্রবোড়ার বাচ্চা। বাঁদিকে উৎসব। নিজস্ব চিত্র

উদ্ধার: বোতলবন্দি চন্দ্রবোড়ার বাচ্চা। বাঁদিকে উৎসব। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৮ ০০:০৫
Share: Save:

রাতে ছেলে ঘরে ফিরতেই আঁতকে উঠেছিলেন মা। গুণধর ছেলের হাতে তখন রয়েছে একটি চন্দ্রবোড়া সাপ। বিষধর সাপটিকে তক্ষুনি বাইরে ছেড়ে দিয়ে আসতে বলেছিলেন। কিন্তু কে শোনে কার কথা!

অগত্যা বিষধর সাপকে রাতে ঘরে রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন হলদিয়া টাউনশিপের মিনিমার্কেটের বাসিন্দা সুস্মিতা লাহিড়ী। বৃহস্পতিবার সকালে সাপটিকে বন দফতরের হাতে তুলে দেয় তাঁর ছেলে তথা দশম শ্রেণির পড়ুয়া উৎসব লাহিড়ী। বন্ধুদের মধ্যে সে ‘স্নেক বয়’ এবং হলদিয়ার ‘স্টিভ আরউইন’ নামে পরিচিত।

স্থানীয় সূত্রের খবর, বন্দর এলাকার একটি আবাসন থেকে মঙ্গলবার ওই চন্দ্রবোড়া সাপটি উদ্ধার করে উৎসব। এলাকার লোকেরা সেটিকে পিটিয়ে মারতে গিয়েছিল। এর পরেই উৎসব সাপকে নিয়ে সটান হাজির হয় বাড়িতে। ছেলের সাপপ্রীতির কথা জানতেন সুস্মিতাদেবী। তবে চন্দ্রবোড়ার মতো বিষধর সাপ ঘরে আনাতে, তাঁরাও ভয় পেয়ে যান। মা এবং বাবা আশিস লাহিড়ী দু’জনেই সাপকে বাইরে ছেড়ে আসতে বলেন। কিন্তু প্রতিবেশীরা সেটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলতে পারে। এই আশঙ্কায় উৎসব তা করেনি।

আরও পড়ুন: মাথায় নেই কেউ, বহু সরকারি স্কুলে মার খাচ্ছে পাঠ

উৎসবের বাবা আশিসবাবু বলেন, ‘‘ক্লাস ফোরে পড়ার সময় থেকেই ও সাপ বাড়িতে নিয়ে আসত। প্রথমে বাধা দিতাম। কিন্তু ও শুনতোই না। তাই আর বাধা দিই না। কিন্তু গতকাল বিষধর সাপ নিয়ে আসায় আঁতকেই উঠেছিলাম।’’ এ দিন বন দফতরকে সাপটি দিয়েছে উৎসব। নন্দকুমার রেঞ্জের বন আধিকারিক প্রকাশ মাইতি এ ব্যাপারে বলেন, ‘‘একটি স্কুলছাত্রের কাছ থেকে ফোন পেয়ে আমরা ওর বাড়ি যাই সেখান থেকে সাপটি উদ্ধার করে নিয়ে আসি।’’

কলকাতার একটি ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে পড়ে উৎসব। তার পরিবার জানিয়েছে, ছুটিতে বাড়ি এলেই হলদিয়ার ঝোপেঝাড়ে, নালা নর্দমায় সাপ খুঁজে বেড়ায় সে। সাপ ধরা তার কাছে নতুন কিছু নয়। উৎসবের দিদি অপালা জানিয়েছেন, ভাই কেউটে সাপও ধরেছে। এমনকী, একবার বাড়িতেই তুলোর বাক্স করে কেউটের ডিম ফুটিয়ে ছানা বার করেছিল সে। পরে সেই ছানা হলদিয়া বন্দর এলাকার জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে এসেছিল।

সাপ ধরতে ভয় লাগে না? হাসিমুখে ‘স্নেক বয়’-এর জবাব, ‘‘চারবার সাপের ছোবল খেয়েছি। তবে সেগুলির বিষ ছিল না, এই যা! সাপ ধরতে লাগে শুধু সাহস আর টেকনিক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Snake সাপ
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE