Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

রক্তাল্পতার বড়ি বিলি প্রাথমিকেও

প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘জুনিয়র উইকলি আয়রন-ফলিক অ্যাসিড  সাপ্লিমেন্টেশন’। নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের প্রাথমিক হাইস্কুলগুলির পাশাপাশি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে এই ট্যাবলেট পাঠানো শুরু হয়েছে।

আয়রন-ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট

আয়রন-ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৪৭
Share: Save:

অনেক শিশু রক্তাল্পতায় ভোগে। স্কুলে এসে নেতিয়ে পড়ে। পড়াশোনায় মন বসে না। এই পরিস্থিতি পাল্টাতে এ বার প্রাথমিকের পড়ুয়াদের আয়রন ও ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে। সপ্তাহে এক দিন করে মিড ডে মিলের পরে ট্যাবলেট খাওয়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আনুষ্ঠানিক ভাবে, ২ জানুয়ারি থেকে এই প্রকল্প চালু হয়েছে।

প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘জুনিয়র উইকলি আয়রন-ফলিক অ্যাসিড সাপ্লিমেন্টেশন’। নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের প্রাথমিক হাইস্কুলগুলির পাশাপাশি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে এই ট্যাবলেট পাঠানো শুরু হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, আগে শুধু মাত্র হাইস্কুলে এই ট্যাবলেট খাওয়ানো হত। এই বার হাইস্কুলের পাশাপাশি প্রাথমিকেও খাওয়ানো শুরু হয়েছে।

মুর্শিদাবাদে দৌলতাবাদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবাশিস দাস বলেন, ‘‘ব্লক স্বাস্থ্য দফতর থেকে আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ানোর বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে গিয়েছে। তবে এখনও স্কুলে এই সব বড়ি এসে পৌঁছয়নি।’’ হরিহরপাড়ার ট্যাংরামারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসীমকুমার অধিকারী বলেন, “খুব তড়াতাড়ি ওই ট্যাবলেট আসবে বলে আমাদের জানানো হয়েছে।”

নদিয়ার নাকাশিপাড়ার ধর্মদা বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রীবাসচন্দ্র দাস আবার বলেন, “দিন দশেক আগেই আমাদের স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য আয়রন ট্যাবলেট এসেছে। আমরা তা খাওয়ানো শুরুও করে দিয়েছি।” ধুবুলিয়ার কামারহাটি চিত্তরঞ্জন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রহ্লাদ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের স্কুলে আয়রন ট্যাবলেট এসেছে।”

মুর্শিদাবাদের হিকমপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় আবার বলেন, “আয়রন ট্যাবলেট পর্যাপ্ত পেলেও ক্রিমিনাশক ওষুধের ঘাটতি রয়েছে। গত এক বছর থেকে ক্রিমিনাশক ওষুধের পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই।” যদিও স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের দাবি, তাঁদের কাছে ক্রিমিনাশক ওষুধ পর্যাপ্ত পরিমাণেই আছে। যে কোনও স্কুল চাইলেই তা পাঠানো হবে। গত বছর ক্রিমিনাশক ওষুধ খাওয়ার পরে অন্য কোনও কারণে এক ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তা নিয়ে জলঘোলা হয়েছিল।

মুর্শিদাবাদ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায়ের বক্তব্য, “রক্তাল্পতার জেরে শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশ কম হয়। তা দূর করতেই প্রাথমিকের পড়ুয়াদেরও আয়রন-ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট দেওয়া হয়েছে।” তাঁর ব্যাখ্যা, শিশুদের কথা মাথায় রেখেই ‘ডোজ’ তৈরি করা হয়েছে। হাইস্কুলের পড়ুয়াদের তুলনায় তা কম। বহরমপুরের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, “আয়রন-ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট প্রাপ্তবয়স্কের ডোজের এক পঞ্চমাংশ শিশুদের দেওয়া হয়।”

এত দিন প্রাথমিক স্তরে এই ওষুধ দেওয়া হয়নি কেন? নদিয়ার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায়ের মতে, সব কিছু তো এক সঙ্গে করে ওঠা সম্ভব হয় না। তাই ধাপে-ধাপে প্রাথমিকের পড়ুয়াদেরও ট্যাবলেট দেওয়া হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Iron-Folic Acid Tablet anemia Primary school
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE