Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ভবিতব্য হাতড়াচ্ছে বিষ্ণুগঞ্জ

ফাঁকা প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে তেহট্ট থানার কাঁটাতার ছোঁয়া গ্রাম বিষ্ণুগঞ্জ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
করিমপুর শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৮ ০১:২৩
Share: Save:

ভোট আসে তাঁরাও আসেন থমকে থাকে ফাঁকা উন্নয়ন। বিষ্ণুগঞ্জ তেমনই এক জনপদ, যেখানে ভোটের মুখে অজস্র প্রতিশ্রুতি নিয়ে পরিযায়ী পাখির মতো আসেন বোট-বাবুরা, তার পর, সব চুপ আগের মতো।

ফাঁকা প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে তেহট্ট থানার কাঁটাতার ছোঁয়া গ্রাম বিষ্ণুগঞ্জ।

বেতাই থেকে কাঁটাতার ঘেঁষা সীমান্ত রাস্তা দিয়ে দু’কিমি পেরিয়ে ৬০-এ গেটে ভোটের পরিচয়পত্র জমা দিয়ে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর অনুমতি মিললে যাওয়া যায় বিষ্ণুগঞ্জে। এই গ্রামের এক দিকে কাঁটাতারের বেড়া আর অন্য দিকে ৫০ মিটার দূরে বাংলাদেশের গ্রাম মেহেরপুরের বাজিতপুর। গ্রামের বাসিন্দা কামাল শেখরা জানাচ্ছেন, বছর ষোলো আগে একশো পরিবারের বাস ছিল গ্রামে। ছিল একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও। কিন্তু গত ২০০৩ সাল সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া ওঠার পরে, গ্রামে প্রায় ত্রিশটি পরিবার বেড়ার এ পারে চলে আসেন। ২০০৪ সালে প্রাথমিক স্কুলটিও স্থানান্তরিত হয় এ পারে বিষ্ণুগঞ্জ নতুন পাড়ায়। বিষ্ণুগঞ্জ নতুন পাড়ায় রাস্তা কিংবা পানীয় জলের সমস্যা মিটলেও সমস্যা রয়ে গিয়েছে ওপারের বিষ্ণুগঞ্জে। বিএসএফের হাজারো প্রশ্নের জবাব দেওয়ার পরে গ্রামে ঢোকার ছাড়পত্র মেলে আত্মীয় স্বজনদের। কাঁটাতারের গেট পেরিয়ে প্রতি দিন বাচাদের স্কুলে ও বড়দের কাজে যেতে হয়। বছর ছয়েক আগে গ্রামে বিদ্যুৎ এলেও পানীয় জলের ভরসা সেই টিউবয়েলের জল।

গ্রামের এক মহিলা বলছেন, ‘‘মাঝে মাঝে নিজের উপরই রাগ হয়, এত বার ঠকে যাই তবু ভোট দিতে যাই কেন বলুন তো!’’ অথচ প্রতি বার নির্বাচনের আগে, প্রচারে আসা আটকায় না ভোট-বাবুদের। গ্রামের একমাত্র রাস্তা ও জলের ব্যবস্থা—সব মেটানোর আবেগ ভরা প্রতিশ্রুতি নিয়ে ওঁরা আসেন বটে, তার পর, সব শূন্য স্তব্ধ। গ্রামের ৭১ টি পরিবারের ২৮০ জন ভোটার। প্রতিবারের মত এ বারেও গ্রামবাসীরা উন্নয়নের আশা নিয়ে কাঁটাতারের গেট উজিয়ে দেড় কিমি দুরের বিষ্ণুগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৭২ নম্বর বুথে ভোট দিতে যাবেন? বিষ্ণুগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা ও তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য সাগর মুন্ডারি জানান, গ্রামে ইটের রাস্তা করা হয়েছে এ বার সবাই যাবেন। তাঁর আশার কথা শুনে গ্রামের স্বপন মুন্ডারি বলছেন, ‘‘ভোট তো আমরা বয়কট করি না, দেব তো ভোট। সে জন্যই আর নতুন করে আমাদের কথা ভাবার সময় হয় না ভোটবাবুদের!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

development West Bengal Panchayat Election 2018
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE