Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

গণনাতেও বিরাম নেই গুলি, আগুন, বোমার

ভোটের দিন শান্তিপুরে ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে ঢুকে ছাপ্পা দেওয়ার অভিযোগে সঞ্জিত প্রামাণিক নামে এক যুবককে ধাওয়া করে পিটিয়ে মারে জনতা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৮ ০০:৩৭
Share: Save:

ভোট গণনার দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সন্ত্রাসে সন্ত্রস্ত রইল নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ। বিশেষ করে নদিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গোলমালের খবর এসেছে। জ্বলেছে আগুন, বোমা পড়েছে, চলেছে গুলিও। রাত পর্যন্ত অবরোধ চলেছে জাতীয় সড়কের একাধিক জায়গায়।

নজিরবিহীন ভাবে ভোট গণনার সময় গণনাকেন্দ্রে ঢুকে ছাপ্পা দেওয়ার অভিযোগে নদিয়ায় শাসক দলের এক পঞ্চায়েত প্রার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নদিয়ার কালীগঞ্জ ও চাপড়ায় গণনাকেন্দ্রে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে বিরোধীদের বের করে দিয়ে ছাপ্পার অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। কালীগঞ্জে এই ঘটনার প্রতিবাদে রাত পর্যন্ত ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে অবরোধ তোলেনি বিজেপি।

ভোটের দিন শান্তিপুরে ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে ঢুকে ছাপ্পা দেওয়ার অভিযোগে সঞ্জিত প্রামাণিক নামে এক যুবককে ধাওয়া করে পিটিয়ে মারে জনতা। তিনি তৃণমূলের শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্যের হয়ে কাজ করতেন এবং তাঁর নির্দেশেই ওখানে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছিলেন সঞ্জিতের বাবা-মা। সেই ঘটনার রেশ মেটার আগে গণনার দিন ফের গোলমাল ছড়ানোর অভিযোগে অভিযুক্ত হলেন অরিন্দম। ফুলিয়া বালিকা বিদ্যালয়ের গণনাকেন্দ্রে ঢুকে তিনি বিরোধী প্রার্থীদের বার করে দেন এবং তাঁর উপস্থিতিতেই ওই গণনা কেন্দ্রের সামনে তৃণমূল বোমা মারে বলে অভিযোগ করেছেন সিপিএমের ফুলিয়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক অনুপ ঘোষ। যদিও অরিন্দম বলেন, ‘‘বিরোধীরা জন সমর্থন হারিয়েছে বলে আমার জনপ্রিয়তায় তারা ঈর্ষান্বিত। তাই বার-বার আমাকে আক্রমণ

করা হচ্ছে।’’

বৃহস্পতিবার নদিয়ায় রাজনৈতিক হানাহানির দু’টি ঘটনা ঘটে কৃষ্ণগঞ্জ ব্লক এবং করিমপুরের কানাইখালি স্কুলে। মাজদিয়ায় সুধীরঞ্জন কলেজে গোলমাল শুরু হয়েছিল কয়েক জন নির্দল প্রার্থী গণনায় এগিয়ে যেতে। অভিযোগ, তখনই এক জন ছেলে ঢুকে ব্যালট পেপারে দেদার ছাপ্পা দিতে থাকে। ঝামেলা গড়ায় ইট বৃষ্টি, বোমা, কাঁদানে গ্যাস পর্যন্ত। করিমপুরে বিজেপির জয়ী প্রার্থীদের শংসাপত্র ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। মারমুখী বিজেপি সমর্থকদের আটকাতে গুলি চালাতে হয় পুলিশকে।

শাসক দলের বিরুদ্ধে ভোট লুটের অভিযোগ উঠেছে মুর্শিদাবাদের নওদায়। সেখানে মুনওদার অন্নদামণি বালিকা বিদ্যালয়ে সবার্ঙ্গপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০ আসনের গণনা চলছিল। ১৪ নম্বর বুথের সিপিএম প্রার্থী অপর্ণা বিশ্বাস ১৯ ভোটে জয়লাভ করেছে বলে ঘোষণার পরেই এক দল লোক গণনাকেন্দ্রে ঢুকে চেয়ার-টেবিল উল্টে দিতে শুরু করে বলে অভিযোগ। ছড়িয়ে পড়ে ব্যালট পেপার। উধাও হয়ে যায় সিপিএমের ছাপ লাগানো এক বান্ডিল ব্যালট। পুলিশ তদন্তে নেমে তিন জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। তবে রাত ৯টা পযর্ন্ত হদিশ মেলেনি নিখোঁজ ব্যালট পেপারের। নদিয়ার হাঁসখালির গণনাকেন্দ্রে ঢুকতে না-পেরে জেলা শাসকের দফতরের সামনে এ দিন বিক্ষোভ দেখিয়েছে সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপির প্রার্থী-এজেন্টরা। অভিযোগ, তাঁদের লাঠি ও র়ড দিয়ে মেরে তাড়িয়েছে তৃণমূলের কর্মীরা। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE