ভোঁ-ভোঁ: বুধবার লালবাগ আদালতে। নিজস্ব চিত্র
মাথায় ছিল না হেলমেট।
জেলা পুলিশের দাবি, শহরের ব্যস্ত মোড়ে ট্রাফিক কর্মী মহিলার স্কুটি থামিয়ে প্রশ্ন করতেই ঝাঁঝিয়ে উঠেছিলেন মহিলা, ‘জানেন আমি আইনজীবী, বার অ্যসোসিয়েশনের সদস্য!’ রাস্তায় ভিড় জমার ফাঁকেই খবরটা দাবানলের মতো ছুটেছিল লালবাগ আদালতে। পুলিশি ‘অভব্যতা’র অভিযোগ তুলে তার পরেই শুরু হয়ে গিয়েছিল লালবাগ আদালত জুড়ে আইনজীবীদের লাগাতার কর্মবিরতি। বুধবার শুরু হওয়া সেই পেন-ডাউনের জের কাটেনি আটচল্লিশ ঘণ্টা পরেও। বিচারকেরা আদলতে এসে ফিরে গিয়েছেন। ফিরে গিয়েছেন, আদালতে বিভিন্ন কাজে দূর দুরান্তের গ্রাম থেকে আসা মানুষজনও।
লালবাগ আদালতের আইনজীবীদের সমর্থনে বৃহস্পতি ও শুক্রবার ‘প্রতিকী’ কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বহরমপুর বার অ্যাসোসিয়েশন। আজ, শুক্রবার এক দিনের কর্মবিরতি পালন করবে বলে জানিয়েছে জঙ্গিপুর বার অ্যাসোসিয়েশনও। লালবাগ আদালতের দু’টি বার অ্যাসোসিয়েশন একযোগে জানিয়ে দিয়েছে, পুলিশের ‘দুর্ব্যবহার’ই তাঁদের কর্মবিরতির পথে ঠেলে দিয়েছে। পুলিশ কর্তারা এসে প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাইলে কর্মবিরতি ওঠার কোনও সম্ভাবনাও নেই। কিন্তু ওই মহিলা আইনজীবী হেলমেট পরেননি কেন?
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলছেন, ‘‘পরেননি বলেই পুলিশ ওঁকে থামিয়ে ছিল। কোনও খারাপ ব্যবহার করেনি। তিনি আইনজীবী পরিচয় দিয়েছেন বটে, তবে, তা না দিলেও তাঁর সঙ্গে কোনও খারাপ ব্যবহার করা হত না।’’ তিনি জানান, ওই দিন, এক সেনা জওয়ান, পুলিশের এক হোমগার্ডের কাছ থেকেও হেলমেট না পরায় জরিমানা আদায় করা হয়েছিল। আইনজীবী বলে তিনি আইন মানবেন না, এ তো হতে পারে না!
পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলার কাছ থেকে জরিমানার রসিদ কাটার কথা বলতেই তিনি ফোনে তাঁর সহকর্মীদের ডেকে নেন। তাঁরাই পুলিশের উপর চাপ দিতে থাকেন। জেলা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, গোটা বিষয়টি মোবাইল ক্যামেরায় ভিডিও করা হয়েছে।
লালবাগ বার অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি রঞ্জিত ঘোষের দাবি, ‘‘পুলিশ ওই মহিলা আইনজীবীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে। তাই লালবাগের এসডিপিও এবং মুর্শিদাবাদ থানার আইসি-কে আদালতে এসে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। তাঁরা ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত ওই কর্মবিরতি চলবে।’’ কিন্তু আইন তো সবার জন্য সমান? রঞ্জিতবাবু বলছেন, ‘‘তা বলে দুর্ব্যবহার করবে পুলিশ!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy