Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কোর্টে স্থগিত, বন্দুক উঁচিয়ে তবু প্রত্যাহার

ফুলিয়া টাউনশিপ গ্রাম পঞ্চায়েতে ৬ নম্বর বুথে সিপিএম প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াবেন বলে মনোনয়ন দিয়েছিলেন ফুলিয়ার বসাকপাড়ার শচীন বসাক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৮ ০৫:২৬
Share: Save:

হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সকালেই। তবু দুপুরে এক সিপিএম প্রার্থীর মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

ফুলিয়া টাউনশিপ গ্রাম পঞ্চায়েতে ৬ নম্বর বুথে সিপিএম প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াবেন বলে মনোনয়ন দিয়েছিলেন ফুলিয়ার বসাকপাড়ার শচীন বসাক। তাঁর অভিযোগ, বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টা নাগাদ একটা সাদা গাড়ি আর কয়েকটা মোটরবাইক তাঁর বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায়। তিনি তখন ঘরের চাল ঠিক করছিলেন। কয়েকটি যুবক এসে তাঁকে নামতে বলে। তিনি নীচে নামতেই তারা কপালের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে জোর করে তাঁকে গাড়িতে তুলে নেয়।

সিপিএমের দীর্ঘদিনের পার্টি সদস্য, বছর আটষট্টির শচীন বলেন, “তখন আমার খালি গা, লুঙ্গি পরা। ওই অবস্থাতেই ওরা আমায় তৃণমূলের দফতরে নিয়ে গিয়ে জোর করে মনোনয়ন প্রত্যাহারের ফর্মে সই করিয়ে নেয়।” তাঁর অভিযোগ, তার পরে সেখান থেকে তৃণমূলের এক কর্মীর জামা আর চটি পড়িয়ে তাঁকে ব্লক অফিসে নিয়ে যাওয়া হয় এবং মনোনয়ন প্রত্যাহারের ফর্ম জমা দিতে বাধ্য করা হয়। সেই থেকে আতঙ্কে তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। দলের লোকেদের আশ্রয়ে আছেন।

এই ঘটনায় স্থানীয় যুব তৃণমূল নেতা শুভঙ্কর মুখোপাধ্যায় ওরফে পিটারের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ সিপিএমের। নিজেকে তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচয় দেন। তাঁর স্ত্রী এ বার জেলা পরিষদের প্রার্থী হয়েছেন। শচীনের বুথে প্রার্থী হয়েছেন তাঁর বৌদি। সিপিএমের ফুলিয়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক অনুপ ঘোষের ফোন থেকে শচীন বলেন, “পিটারের নেতৃত্বেই পুরো ঘটনাটা ঘটেছে।” যদিও পিটারের দাবি, “মিথ্যা অভিযোগ। এমন কোনও ঘটনার কথাই জানা নেই।”

পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন প্রত্যাহার-সহ প্রায় সব প্রক্রিয়া বন্ধ রাখতে হবে বলে সকালেই নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। তা হলে মনোনয়ন প্রত্যাহারের ফর্ম জমা পড় কী ভাবে? রানাঘাটের মহকুমাশাসক প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “কোর্টের নির্দেশ সম্ভবত তখনও ব্লক অফিসে এসে পৌঁছয়নি। তবে ঠিক কী ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

এ দিনই ফুলিয়ার শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএম প্রার্থী মৌসুমী কুণ্ডুর বাড়িতে ঢুকে জোর করে মনোনয়ন প্রত্যাহারের কাগজে সই করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। অভিয়ুক্ত তৃণমূলের ফুলিয়া টাউনশিপ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান উৎপল বসাক ও তাঁর সঙ্গীরা। মৌসুমীর অভিযোগ, “সই না করলে আমার ছেলে ও স্বামীকে খুন করারও হুমকি দিয়েছে ওরা।” উৎপল অবশ্য তাঁর এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Panchayat Elections 2018 Nomination
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE