কর্মী-সমর্থকরা দেখছেন, সব কিছুই ঘটছে। চোখের সামনেই। নেতারা বলছেন, তাঁরা নাকি কিছুই জানেন না! বিস্মিত দলীয় কর্মী এ সমর্থক বলছেন এমনও হতে পারে! দলনেত্রীর সাবধানবাণীর পরেও!
একই দিনে দুটি কর্মী সম্মেলন। তাও একই এলাকায়, সামান্য সময়ের তফাতে। শান্তিপুর ব্লক তৃণমূলের জোড়া সম্মেলন নিয়ে রবিবার বিতর্ক তৈরি হল। গোবিন্দপুরে সভায় সরাসরি যোগ দিলেন বিধায়ক শঙ্কর সিংহ, শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য। যোগ না দিলেও অন্য কর্মী সম্মেলনে নাম জড়াল শান্তিপুরের প্রাক্তন বিধায়ক, পুরপ্রধান অজয় দে-র। দলের নেতাদের প্রশ্ন, মুখ্যমন্ত্রী ডেকে সরাসরি গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থামানোর নির্দেশ দিলেও, তার বিরুদ্ধাচারণ নির্দেশ না মানারই সামিল। পুরো ঘটনায় জেলা নেতৃত্বের প্রতিক্রিয়া শীতল। তাতে বিস্ময় আরও বেড়েছে।
একই দিনে পাশাপাশি দু’টি মাঠে কর্মী সম্মেলনে তিতিবিরক্ত কর্মীরা বলছেন, “ভেবেছিলাম মুখ্যমন্ত্রীর ধমক খেয়ে নেতারা শুধরে যাবেন। তা না অন্দরের কোন্দল আরও প্রকট হয়ে উঠছে।” রবিবার বেলা ১১টা থেকে শান্তিপুর বিধানসভা এলাকার ছটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কর্মীদের নিয়ে গোবিন্দপুর স্কুল সংলগ্ন মাঠে সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন অজয় দে-র ঘনিষ্ঠ, ব্লকের কার্যকরি সভাপতি সুশান্ত ঘোষেরা। সম্মেলন মেটার পরে খাওয়াদাওয়া শেষ হতে হতে বেলা তিনটে বেজে যায়।
ততক্ষণে পাশের স্কুলের মাঠে বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য অনুগামী ব্লক সভাপতি তপন সরকারের নেতৃত্বে কর্মী সমাবেশের তোড়জোর শুরু হয়। পরে সেখানে উপস্থিত হন রানাঘাট (দক্ষিণ) কেন্দ্রের বিধায়ক দলের রানাঘাট মহকুমার পর্যবেক্ষক শঙ্কর সিংহ, অরিন্দম ভট্টাচার্য। জেলা তৃণমূলের সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘আমি খোঁজ পেয়েছে এ রকম ঘটনা ঘটেছে। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তবে সেটা কী, তা বরাবরের মতো জানা যায়নি। সম্প্রতি কলকাতায় গৌরীশঙ্কর দত্তকে আবার জেলা সভাপতি ঘোষণা করার দিন মমতা সকলকে একজোট হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারও আগে অরিন্দমকে সতর্ক করেছিলেন তিনি। তারপরেও ব্লক সম্মেলনকে ঘিরে কী ভাবে এমনটা ঘটল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে কর্মীদের মধ্যেই।
ব্লক কার্যকরি সভাপতি সুশান্ত ঘোষ বলেন, “আমরা ব্লক সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করেই কর্মী সম্মেলন ডেকেছিলাম। চেয়েছিলাম সব নেতা থাকুন। কিন্তু দিন কয়েক আগে আচমকা করে তপন সরকার বলেন যে, অজয় দে ও সাংসদ তাপস মণ্ডলকে ডাকা যাবে না। ওদের কথা শুনিনি বলেই পাল্টা সভা করছে বিধায়ক ও ব্লক সভাপতি। অজয় দেকে ডাকিনি।” আর তপন সরকার বলেন, “দু’টোই দলের কর্মসূচি। প্রথমে কর্মী সম্মেলন করে খাওয়াদাওয়া হয়েছে। পরে সমাবেশ।” এক পক্ষ আর এক পক্ষের কর্মসূচিতে গেলেন না কেন? তপনের সাফাই, “প্রত্যেকেই দলের কাজে ব্যস্ত থাকায় দু’টো কর্মসূচিতে আসতে পারেননি। অজয় দে যেহেতু কল্যাণী মহকুমার পর্যবেক্ষক, তাই তাঁকে ডাকা হয় নি।” “জানিনা কি হয়েছে। আমাকে কেউ কিছু বলেনি এসব নিয়ে।” বলেন অজয়। অরিন্দমের কথায়, “পর্যবেক্ষক শঙ্কর সিংহের কাছ থেকে সময় নিয়ে দল কর্মসূচি নিয়েছে। আমাকে ডেকেছে তাই যাচ্ছি।” এই সম্মেলনে শঙ্কর ফের একসঙ্গে চলার পরামর্শ দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy