Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
তেহট্টে মিলল তিনটি দেহ

গলায় কোপ,কপালে গুলি, মিলল তিনটি দেহ

কড়ুইগাছিতে এক পরিত্যক্ত বেসরকারি হাসপাতাল চত্বরে কলাবাগানের মধ্যে রক্তে ভেসে যাওয়া এক বৃদ্ধের দেহ উদ্ধার হয়েছিল শুক্রবার দুপুরেই। প্রাথমিক পরীক্ষায় পুলিশের অনুমান গলায় পোঁচ দিয়ে-দিয়ে বৃদ্ধকে মারা হয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তেহট্ট শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৮ ০০:২৯
Share: Save:

দু’দিনের মধ্যে তিন-তিনটে মৃতদেহ! তিন জনকেই নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে। তিন জনের মধ্যে অন্তত দু’ জন পূর্বপরিচিত এবং তাঁরা ব্যবসার কাজে বাড়ি থেকে এক সঙ্গে বেরিয়েছিলেন। তেহট্ট অঞ্চলে মাত্র চব্বিশ ঘণ্টার ভিতর এতগুলি খুনের ঘটনা জেলার পুলিশ কর্তাদের যথেষ্ট অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে।

কড়ুইগাছিতে এক পরিত্যক্ত বেসরকারি হাসপাতাল চত্বরে কলাবাগানের মধ্যে রক্তে ভেসে যাওয়া এক বৃদ্ধের দেহ উদ্ধার হয়েছিল শুক্রবার দুপুরেই। প্রাথমিক পরীক্ষায় পুলিশের অনুমান গলায় পোঁচ দিয়ে-দিয়ে বৃদ্ধকে মারা হয়েছে। তাঁর নাম কলিমুদ্দিন শেখ (৬৫)। বাড়ি চাপড়া থানার বেতবেড়িয়া গ্রামে। গরুর ব্যবসা করেন। ঠিক তার পর দিন শনিবার কড়ুইগাছি থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে তেহট্ট থানারই ছাতিনা গ্রামের একটি আমবাগান থেকে আরও দু’জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। দু’ জনকেই কাছ থেকে কপালে একটি করে গুলি মেরে খুন করা হয়েছে। ছাতিনা গ্রামের আমবাগানের পাশের একটি বাঁশবাগানে বাঁশ কাটতে গিয়ে এলাকার কিছু মানুষ পাশাপাশি মৃতদেহ দু’টি পড়ে থাকতে দেখেন। এর মধ্যে এক জনের পরিচয় জানা গিয়েছে। তাঁর নাম আজিম শেখ (৪০)। বাড়ি সেই বেতবেড়িয়া গ্রামে। পরিবারের লোকেরাই জানিয়েছেন, মৃত কলিমুদ্দিন ও আজিম পরস্পরকে অনেকদিন আগে থেকেই চিনতেন, পারিবারিক সম্পর্কও ঘনিষ্ঠ ছিল। তাঁরা একসঙ্গে শুক্রবার তেহট্টের হাট থেকে গরু কিনতে বেরিয়েছিলেন।

কলিমুদ্দিন শেখের ছেলে মোবারক শেখের বক্তব্য, “শুক্রবার বেলা দশটা নাগাদ বাবা ও আজিমকাকা একসঙ্গে বেরোলেন। বেলা তিনটে থেকে বাবার মোবাইলে ফোন বন্ধ ছিল। কাকার ফোনও মিলছিল না। তখন থেকেই আমরা প্রচণ্ড চিন্তার মধ্যে ছিলাম।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘শনিবার সকালে এক আত্মীয় মারফত খবর পাই, বাবাকে কেউ বা কারা খুন করেছে! তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে এসে বাবার দেহ শনাক্ত করি। এর মধ্যেই আরও দু’টি দেহ পুলিশ নিয়ে আসে। তার মধ্যে আজিম কাকার দেহ চিনতে পারি। কিন্তু সঙ্গের অন্য মৃত লোকটি আমাদের পরিচিত নন। ওঁকে গ্রামেও কখনও দেখিনি।’’

পুলিশ এক রকম নিশ্চিত যে, দুই খুনের মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে। পুলিশকর্তারা প্রাথমিক তদন্তের পর মনে করছেন, বাংলাদেশে গরু পাচারের সঙ্গে নিহতরা জড়িত ছিলেন। অনেকের সঙ্গেই তাঁদের টাকার লেনদেন ছিল। বখরা নিয়ে গোলমালের জেরে এই খুন হওয়া অসম্ভব নয়। একই আশঙ্কার কথা স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই জানিয়েছেন। তিন-তিনটি খুনের ঘটনা শুনে তেহট্টে ছুটে আসেন জেলার পুলিশ সুপার-সহ পুলিশের পদস্থ আধিকারিকরা। পুলিশ সব দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু করেছে। নদিয়ার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া জানান, ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে এই খুনের ঘটনা ঘটতে পারে। দ্রুত তদন্ত করে খুনিদের গ্রেফতার করা হবে।

তেহট্টের বিধায়ক ও জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তের কথায়, ‘‘একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আমরা চিন্তিত। পুলিশকে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Police Tehatta তেহট্ট
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE