বিপর্যয় মোকাবিলায় এ বার হাইস্কুলগুলিতে তৈরি হচ্ছে বিপর্যয় মোকাবিলা কমিটি। দিন কয়েক আগে রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের আধিকারিকেরা নদিয়ার মহকুমা আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকেই স্থির হয়, বিপর্যয় মোকাবিলা আইন, ২০০৫ অনুযায়ী, স্কুলগুলিতে বিপর্যয় মোকাবিলার পাঠ দিতে হবে। তার জন্য প্রতি স্কুলে বিশেষ কর্মসূচিও নেওয়া হবে।
নির্দেশ পেয়ে নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন স্কুলে কাজও শুরু হয়েছে। দিন দুয়েক আগে দফতরের কল্যাণী মহকুমার আধিকারিক প্রতীক কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় শহরের জহর নবোদয় বিদ্যালয়ে যান। আচমকা আগুন লাগলে বা ভূমিকম্প হলে কী ভাবে পড়ুয়ারা শ্রেণিকক্ষ থেকে নিরাপদে বেরিয়ে আসবেন, তার পাঠ দেন প্রতীকবাবু। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নদিয়ার সব মহকুমাতেই এই পাঠ দেওয়া শুরু হয়েছে।
এর পরেই শুরু হবে বিপর্যয় মোকাবিলা বিষয়ক কমিটি তৈরি। কমিটির চেয়ারম্যান হবেন স্কুলের অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষক। ভাইস চেয়ারম্যান সহকারি প্রধান শিক্ষক বা উপ-অধ্যক্ষ। এ ছাড়াও সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় পরিদর্শকও থাকবেন সেই কমিটিতে। চার জন ছাত্র ও কয়েক জন অভিভাবককেও কমিটিতে রাখা হবে।
কমিটির কাজ কী? প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কমিটি স্কুলের এক বিস্তারিত মানচিত্র তৈরি করবে। সেই ম্যাপে চিহ্নিত করা থাকবে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র কোথায় রয়েছে, আগুন লাগলে কোন দরজা দিয়ে বের হতে হবে, স্কুলের কোন তলায় কতগুলি সিঁড়ি রয়েছে। কোনও ক্লাসরুমের দরজা-জানালা কোথায় রয়েছে তাও চিহ্নিত করা হবে ওই ম্যাপে।
ওই ম্যাপের প্রতিলিপি পাঠানো হবে স্থানীয় ব্লক অফিস, আশপাশের দমকল কেন্দ্র, থানা ও হাসপাতালে। কোনও স্কুলে অগ্নিকাণ্ড বা অন্য কোনও বিপর্যয় ঘটলে দমকল ও পুলিশ ম্যাপ দেখে উদ্ধার কাজ চালাতে পারবে। ম্যাপে চোখ বুলিয়েই অন্দরের সব কিছু জানতে পারবেন মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা। এক আধিকারিক জানান, একবার ম্যাপ বানালেই কাজ শেষ হবে না। ওই কমিটি মাঝেমধ্যেই বৈঠকে বসবে। সেখানে স্কুলের অন্দরে পরিবর্তন হয়েছে কিনা, তা নিয়ে আলোচনা হবে। গুরুত্বপূর্ণ কোনও কিছুর বদল হলে, ম্যাপেরও বদল হবে।
ধুবুলিয়া দেশবন্ধু হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হায়দার আলি বিশ্বাস বলেন, ‘‘কমিটি গড়ার কথা জেনেছি। দ্রুতই তা তৈরি করা হবে। এমনটা হলে কয়েকশো স্কুলের নিরাপত্তা অনেকটা সুরক্ষিত থাকবে।’’ বিষয়টি নিয়ে উচ্ছ্বসিত পুলিশ আধিকারিকেরাও। নদিয়ার চাকদহ থানার আইসি পিন্টু সরকার বলেন, স্কুলের ম্যাপ থাকলে, কোনও ঘটনা ঘটলে, তা মোকাবিলা করা আমাদের পক্ষে সহজ হবে। অন্যদিকে মুর্শিদাবাদের স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) পূরবী দে বিশ্বাস বলেন, অনেক স্কুলই কমিটি তৈরি করেছে। কিছু স্কুল বাকি রয়েছে। শিগগির সেগুলিতেও কমি়টি তৈরি করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy