অকেজো পাম্প। নিজস্ব চিত্র
জল নিয়ে অথৈ জলে পড়েছে ধুলিয়ান পুরসভা।
শীতে গঙ্গার জলস্তর নেমে গিয়েছে অনেক নীচে। কোথাও কোথাও বেরিয়ে পড়েছে চর। পাম্প করে জল তোলার কোনও উপায় নেই। ফলে গত ছ’দিন থেকে তীব্র জল সঙ্কটে দেখা গিয়েছে ধুলিয়ান শহরে। এখন নদীতে জল কবে আসে সেই অপেক্ষা করা ছাড়া কার্যত কিছু করার নেই কর্তাদের।
মাস আটেক আগে চালু হয়েছে গঙ্গার জল পরিশোধন কেন্দ্র। খরচ হয়েছে প্রায় ৪৪ কোটি টাকা। কর্তাদের দাবি ছিল তাতে শহরের জলের চাহিদা পূরণ করা যাবে। কিন্তু পাম্প বসানো নিয়ে সমস্যা থাকায় জল সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে।
পাশের পুরসভা জঙ্গিপুরে জল তোলার জন্য যেমন বোটের উপর পাম্প বসানো হয়েছে, ধুলিয়ানের ক্ষেত্রে তা হয়নি। ধুলিয়ানে পাম্পটি স্থায়ীভাবে নির্মীত। ফলে নদীর জল কমলে বা বাড়লে পাম্প-সহ বোটটি সহজেই সরানোর যে সুবিধা জঙ্গিপুরে আছে, ধুলিয়ানের ক্ষেত্রে তা নেই। এখন ধুলিয়ানে পাম্প যেখানে রয়েছে সেখানে জল নেই। ফলে জল সরবারহ মুখ থুবড়ে পড়েছে।
পুরপ্রধান সুবলকুমার সাহা জানান, পুর বিভাগের কারিগরি দফতরের বিশেষজ্ঞরা তাঁদের প্ল্যান মতোই এই জলপ্রকল্পটি গড়েছেন। গঙ্গার গতিপ্রকৃতি দেখেই তাদের বোঝা উচিত ছিল আরও গভীরে পাম্প না বসালে ভবিষ্যতে জল তোলায় সঙ্কট দেখা দিতে পারে। শীতেই যদি নদীতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়, তবে তীব্র খরায় জল প্রকল্পের কী দশা হবে তা নিয়ে চিন্তা রয়েছে।
পুর কারিগরি দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র সজল সরকার জানান, সপ্তাহ দুয়েকের আগে জল সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। ড্রেজিং করে খাদ কেটে টেনে আনতে হবে নদীর জলকে। খরচ হবে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা। তিনি বলেন, “মাস চারেক পরে খরায় নদীর অবস্থা দেখে ফের ব্যবস্থা নিতে হবে।”
কিন্তু কেন জঙ্গিপুরের মতো ভাসমান বোটের উপর পাম্পটি বসানো হল না? উত্তরে পুর কারিগরি দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র জানান, ভাগীরথীতে জলপ্রবাহ ফিডার ক্যানেলের মাধ্যমে সারা বছর ধরেই নিয়ন্ত্রিত হয়। কিন্তু ধুলিয়ানে গঙ্গায় জলপ্রবাহ নিয়ন্ত্রিত নয়। ভরা বর্ষায় জলের চাপ সেখানে এত বেশি থাকে যে লোহার ভাসমান বোট ব্যবহার সম্ভব নয়। তাই ধুলিয়ানে স্থায়ী কংক্রিটের পাম্পিং ব্যবস্থা করতে হয়েছে। ধুলিয়ানের বাসিন্দা সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক তোয়াব আলি বলছেন, “এ বছর না হয় ড্রেজিং করে জল আনা গেল। কিন্তু অর্থাৎ পরিকল্পনাহীন প্রকল্পের কারণে বারবার এই সঙ্কট সৃষ্টি হবে।”
এ দিকে জল প্রকল্প চালুর পর কয়েক’শো পরিবার বাড়িতে জলের সংযোগ নিয়েছিলেন। মাথায় হাত তাঁদের। শহরের প্রায় বেশির ভাগ নলকূপও এখন অচল। তার পরিবর্তে ওয়ার্ড পিছু বসানো হয়েছিল ১৬টি করে জলের ট্যাপ। ফলে এখন জলের হাহাকার শহর জুড়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy