প্রতীকী ছবি।
বিহারের বুদ্ধ গয়ায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িয়ে গিয়েছিল তার নাম, তবে, পাঁচ বছর কেটে গেলেও দেখা মেলেনি।
বুধবার দুপুরে, পয়গম্বর শেখ নামে উধাও হয়ে যাওয়া সেই অভিযুক্তকে মুর্শিদাবাদের সমশেরগঞ্জের কাঁকুড়িয়া গ্রাম থেকে গ্রেফতার করেছে স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)।
বছর আঠাশের পয়গম্বর রঘুনন্দনপুরে একটি বেসরকারি প্রাথমিক স্কুলে বছর দুয়েক ধরে শিক্ষকতা করে। বুধবার সকালে স্কুল শেষে দুই ছেলেকে মোটরবাইকের পিছনে বসিয়ে বেরনোর মুখেই হাজির হয়েছিল খান সাতেক সাদা টাটা সুমো। ঝড়ের মতো তা থেকে নেমে এক ঝাঁক পুলিশ কর্মী ঘিরে ধরেছিলেন ওই শিক্ষককে। তার পর ধীর গলায় তাকে খান কয়েক প্রশ্ন করেই খোলা পিস্তল উঁচিয়ে আশপাশে জড়ো হওয়া গ্রামবাসীদের জানিয়ে দেন, ‘ইয়ে আতঙ্কবাদী হ্যায়, হট যাইয়ে।’ গাড়িতে তুলে মিনিট কয়েকের মধ্যেই ফিরে গিয়েছিল এসটিএফের কর্মীরা।
বিহারের বিস্ফোরণ কান্ডে সমশেরগঞ্জের শিক্ষক জড়িত, অথচ সে ব্যাপারে স্থানীয় পুলিশ রইল অন্ধকারে? জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্তারা জানাচ্ছেন, এই ঘটনা জেলা পুলিশের যে মুখ পুড়িয়েছে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।
তবে, বুধবার রাতেই ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে সমশেরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় এসটিএফের সঙ্গে তল্লাশি শুরু করে জেলা পুলিশ। ধুলিয়ান শহরের স্টেশন লাগোয়া গাজিনগর পল্লিতে হানা দিয়ে বেশ কিছু বোমাওএ উদ্ধার হয়ে বলে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের নজরে পড়ে পাশের আমবাগানে বেশ কয়েকটি ব্যাগ পড়ে রয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ তা খুঁটিয়ে পরীক্ষা শুরু করে। খবর যায় মালদহের বোম্ব স্কোয়াডের কাছে। উদ্ধার হয় কয়েকশো বোমা। পাওয়া গিয়েছে, ব্যাটারি, বিদ্যুতের তারও। এর পরেই সতর্ক করা হয়েছে জেলা গোয়েন্দা দফতরকে। জেলা জুড়ে জারি হয়েছে হাই অ্যালার্টও।
তবে বুধবার, পয়গম্বর ধরা পড়ার আগে এ তোড়জোড় ছিল না। পয়গম্বর যে স্কুলে পড়াত সেই বেসরকারি স্কুলে শিক্ষক সংখ্য়া ১৬। ছাত্রছাত্রী প্রায় তিনশো। স্কুলের প্রধান সিক্ষক মতিউর রহমান বলেন, ‘‘বছর দুয়েক আগে, পরীক্ষা দিয়েই স্কুলে পড়ানোর সুযোগ পেয়েছিল পয়গম্বর। সাতে পাঁচে থাকত না। নির্বিবাদী বাল মানুষই তো মনে হত।’’ তার দুই নাবালক ছেলেও ওই স্কুলেই পড়ে। বাবার সহ্গেই তারা নিত্য আসে স্কুলে। ওই দিনও স্কুল শেষে বাবার সঙ্গেই ফিরে যাওয়ার তোড়জোড় করছিল তারা। এসটিএফের কর্মীরা আসেন তখনই। স্কুলের এক শিক্ষিকা বেরিয়ে এসে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘‘কী ব্যাপার, ওঁকে ধরেছেন কেন?’’ তখনই উত্তর আসে, ‘ইয়ে আতঙ্কবাদী হ্যায়!’
পরে পয়গম্বরকে নিয়ে তার বাড়িতেও গিয়েছিল পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয় তার দু’টি মোবাইল, পাশপোর্ট, ব্যাঙ্কের কাগজপত্র। পয়গম্বরের বাবা হজরত আলি মারা গিয়েছেন। বিধবা মা আর স্ত্রী-পুত্র নিয়েই ছিল পয়গম্বরের সংসার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy