প্রতীকী ছবি।
তৃণমূল নেতা খুনের পরে সৌমিক হোসেন দাবি করেছিলেন, কংগ্রেস এই ঘটনা ঘটিয়েছে। অথচ রাতেই বড়ঞা ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। প্রকাশ্যে এল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই।
সোমবার সকালে বড়ঞা ব্লক অফিসের সামনে বোমা মেরে খুন করা হয়েছিল তৃণমূল নেতা রবিউল হককে। রাতে তাঁর স্ত্রী রঙ্গেলা বিবি ১১ জনের নামে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। সকলেই প্রাক্তন ব্লক তৃণমূল সভাপতি জালালুদ্দিন ওরফে আফাজের আত্মীয় বা অনুগামী বলে পরিচিত। মাদক মামলায় জালালুদ্দিন নিজে এখন জেলে।
জালালুদ্দিনের আত্মীয়, ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি জাব্বার দেওয়ানকে পুলিশ ওই রাতেই বাড়ি থেকেই ধরে নিয়ে আসে। মঙ্গলবার সকালে কান্দি আদালতে অতিরিক্ত বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট সুস্মিতা মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে তোলা হলে তাঁকে চার দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও জাব্বারের দাবি, “একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে আমি ব্যস্ত ছিলাম। কারা রবিউলকে খুন করেছে, জানি না। দলের কিছু নেতা আমায় ফাঁসাচ্ছে।” বাকি অভিযুক্তেরা এখনও বেপাত্তা।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সাবলপুর অঞ্চলে তৃণমূলের প্রতীকে এক মাত্র জয়ী হয়েছিলেন জালালুদ্দিনের মা কোহিনুর বিবি। বামেদের হাতে থাকা ওই পঞ্চায়েতের বেশির ভাগ সদস্য পরে তৃণমূলে চলে যাওয়ায় বোর্ডও তাদের হাতেই চলে যায়। পঞ্চায়েত প্রধান হন কোহিনুর বিবি। কিন্তু সব সমীকরণ পাল্টে যেতে শুরু করে গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, বিধানসভা ভোটে জালালুদ্দিনের পছন্দের প্রার্থী-তালিকাকে আমল দেয়নি দল। তাতে গোসা করে প্রচারের সময়ে তিনি কার্যত বসে যান। ঠিক এই সময়েই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে এসেছিলেন রবিউল। ভোটের পরে জালালুদ্দিনের সঙ্গে জেলা নেতৃত্বের দূরত্ব বেড়েছে বই কমেনি। পরে গাড়িতে অস্ত্র রাখা ও মাদক কারবারের অভিযোগে পুলিশ তাঁকে ধরে। বছরখানেক আগে কোহিনুর বিবিকেও প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেয় তৃণমূল। ইতিমধ্যে প্রতিপত্তি বেড়েছে রবিউলের। প্রার্থী বাছাই থেকে বহু ক্ষেত্রেই নেতারা তাঁর কথা শুনছিলেন। কোহিনুর বিবি এ বারে আর টিকিটই পাননি।
বড়ঞা ব্লক তৃণমূলের একাংশের মতে, ক্ষমতার এই হাতবদলই জালালুদ্দিন-বাহিনীর রোষের কারণ হয়ে থাকতে পারে। খুনের পরেই তাঁর ঘনিষ্ঠ সামজেদ শেখের বাড়িতে বোমা মেরে তছনছ করে দেওয়া হয়। যদিও তার আগেই সামজেদ সপরিবার বেপাত্তা। এ দিন সকালেও কয়েকটি বোমা পড়ে ডাকবাংলো বাজারে।
এ দিন রবিউলের বাড়িতে গিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি সুব্রত সাহা ‘প্রকৃত অপরাধীদের’ গ্রেফতার করার দাবি জানান। ব্লক কংগ্রেস সভাপতি সফিউর ইসলামের কটাক্ষ, ‘‘ঘরের কাজিয়া ঢাকতে তৃণমূল আমাদের নামে গল্প সাজানোর চেষ্টা করছিল। কারা খুন করেছে, তা তো পুলিশের তদন্তেই পরিষ্কার!’’ সুব্রতর বক্তব্য, ‘‘তদন্ত তো সবে প্রাথমিক পর্যায়ে। খুনে জড়িত কেউ তৃণমূলে থাকতে পারেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy