ছবি: সংগৃহীত।
মুর্শিদাবাদের প্রাচীন স্থাপত্য ও মালদহের আম নিয়ে একটি ট্যুরিজম সার্কিট গড়ার পরিকল্পনা করল দুই জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার এ নিয়ে মালদহ জেলা প্রশাসনিক ভবনে বৈঠকও হয়েছে। এ নিয়ে মালদহে থাকা সেন্ট্রাল ইন্সটিটিউট ফর সাবট্রপিক্যাল হর্টিকালচারের (সিআইএসএইচ) শাখার একটি প্রস্তাবকেই ঢাল করা হচ্ছে। পর্যটকদের জন্য দুই জেলাতেই পর্যটক আবাস, আম মিউজিয়াম, আমজাত পণ্যের বিক্রির ব্যবস্থা, হারিয়ে যেতে বসা বিভিন্ন আমের বাগান তৈরি, আমের মরসুমে সরাসরি গাছ থেকে পেড়ে আম বিক্রির ব্যবস্থা—সবই পরিকল্পনায় থাকছে। এই সার্কিট ট্যুরিজমের অঙ্গ হিসেবে ইতিমধ্যে মালদহ জেলার সাগরদিঘিতে কিছু কাজও শুরু করা হয়েছে।
মালদহ জেলা প্রশাসনিক সূত্রে খবর, জেলায় থাকা সিআইএসএইচ শাখার বিজ্ঞানী দীপক নায়েক মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলার আমকে ঘিরে পর্যটনের ভাবনার একটি প্রস্তাব দেয় মালদহ জেলা প্রশাসনের কাছে। সেই প্রস্তাব প্রশাসনের তরফে রাজ্য পর্যটন দফতরেও পাঠানো হয়। জানা গিয়েছে, পর্যটন দফতরের তরফে সবুজ সঙ্কেত মেলায় শুধু আমই নয়, এর সঙ্গে দুই জেলায় থাকা সুলতানি ও নবাবী আমলের প্রাচীন স্থাপত্য ঘিরে একটি ট্যুরিজম সার্কিট গড়ারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ দিন মালদহ জেলা প্রশাসনিক ভবনে একটি বৈঠক হয়েছে। সেখানে মালদহের জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য, মুর্শিদাবাদ জেলার পর্যটনের দায়িত্বে থাকা এস্টেট ম্যানেজার সৌর মণ্ডল, সিআইএসএইচের মালদহ শাখার বিজ্ঞানী দীপক নায়েক সহ মালদহ জেলা প্রশাসনের একাধিক আধিকারিক উপস্থিত ছিলেন। দুই জেলার এই সার্কিট ট্যুরিজমে আসা পর্যটকদের জন্য মালদহের গৌড়ে থাকা বারদুয়ারি মসজিদ, লুকোচুরি দরওয়াজা, লোটন মসজিদ, রামকেলি মন্দির, জহরা কালী মন্দির, আদিনা মসজিদের মতো অসংখ্য প্রাচীন স্থাপত্য দেখানোর ব্যবস্থা যেমন থাকবে, তেমনি মালদহের সাগরদিঘি ও আদিনায় তাঁদের জন্য গড়া হবে ইকোপার্ক। দু’টি ইকো পার্কেই পর্যটকদের জন্য আবাস তৈরির পাশাপাশি গড়ে তোলা হবে আম মিউজিয়াম। সেই মিউজিয়ামে দুই জেলার প্রায় ৩০০ প্রজাতির আমের অবয়ব ফাইভারগ্লাস দিয়ে তৈরি করা থাকবে। থাকবে সেই সমস্ত আমের সংক্ষিপ্ত ইতিহাসও। দুই ইকোপার্কে জেলা থেকে হারিয়ে যেতে বসা সুস্বাদু আমের বাগানও করা হবে। একই আমবাগান থাকবে সিআইএসএইচের দফতর। মালদহ পর্যটক আবাসে জেলার আমজাত পণ্য ও হস্তশিল্প সামগ্রী বিক্রিরও ব্যবস্থা হবে।
অপরদিকে মুর্শিদাবাদ জেলাতেও পর্যটকরা নবাবী আমলের স্থাপত্য হাজারদুয়ারি, কাটরা মসজিদ, নিজামত ইমামবারা থেকে শুরু করে ফরাক্কা ব্যারাজ, মতিঝিল ঘুরে দেখবে। সেখানেও মতিঝিল ও আহিরণে আম মিউজিয়াম হবে। করা হবে জেলার বিভিন্ন আমের বাগান। আমজাত পণ্য বিক্রিরও বন্দোবস্ত থাকবে। হবে নয়া পর্যটক আবাসও। ওয়াসিফ মঞ্জিলে একটি হেরিটেজ হোটেল তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। মালদহের জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলার আম এবং প্রাচীন স্থাপত্যগুলিকে ঘিরে একটি সার্কিট ট্যুরিজম গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। এ দিন প্রশাসনিক বৈঠকে সে ব্যাপারে অনেকটা আলোচনা হয়েছে। দ্রুত কাজও শুরু করা হবে। জেলার সাগরদিঘিতে অবশ্য ইতিমধ্যে ইকোপার্ক গড়ার কাজ শুরু হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy