আবর্জনার পাশ দিয়ে এ ভাবেই যাতায়াত করতে হয় পর্যটকদের। বৃহস্পতিবার লালবাগে। নিজস্ব চিত্র
দুয়ারে পর্যটন মরসুম। রাজ্যের অন্যতম পর্যটন শহর মুর্শিদাবাদ (লালবাগ) তবু আবর্জনায় ভরা। মুর্শিদাবাদ পুরসভার নাগরিকদের অভিযোগ, নিয়মিত সাফাই করা হয় না বলেই এমন দশা। অনেক এলাকায় পথবাতিও নেই। বেশ কিছু এলাকার নিকাশি ব্যবস্থাও বেহাল।
অথচ এই শহরেই হাজারদুয়ারি প্যালেস ও মিউজিয়ামে গত বছর জানুয়ারি মাস থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ১৫ বছরের বেশি বয়সের পর্যটক এসেছিলেন ১৬ লক্ষ। ১৫ বছরের নীচের বয়সিদের হিসাবের মধ্যে ধরলে সেই সংখ্যাটা ২০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। গত বছর মতিঝিলেও এসেছিলেন ১০ লক্ষেরও বেশি পর্যটক। পুরসভার পক্ষ থেকে সেই পর্যটকদের বাস পিছু ৪০ টাকা ও জন প্রতি ৩ টাকা করে পরিষেবা কর আদায় করা হয়। পরিষেবা কর আদায় করলেও হাজারদুয়ারির দক্ষিণ দিকের পাচিল বরাবর আবর্জনার পাহাড় জমে আছে। মুর্শিদাবাদের পুরপ্রধান তৃণমূলের বিপ্লব চক্রবর্তী অবশ্য আবর্জনা জমে থাকার কথা স্বীকারই করতে চান না।
তিনি বলেন, ‘‘পুরসভার ১৬টি ওয়ার্ডেই নিয়মিত সাফাই করা হয়।’’ জমে থাকা আবর্জনার ছবি তোলা হয়েছে বলে জানালে পুরপ্রধান বলেন, ‘‘তবে সেই ছবি তোলা হয়েছে সকালে।’’ ক্যামেরার ডিজিট্যাল ঘড়ি কিন্তু বলছে, ছবি তোলা হয়েছে দুপুর দেড়টায়। চক মসজিদ প্রাঙ্গন, ইচ্ছাগঞ্জ, নশিপুর, কুর্মিটোলা, রণসাগর, মোতিঝিল রোড, সাহামতগঞ্জ, বনমালিপুরের মতো পুরভবন থেকে একটু দূরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেরই অভিযোগ নিয়মিত সাফাই হয় না। নিকাশিনালাও নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না।
‘মুর্শিদাবাদ পর্যটক সহায়তা কেন্দ্রের সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শহরের নাগরিকদের স্বার্থে ও পর্যটকদের স্বার্থে ঐতিহাসিক শহরটা ঠিক মতো পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য প্রতি বছর নিয়ম করে পুরপ্রধানের কাছে অনুরোধ করা হয়। তবুও নবাবি শহরের অনেক এলাকা নিয়মিত সাফাই করা হয় না।’’
নবাবি আমলের ঐতিহাসিক শহর মুর্শিদাবাদকে পর্যটকদের কাছে আকর্ষনীয় করে তুলতে নবাব সিরাজের মাসি ঘসেটি বেগমের বাসস্থান মতিঝিলকে ‘প্রকৃতিতীর্থ’ হিসাবে বছর দুয়েক আগে গড়ে তোলা হয়েছে। ফলে পর্যটকের সংখ্যাও বাড়ছে। পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের মতিঝিলপাড়ায় বাস করেন ‘মুর্শিদাবাদ নগর উন্নয়ন কমিটি’র সম্পাদক এ আর খান। তিনি বলেন, ‘‘নিয়মিত সাফাই না হওয়ায় নোংরা আবর্জনা মাড়িয়ে চলতে হয়। মতিঝিলপাড়া থেকে দিঘিপাড়া হয়ে একটি সড়ক পথ চলে গিয়েছে সুভাযচন্দ্র শতবার্ষিকী কলেজে। ওই সড়ক পথে কোনও পথবাতি নেই। সন্ধ্যার পরে ছিনতাই হয় ওই এলাকায়। পথবাতি লাগানোর জন্য পুরপ্রধানের কাছে আবেদন জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।’’ অথচ ‘আরও উন্নতি’ করার ঘোষণা দিয়ে কংগ্রেস পরিচালিত মুর্শিদাবাদ পুরসভা চলে যায় তৃণমূলের ছাতার তলায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy