Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

মিল খোলার আশায় বেলডাঙা

সম্প্রতি মুর্শিদাবাদে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে প্রশাসনিক বৈঠকে বেলডাঙার পুরপ্রধান ভরত ঝাওর বলেন, ‘‘দিদি, একটা জিনিস আপনার নজরে আনছি।

অতীত: চিমনি থেকে ধোঁয়া বের হয়নি বহুকাল। কর্তাদের হাতযশে সুদিন ফিরবে কি? নিজস্ব চিত্র

অতীত: চিমনি থেকে ধোঁয়া বের হয়নি বহুকাল। কর্তাদের হাতযশে সুদিন ফিরবে কি? নিজস্ব চিত্র

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:৫০
Share: Save:

এখনও দাঁড়িয়ে আছে বিরাট চিমনিটা।

বহু দূর থেকেও তার মাথা দেখা যায়। বেলডাঙা ও লাগোয়া এলাকা থেকে ভিনরাজ্যে কাজে যাওয়া লোকজন ঘুমন্ত সেই চিমনি দেখেন আর দীর্ঘশ্বাস ফেলেন, ‘‘কলটা চালু থাকলে কি আর এ ভাবে কাজের সন্ধানে বিদেশ যেতে হতো!’’

সম্প্রতি মুর্শিদাবাদে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে প্রশাসনিক বৈঠকে বেলডাঙার পুরপ্রধান ভরত ঝাওর বলেন, ‘‘দিদি, একটা জিনিস আপনার নজরে আনছি। বেলডাঙায় সুগার মিলের প্রচুর সম্পত্তি। শুধু লিজ এগ্রিমেন্টটা এক বার দেখা হোক। আগের এগ্রিমেন্ট বাতিল করে ওই পরিকাঠামো কাজে লাগিয়ে ছোট ও মাঝারি শিল্প হতে পারে।’’

এটা শোনার পরে মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি মুখ্যসচিবকে দেখতে বলেন। তার পরেই জেলাশাসকের নির্দেশ পেয়ে বৃহস্পতিবার বেলডাঙার মিল পরিদর্শনে আসেন বহরমপুরের মহকুমাশাসক-সহ শিল্প ও ভূমি সংস্কার দফতরের লোকজন। মহকুমাশাসক দিব্যনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শিল্পের জন্য আদর্শ জায়গা। সবটাই দেখে গেলাম। ফিরে জেলাশাসককে রিপোর্ট পাঠাব।’’

দীর্ঘ দিন বাদে বেলডাঙার মিলে প্রশাসনের কর্তাদের পা পড়ায় ফের আশায় বুক বাঁধছে বেলডাঙা। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন যেখানে সুগার মিল, সেখানে আগে ছিল চামড়া প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের কারখানা। ১৯৩৩ সালে সেই কারখানা সংস্কার করে যাত্রা শুরু করে বেলডাঙা শ্রীরাধা কিসান সুগার মিল। শিল্পপতি রাধাকিসান ঝাঝারিয়ার নামেই মিলের নাম রাখা হয়। এক বছর পর থেকে চিনি উৎপাদ‌নও শুরু হয়। তখন মুর্শিদাবাদ, মালদহ, রাজশাহী ও নদিয়াতে সুগার মিলের জমি ছড়িয়ে ছিল। পরে দেশভাগ, জমির বেদখল-সহ নানা কারণে ১৯৪৭-৪৮ সা‌ল নাগাদ মিল বন্ধ হয়ে যায়।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৯৩ সালে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ওই সুগার মিল ও তার পাশের জমি লিজ নেয় চাঁপদানি ইন্ডাস্ট্রি। তাদের সেখানে পাটজাত নানা শিল্প তৈরির কথা ছিল। কিন্তু সে সব কিছুই হয়নি। বেলডাঙার পুরপ্রধান
ভরত ঝাওর বলছেন, ‘‘এই গোটা বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছি। আশা করা যায়, ফের এখানে শিল্প ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে।’’

বেলডাঙার ইতিহাস নিয়ে কাজ করেন সন্তোষরঞ্জন দাস। তিনি বলছেন, ‘‘২০০৩ সালের মুর্শিদাবাদ গেজেটিয়ারে চিনি মিলের কথা বলা আছে। সেখান থেকেই জানা যায়, ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৭ সাল পযর্ন্ত এই চিনিকল চালু ছিল।’’ স্থানীয় লোকজন বলছেন, ‘‘ফের যদি এখানে শিল্প হয়, তা হলে বেলডাঙার আর্থ-সামাজিক চেহারাটাই বদলে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Beldanga Sugar Mill
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE