কংগ্রেসের অবরোধ। —নিজস্ব চিত্র।
কংগ্রেসের পথ অবরোধ কর্মসূচিতে বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সালার থানার থানামোড়ের ঘটনা। যদিও পুলিশ ওই ঘটনায় ফরিদ শেখ নামে এক কংগ্রেস কর্মীকেই আটক করেছে !
২৮ জুন বীরভূমে কংগ্রেসের এক দলীয় সভায় পুলিশকে গালাগাল দেওয়ার অভিযোগ ওঠে খড়গ্রামের কংগ্রেস বিধায়ক আশিস মার্জিতের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর পুলিশ ওই বিধায়কের বিরুদ্ধে মামলা করে।
কংগ্রেসের দাবি, বিধায়ককে মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে পুলিশ। ওই মামলা প্রত্যাহার ও জেলা জুড়ে কংগ্রেস কর্মীদের মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে পুলিশের বিরুদ্ধে জেলা জুড়ে পথ অবরোধের ডাক দেয় কংগ্রেস। সেই মতো এ দিন বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সালারে কংগ্রেস কর্মীরা থানামোড়ে সালার-কাটোয়া রাজ্য সড়কের উপর পথ অবরোধ করতে শুরু করেন।
অভিযোগ, সেই সময় পুলিশের সামনেই তৃণমূলআশ্রিত জনাকয়েক সমাজবিরোধী ওই এলাকায় বোমা ছোড়ে। আতঙ্কে কংগ্রেসকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন। পুলিশ তদন্তে নেমে ফরিদ শেখ নামে এক কংগ্রেসকর্মীকে আটক করে। ওই কংগ্রেসকর্মীর দোকান থেকে তিনটি বোমাও উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
সালার ব্লক কংগ্রসের সভাপতি আজাহারউদ্দিন বলেন, “আমাদের পথ অবরোধ কর্মসূচিতে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা বোমা ফেলল। তাদের ছেড়ে দিয়ে পুলিশ উল্টে আমাদের কর্মীকে গ্রেফতার করল। বোমা উদ্ধারের গল্প জুড়ে দিল। এর পর অভিযোগ করলে তার কী তদন্ত হবে সেটা এই ঘটনায় পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে।”
যদিও কংগ্রেসের এমন অভিযোগ মানতে নারাজ ওই ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, “থানামোড়ে সেলিম শেখ নামে দলের যুব সংগঠনের এক সক্রীয় কর্মীর দোকান রয়েছে। সেলিমকে লক্ষ্য করে বোমা ছুড়তে গিয়েছিল ফরিদ। পুলিশ দেখতে পেয়ে ফরিদকে আটক করেছে।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘কংগ্রেসের শক্তি দিন দিন কমে যাওয়ায় আমাদের ঘাড়ে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন অবরোধ চলাকালীন ফরিদ ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে একটি ঝোপের আড়ালে যায়। তারপরই সেখানে একটি বোমা ফাটে। গোটা ঘটনাটি পুলিশের সামনে হওয়ায় পুলিশ ফরিদকে আটক করে। তার দোকানে তল্লাশি করে তিনটি বোমাও উদ্ধার করা হয়। তবে কী কারণে ফরিদ ওই এলাকায় বোমা ফাটিয়ে ছিল সেটা জানতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। কান্দির এসডিপিও সন্দীপ সেন বলেন, “অবরোধস্থল থেকে দূরে একটি বোমা ফেটেছে। ফরিদ শেখ নামে এক কংগ্রেস কর্মীকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।”
ওই দিন বড়ঞা থানার কুলির মোড়ে কান্দি-সাঁইথিয়া রাজ্য সড়ক ও হলদিয়া-ফারাক্কা বাদশাহি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস। ওই পথ অবরোধে নেতৃত্ব দেয় বড়ঞার বিধায়ক প্রতিমা রজক। প্রতিমাদেবী বলেন, “বিধায়ক আশিস মার্জিত পুলিশকে কী বলল আর তাতে পুলিশ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে দিল। আর তৃণমূলের নেতারা প্রকাশ্যে খুন করার হুমকি দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা নেই পুলিশের।”
জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র অশোক দাস বলেন, ‘‘সালারে অবরোধ চলাকালীন আমাদের কর্মীদের উপরে বোমা নিয়ে হামলা করেছে তৃণমূল। বিষয়টি জেলার পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি।’’ পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, ‘‘অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে।’’
এ দিকে, অবরোধের জেরে জেলার বিভিন্ন রাজ্য ও জাতীয় সড়কে যানজট হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy