Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বাজারই নেই, রেশম বিক্রিতে পিছিয়ে রাজ্য

রাজ্য সরকারের উদ্যোগ ছাড়া রেশম চাষের উন্নতি অসম্ভব। আর পশ্চিমবঙ্গে যে সেই উদ্যোগেই যথেষ্ট খামতি রয়েছে, মঙ্গলবার তার ইঙ্গিত মিলল কেন্দ্রীয় রেশম বোর্ডের চেয়ারম্যান এন এস বিসি গৌড়ার বক্তব্যে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৫ ০১:১৩
Share: Save:

রাজ্য সরকারের উদ্যোগ ছাড়া রেশম চাষের উন্নতি অসম্ভব। আর পশ্চিমবঙ্গে যে সেই উদ্যোগেই যথেষ্ট খামতি রয়েছে, মঙ্গলবার তার ইঙ্গিত মিলল কেন্দ্রীয় রেশম বোর্ডের চেয়ারম্যান এন এস বিসি গৌড়ার বক্তব্যে।

এ দিন বহরমপুরে এক দিনের রেশম কৃষিমেলায় এসে তিনি বলেন, “কর্নাটক, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের সরকার প্রতিটি জেলায় একাধিক কোকুন (রেশমের গুটি) মার্কেট তৈরি করে রেশম বিক্রির পরিকাঠামো গড়ে দিয়েছে। ফলে সেই সব রাজ্যের চাষিদের রেশম বিক্রি করতে বিপাকে পড়তে হয় না। চাষিরা সেখানে ভাল দাম পান। কিন্তু এ রাজ্যে কেবল মালদহে একটি মাত্র কোকুন মার্কেট রয়েছে। তার ফলে এ রাজ্যের রেশম চাষিরা বাজারের অভাবে কম দাম পান। অথচ জলবায়ু ও মাটির উর্বরতা গুণে এ রাজ্য রেশম চাষে দেশের মধ্যে অগ্রণী ভূমিকা নেওয়ার অনেক সম্ভবনা রয়েছে।” কেন্দ্রীয় রেশম বোর্ডের ডিরেক্টর এস নির্মল কুমার বলেন, “সেই সম্ভবনাকে সফল করতে হলে এগিয়ে আসতে হবে রাজ্য সরকারকে। কোকুন বিক্রি করার জন্য এ রাজ্যের প্রতিটি জেলায় ৪-৫টি করে কোকুন বিক্রয় কেন্দ্র খুলতে হবে। তবেই বাজার পাবে রেশম চাষিরা। চাষিদের পরিবহণ খরচ ও যাতায়াতের সময় কম লাগবে। পণ্যের গুণমাণও ভাল থাকবে।” কেন্দ্রীয় রেশম বোর্ডের চেয়ারম্যান জানান, বর্তমানে রেশম উৎপাদনে বিশ্বে ভারত দ্বিতীয় স্থানে। প্রথম স্থানে চিন। কিন্তু খুব দ্রুত চিনকে টপকে যাবে ভারত। গত বছর চিন রেশম উৎপাদন করেছে ৩০ হাজার মেট্রিক টন। ভারত রেশম উৎপাদন করেছে ২৪ হাজার মেট্রিক টন। চিনের থেকে মাত্র ৬ হাজার মেট্রিক টন কম। তিনি বলেন, “এ বারে আমাদের লক্ষ মাত্রা ৩২ হাজার মেট্রিক টন। অন্য দিকে চিন এখন নানা কারণে রেশম উৎপাদন থেকে সরতে চাইছে। পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া ও ভূপ্রকৃতি রেশম চাষের পক্ষে খুবই অনুকূল।” এস নির্মল কুমার জানান, কাশ্মীর ও চেন্নাইয়ের মতো এ রাজ্যও বাইভোল্টাইন জাতের উচ্চ ফলনশীল রেশম চাষের পক্ষে বেশ অনুকূল। গত বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ মেট্রিক টন। লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে উৎপাদন হয়েছে ১৪ মেট্রিক টন। মালবেরি তুতচাষও এ মাটির পক্ষে খুবই উপযোগী। বহরমপুর শহর লাগোয়া চুয়াপুর এলাকায় ১৯৪৩ সালে গড়ে উঠেছে কেন্দ্রীয় রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। দেশের অন্যতম প্রাচীন ওই প্রতিষ্ঠানে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয় এক দিনের রেশম কৃষিমেলা। সেখানে রাজ্যের মুশির্দাবাদ, মালদহ, নদিয়া, পুরুলিয়া, বাকুড়া, বীরভূম, জলপাইগুড়ি, মেদিনীপুর জেলা ছাড়াও ছিলেন ঝাড়খণ্ডের রাজমহল ও মহেশপুর রাজ জেলা মিলিয়ে মোট প্রায় দেড় হাজার রেশম চাষি। উন্নতমানের ও উচ্চ ফলনশীল রেশম চাষ ও তার সমস্যা সমাধানের বিষয়ে এ দিনের রেশম কৃষিমেলায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। উচ্চ ফলনশীল রেশমচাষ বিষয়ে কৃষকদের স্বশিক্ষিত করে গড়ে তুলতে এ দিন ১৩টি পুস্তিকার আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করা হয়। মুর্শিদাবাদ মালদহের মতো বন্যাপ্রবণ জেলার জন্য উপযোগী এক নতুন পলুগাছের জন্ম দেওয়া হয়েছে। মালবেরি প্রজাতির নতুন প্রজন্মের ওই গাছের নাম ‘সি ২০২৮’। মুর্শিদাবাদ ও মালদহ জেলায় প্রতি বছর রেশম চাষিরা বন্যার কবলে পড়ে নিঃস্ব হয়। ‘সি ২০২৮’ পলুগাছের উদ্বোধন করে নির্মল কুমার বলেন, “এ জাতের পলুগাছের শিকড় ৩০-৩৫ দিন জলে ডুবে থাকলেও পচন ধরে না। ফলে অসম, কেরল ও পশ্চিমবঙ্গের মতো বানভাসি রাজ্যের রেশম চাষিরা উপকৃত হবেন।” স্বয়ংক্রিয় রিলিং মেশিন ও আধুনিক প্রজাতির গাছ ও পলুপোকার চাষ থেকে সুবিধা পেলে বাজারের অভাবে রেশম চাষিরা সেই সুযোগ ঘরে তুলতে পারবেন না বলে দাবি কেন্দ্রীয় রেশম বোর্ড কর্তাদের।

হাসপাতালে মা ও শিশু। ১৫ দিনের পুত্র সন্তান-সহ অসুস্থ মাকে রাস্তা থেকে তুলে হাসপাতালে ভর্তি করলেন পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান ও স্থানীয় মানুষ। মঙ্গলবার সকালে করিমপুরের রামকৃষ্ণপল্লির ঘটনা। জানা গিয়েছে স্বেচ্ছায় বিয়ে করে বাড়ি ছেড়েছিলেন ওই মহিলা। ১৪ ফেব্রুয়ারি তাঁর পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু এ দিন স্বামীই তাঁকে ফেলে যান রামকৃষ্ণপল্লিতে ওই মহিলার মাসির বাড়ির কাছে। মাসির বাড়ির লোকেরাও তাঁকে ঘরে নিতে অস্বীকার করেন। করিমপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তারক সরখেল বলেন, “ঘটনার কথা শুনে অসুস্থ ওই মহিলা ও তাঁর সন্তানকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। দু’জনেরই চিকিৎসার প্রয়োজন। সুস্থ হলে মহিলার কথা শুনে পুলিশ ও প্রশাসনকে জানানো হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

silk market silk berhampur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE