Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বোমা-গুলির লড়াই, ধৃত ৪

তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর এলাকা দখলের লড়াইয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কল্যাণীর বিবেকানন্দ পল্লি। সোমবার রাতে এক গোষ্ঠীর লোকেরা অন্য গোষ্ঠীর নেতা-কর্মীদের বাড়ি লক্ষ করে বোমা-গুলি চালায় বলে অভিযোগ।

ভেঙে দেওয়া হয়েছে কাঁচ। নিজস্ব চিত্র

ভেঙে দেওয়া হয়েছে কাঁচ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কল্যাণী শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৭ ০২:১৪
Share: Save:

তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর এলাকা দখলের লড়াইয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কল্যাণীর বিবেকানন্দ পল্লি। সোমবার রাতে এক গোষ্ঠীর লোকেরা অন্য গোষ্ঠীর নেতা-কর্মীদের বাড়ি লক্ষ করে বোমা-গুলি চালায় বলে অভিযোগ। কয়েকটি বাড়ি ও বেশ ক’টি গাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব। ওই ওয়ার্ডের সব কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ এক দল দুষ্কৃতী স্থানীয় তৃণমূল কর্নী মঙ্গল মধুর বাড়ির সামনে এলোপাথাড়ি বোমা-গুলি ছুড়তে শুরু করে। কিছু ক্ষণ পরে আরও এক দল দুষ্কৃতী মিত্র কলোনি এলাকায় গিয়ে বোমা-গুলি ছোড়ে। পরে ফের হামলা হয় বিবেকানন্দ পল্লিতে। ভাঙচুর হয় মঙ্গলের বাড়ি। বেশ কয়েকটি গাড়ি-মোটরবাইক-টোটো ভাঙচুর করা হয়। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। পুলিশ আসার পর দুষ্কৃতীরা এলাকা ছেড়ে পালায়।

বিবেকানন্দ পল্লি যেখানে, কল্যাণী পুরসভার সেই ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন তৃণমূলের অমর রায়। জাল ওষুধ চক্র, জেএনএম মেডিক্যাল কলেজে আয়াদের থেকে তোলাবাজি, অ্যাম্বুল্যান্স সিন্ডিকেট চালানো-সহ একাধিক অভিযোগে দলের লোকেরাই এক সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। বর্তমানে তিনি এলাকাছাড়া। দলও ইতিমধ্যে তাঁকে বহিষ্কার করেছে।

তৃণমূল সূত্রের খবর, এক সময়ে অমর-ঘনিষ্ঠ ছিলেন মঙ্গল মধু। পরে তিনি অমরের বিরোধিতায় নামেন। অমর রায় এলাকাছাড়া হওয়ার পরে ওই ওয়ার্ডে কয়েক জনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওই ওয়ার্ডের যুব তৃণমূলের সভাপতি করা হয় বান্টি নন্দীকে। তার পর থেকেই মঙ্গলের গোষ্ঠীর সঙ্গে এলাকা দখলের লড়াই শুরু হয় বান্টির গোষ্ঠীর। মঙ্গল পেশায় একটি সংস্থার নিরাপত্তারক্ষী। বর্তমানে জেএনএম হাসপাতালে তাঁর ডিউটি করার কথা। হাসপাতালের অন্য রক্ষীদের অভিযোগ, ডিউটি না করেই তিনি বেতন তোলেন। মঙ্গল অবশ্য তা অস্বীকার করেন।

অমরের বিদায়ের পরেও ফের জেএনএম হাসপাতালে তোলাবাজি চালানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে এখন দুই গোষ্ঠীই পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনছে। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিবেকানন্দ পল্লি, মিত্র কলোনিতে প্রচুর সরকারি জমি অমর বিক্রি করে দিয়েছেন বা টাকা নিয়ে লোক বসিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। কিন্তু তাঁর অবর্তমানেও তা বন্ধ হয়নি। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, দু’পক্ষেরই মদত রয়েছে।

মঙ্গলের পাল্টা অভিযোগ, দলেরই একটি অংশ বেআইনি জমি কারবার করতে চাইছে। তিনি বলেন, ‘‘আমি কারও নাম করছি না। কিন্তু দলেরই কেউ কেউ আবার জমির কারবার শুরু করতে চাইছে। আমি বাধা দিচ্ছি বলেই আমার উপরে হামলা হচ্ছে।’’ বারবার চেষ্টা করেও বান্টির সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। কল্যাণী শহর তৃণমূলের সভাপতি অরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দল তদন্ত করছে। আপাতত ওই ওয়ার্ডের সব কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে।’’ পুলিশ জানায়, হামলার ঘটনায় চার জনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। সময় মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

hooliganism TMC Arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE