খুচরো-বিক্ষোভ: গাংনাপুরে। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
দোকানে কয়েনের পাহাড়। কিন্তু খরিদ্দাররা তা নিতে চান না। নিচ্ছেন না মহাজনরা. এমনকী ব্যাঙ্কও নিতে চাইছে না খুচরো টাকা। দীর্ঘদিন ধরেই এমনটা চলছে। সোমবার গাংনাপুর এলাকার ব্যবসায়ীরা একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সামনে খুচরো টাকা ছড়িয়ে বিক্ষোভ দেখালেন। যোগ দিলেন এলাকার বাসিন্দারাও।
নদিয়ার গাংনাপুরের ছবি যদি এমন হয় তবে মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার ছবিটা একটু অন্যরকম। সেখানে ব্যবসায়ীরা খুচরো টাকা নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। সেই সমস্যা মেটাতে আসরে মানতে হয়েছে প্রশাসনকে। তারা নির্দেশ জারি করেছে, নিতে হবে সব কয়েনই। কিন্তু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কেউ খুচরো নিতে চাওয়ায় ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন অনেকেই। সবাই বলছেন সমাধান করতে হবে। কিন্তু, সমাধানের পথ দেখাতে পারছেন না কেউ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন বেলা ১১টা নাগাদ গাংনাপুর রেল বাজারের ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে দেন। হাতে প্লাকার্ড নিয়ে ওই ব্যাঙ্কের সামনে হাজির হন। রাস্তার উপরে খুচরো ছড়িয়ে দিয়ে তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলে সেই বিক্ষোভ। তাতে সামিল হন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের কাছে স্মারকলিপি দেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা রঞ্জন ধর বলেন,“এক, দুই, পাঁচ এবং দশ টাকার কয়েন ব্যাঙ্ক জমা নিচ্ছে না। সেই জন্য ব্যবসায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। কয়েন নিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে মাঝে মাঝে আমাদের ঝামেলা হচ্ছে। যার কারনে আমাদের এই আন্দোলনে তাদেরকেও সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলাম। তারা আমাদের আবেদনে সারা দিয়েছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দা বিপ্লব দাস চৌধুরী বলেন, “কয়েন নিয়ে বাজারে গেলেই বিপদে পড়তে হয়। কয়েন থাকায় জিনিস কিনেও তা ফেরত দিতে হয়েছে।”
সমস্যার কথা স্বীকার করে গাংনাপুরের ওই ব্যাঙ্কের ম্যানেজার দেবাশিস ভৌমিক বলেন, “আমাদের ছোট শাখা। দু-তিন জন কর্মী দিয়ে চালাতে হয়। ফলে খুচো নেওয়ার সমস্যা রয়েছে। নদিয়ার লিড ব্যাঙ্কের ম্যানেজার সুগত লাহিড়ি বলেন, “কয়েন জমা নেওয়া নিয়ে একটা সমস্যা রয়েছে। সর্বত্রই এক সমস্যা। সমাধানের পথ খোঁজা হচ্ছে।”
অন্যদিকে ভগবানগোলা-১ ব্লকের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে সব ধরণের কয়েন নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে বিপাকে পড়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষ। এর পরেই ভগবানগোলা-১ ব্লক প্রশাসনের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয় যে কয়েন না নিলে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। প্রশাসনের ওই বিজ্ঞপ্তি বিভিন্ন এলাকায় টাঙিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি সচেতন করতে মাইকে প্রচার চালানো হয়।
লালবাগ মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সভাপতি হুমায়ুন কবির বলেন, ‘‘ব্যাঙ্ক কয়েন জমা নিচ্ছে না। ক্রেতারা কয়েন দিচ্ছেন, কিন্তু তাঁরা নিচ্ছেন না। অনেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। আমরা তাই কয়েন নেওয়া বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি।’’
তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এই সমস্যা মেটাবে কে? যদি বড় কোনও ঘটনা ঘটে যায়, তার দায়ই বা কে নেবে? এমনটা কিন্তু বেশি দিন চলতে পারে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy