Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
অজয়-অরিন্দম কাজিয়া

শান্তিপুরকে শান্ত করতে বার্তা নেত্রীর

অজয় দে-র খাসতালুক শান্তিপুরে অরিন্দম ভট্টাচার্যের উত্থানের পরে দু’পক্ষে ক্ষমতার দ্বৈরথ শুরু হয়েছে। দিন কয়েক আগে অজয় দে নিয়ন্ত্রিত তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে অরিন্দম-ঘনিষ্টের মার খাওয়া এবং সেই রাতেই অজয়ের ছায়াসঙ্গী তথা শান্তিপুরের উপপুরপ্রধান তৃণমূলের আব্দুর সামাদ কারিগরের বাড়িতে বোমাবাজি থেকে গোটা বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে আসে।

কলকাতার পথে মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র

কলকাতার পথে মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৭ ০২:১৭
Share: Save:

শান্তিপুরে দলীয় কোন্দল তিনি বরদাস্ত করবেন না বলে স্পষ্ট বার্তা দিয়ে গেলেন তৃণমূল নেত্রী। মঙ্গলবারই অজয় দে-র ছায়াসঙ্গী তথা শান্তিপুরের উপপুরপ্রধান আব্দুর সামাদ কারিগরকে শহর সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি দেখে কলকাতায় ফেরার পথে সোমবার কৃষ্ণনগর সার্কিট হাউজে রাত্রিবাস করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সেখানেই জেলা তৃণমূল সভাপতি উজ্জ্বল বিশ্বাসকে শান্তিপুর শান্ত করার নির্দেশ দেন তিনি। পরে রানাঘাটের বেগোপাড়া মোড়ে প্রাক্তন জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তের কাছেও তিনি এ নিয়ে অসন্তোষ ব্যক্ত করেছেন দল সূত্রের খবর।

অজয় দে-র খাসতালুক শান্তিপুরে অরিন্দম ভট্টাচার্যের উত্থানের পরে দু’পক্ষে ক্ষমতার দ্বৈরথ শুরু হয়েছে। দিন কয়েক আগে অজয় দে নিয়ন্ত্রিত তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে অরিন্দম-ঘনিষ্টের মার খাওয়া এবং সেই রাতেই অজয়ের ছায়াসঙ্গী তথা শান্তিপুরের উপপুরপ্রধান তৃণমূলের আব্দুর সামাদ কারিগরের বাড়িতে বোমাবাজি থেকে গোটা বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে আসে। শনিবার শান্তিপুরে সভা করতে এসে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সেই আঁচে আরও হাওয়া দিয়ে গিয়েছেন। অজয় দে-র ভরাট প্রশস্তি করে অরিন্দমকে নাম না করেও ঠেস দিয়েছেন তিনি।

বস্তুত, অজয় দে এবং অরিন্দম ভট্টাচার্য দু’জনেই হালে কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে এসেছেন। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার আগেই মমতার সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল শান্তিপুরের পাঁচ বারের বিধায়ক অজয় দে-র। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে অজয় দে তৃণমূলে যোগ দেন। উপনির্বাচনে জয়ী হলেও বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের সঙ্গে জোটের জোরে তদানীন্তন প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভপতি অরিন্দমের কাছে হেরে যান। সম্প্রতি অরিন্দমও চলে এসেছেন। এবং এলাকার রাশ কার হাতে থাকবে তা নিয়ে কাজিয়া তুঙ্গে উঠেছে।

সোমবার রাতে মমতা সার্কিট হাউজে ঢোকার সময়ে গেটের সামনে দেখা গিয়েছিল অরিন্দমকে। এ দিন দুপুরে নেত্রীর কলকাতায় ফেরার সময়ে শান্তিপুর বাইপাসে অনুগামী নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। তাঁদের দেখে দাঁড়িয়ে পড়ে কনভয়। গাড়ির কাচ নামিয়ে কথা বলেন মমতা।

মঙ্গলবার সকালে সার্কিট হাউজে যান উজ্জ্বল বিশ্বাস, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বাণীকুমার রায় ও কৃষ্ণনগরের পুরপ্রধান অসীম সাহা। তখনই নেত্রী উজ্জ্বলকে শান্তিপুর নিয়ে হুঁশিয়ারি দেন বলে দল সূত্রের খবর। অরিন্দম দিনভর নেতৃত্বের কাছাকাছি থাকলেও অজয় দে-কে দেখা যায়নি। রাতে শান্তিপুরের ডাকঘর মোড়ে জনসভায় উজ্জ্বল, গৌরীশঙ্কর বা শঙ্কর থাকলেও তিনি আসেননি। সভায় নাম না করে তাঁকে ‘হরিদাস পাল’ বলে কটাক্ষ করেন গৌরীশঙ্কর। উজ্জ্বল বলেন, ‘‘দলের ডাকা সভায় না আসা বরদাস্ত করা হবে না।’’

বহু চেষ্টা করেও অজয় দে-র সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর দু’টি মোবাইলই বন্ধ ছিল। অরিন্দম অনুগামীদের দাবি, তাঁদের দাদা এখন নেতৃত্বের চোখের মণি। আব্দুর সামাদ বলেন, ‘‘শরীর খারাপ অজয়বাবুর। কলকাতায় তাই আসতে পারেননি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE