পড়েছে পোস্টার। নিজস্ব চিত্র।
বসন্ত সন্ধ্যায় আচমকা চমকে উঠেছিল পাড়া। মাধ্যমিকের প্রস্তুতিতে মুখ গুঁজে থাকা ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা লাটে, পাড়ার বয়স্কদের নাভিশ্বাস— ভয়ে ভয়ে দরজা ফাঁক করে রানাঘাটের পাড়ার মানুষজন বুঝেছিলেন, কিচ্ছু করার নেই, পাড়ার ছেলেরা মালদহ থেকে ফিরেছে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট জিতে। অতএব, মেনে নেওয়া ছাড়া আর গত্যন্তর কোথায়?
মাধ্যমিকের মুখে এই মেনে নেওয়াটাই আপাতত নদিয়া আর পড়শি মুর্শিদাবাদের ভবিতব্য।
জেলার ছোট-মেজ শহরের মানুষজন জানেন, ডিজে বাজবেই! তা কখনও, পাড়ার ছেলেদের সাফল্যের প্রমাণ রাখতে কখনও বা রাজনীতির দাদাদের ‘জন সংযোগের’ স্বার্থে সাংস্কৃতির অনুষ্ঠান। আর গ্রামের মানুষ জানেন, ডিজে এখন ‘গ্রামীণ সংস্কৃতির অঙ্গ’।
সরকারি নিযেধাজ্ঞা কিংবা দূযণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ যতোই সাজিয়ে গুছিয়ে বলুক— মাধ্যমিকের পড়ুয়াদের প্রস্তুতির স্বার্থে এই সময়ে ডিজে কেন, মাইক বাজানোও চলবে না, গ্রাম-শহরের ‘সংস্কৃতির’ স্বার্থে তার উপরে ছড়ি ঘোরাবে কে?
রানাঘাটের অনিমেষ পাল বলছেন, ‘‘পুলিশ নিয়মটাই জানে বলে মনে হয় না।’’ মুর্শিদাবাদের রেজিনগরের আখতার আলির কথায়, ‘‘রাজনীতির দাদারা ডিজে’র উপদ্রব বন্ধ করবেন কী করে, ওই সব অনুষ্ঠান তো অধিকাংশ সময়ে তাঁদের পৃষ্ঠপোষকতাতেই হচ্ছে।’’ আর তাই, রানাঘাট, আরংঘাটা, ধানতলা, হরিণঘাটা কিংবা গ্রামীণ মুর্শিদাবাদে ডিজের দাপটে লেখাপড়া শিকেয় উঠেছে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের। অথচ চাকদহ শহর কিন্তু তা করে দেখিয়েছে। গত পুজো থেকে পুরসভা বৈঠক করে ডিজে নিষিদ্ধ করেছে। নদিয়া জুড়ে এ ব্যাপারে প্রচার করছে চাকদহ বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা। সংস্থার পক্ষে বিবর্তন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘যে কোনও ছুতো পেলেই শুরু হয়ে যাচ্ছে দাপাদাপি। পরীক্ষার্থী-রোগী তো বটেই, এতে রাতে গছের পাখিরা পর্যন্ত টিকতে পারছে না।’’ ‘রোগ ঠেকাতে তাই পাড়ার মানুষের সঙ্গে এক জোট হয়ে প্রতিবাদে নামছে ওই সংগঠন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy