Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
আতঙ্কে স্কুলে যেতে অনিচ্ছা

শিক্ষকের মারে জখম চার ছাত্র

প্রহৃত ওই পড়ুয়াদের পরিবারের অভিযোগ, বুধবার সাগরদিঘি থার্মাল পাওয়ার স্কুলের ওই ঘটনার পরে আতঙ্কে ছাত্ররা স্কুলে যেতে চাইছে না। বিষয়টি লিখিত ভাবে প্রধান শিক্ষক, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ও স্কুল পরিচালন সমিতিতে জানানো হয়েছে

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
 সাগরদিঘি শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৭ ০২:১৯
Share: Save:

স্কুল ছুটির পরে স্কুলের ছাদে ওঠার ‘অপরাধে’ চার ছাত্রকে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠল এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

প্রহৃত ওই পড়ুয়াদের পরিবারের অভিযোগ, বুধবার সাগরদিঘি থার্মাল পাওয়ার স্কুলের ওই ঘটনার পরে আতঙ্কে ছাত্ররা স্কুলে যেতে চাইছে না। বিষয়টি লিখিত ভাবে প্রধান শিক্ষক, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ও স্কুল পরিচালন সমিতিতে জানানো হয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার করে পিডিসিএল নিয়ন্ত্রিত ওই স্কুলের ভূগোলের শিক্ষক সৌগত মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘মারধর বলতে যা বোঝায় তা ঘটেনি। ছাত্রদের মাঝেমধ্যে কাউন্সেলিং করানো হয় স্কুলে। এ দিন সেটাই করা হয়েছে ওই ছাত্রদের।” যা শুনে অভিভাবকেরা আকাশ থেকে পড়ছেন। তাঁদের অভিযোগ, সাগ্নিক-সহ বাকিদের রীতিমতো মারধর করা হয়েছে। এটাকে কাউন্সেলিং বলে?

প্রহৃত সাগ্নিক পর্বত নবম, তার ভাই সায়ক পঞ্চম, অতনু বাড়ুই পঞ্চম ও রুদ্রনারায়ণ সরকার সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া। তারা সকলেই স্কুল লাগোয়া আবাসনের বাসিন্দা। অভিযোগ, স্কুলে প্রার্থনা শেষ হওয়ার পরে প্রধান শিক্ষকের উপস্থিতিতে তাদের মারধর করা হয়।

সাগ্নিক ও সায়কের মা স্মিতা জানান, সাগ্নিকের গোটা শরীরে কালসিটে পড়ে গিয়েছে। ছেলেরা স্কুল থেকে ফিরে বাড়িতে এসে কান্নাকাটি শুরু করে। সাগ্নিককে সঙ্গে সঙ্গে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। চিকিৎসকের রিপোর্টেও সাগ্নিকের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্নের উল্লেখ রয়েছে। ওই ভাবে মারধরের পরে বাচ্চাগুলোকে স্কুল ছুটি না হওয়া পর্যন্ত বসিয়ে রাখা হয়েছিল।

অভিযোগ, ওই চার জন ছাত্র মঙ্গলবার স্কুল ছুটির পরে এক শিক্ষকের কথা মতো স্কুলের মাঠে গিয়েছিল। শিক্ষকেরা সেই সময় মাঠে ভলিবল খেলছিলেন। ছুটির পরে তারা কেন স্কুলে এসেছিল জানতে চেয়ে শিক্ষকেরা তাদের বকাবকি করে। সেই সময় ভয় পেয়ে তারা স্কুলের ছাদে উঠে পড়ে। পরে তাদের ছাদ থেকে নামিয়ে ঘটনাটি জানানো হয় তাদের অভিভাবকদের।

সাগ্নিকের বাবা সমরেন্দ্রনাথ সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তৃণমূলের কর্মী সংগঠনের সম্পাদক। তিনি জানান, অসময়ে স্কুলে গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে ছাদে উঠেছিল বলে দুই ছেলেকে যে ভাবে শাসন করা উচিত, তা করা হয়েছিল। তাঁর অভিযোগ, বুধবার তারা স্কুলে গেলে তাদের বেধড়ক মারধর করেন সৌগতবাবু। মানসিক ও শারীরিক ভাবে তারা কতটা আঘাত পেয়েছে তা জানার কোনও চেষ্টা করেননি শিক্ষকেরা। বরং সারাদিন স্কুলের ক্লাসে বসিয়ে রাখা হয়। সমরেন্দ্রনাথের অভিযোগ, ‘‘এমন ঘটনা এই প্রথম নয়। সৌগতবাবুর বিরুদ্ধে বহু অভিভাবকেরই অভিযোগ রয়েছে। স্কুলে বার বার জানানো হলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ যে কোনও পদক্ষেপ করেননি এই ঘটনা সেটাই প্রমাণ করল। তাছাড়া ছাত্ররা ছাদে গেল কী করে? কেন ছাদের দরজা খোলা রাখা হয়? এ প্রশ্নের জবাব কে দেবে?”

বৃহস্পতিবার স্কুল পরিচালন সমিতির সভা হয় স্কুলে। প্রধান শিক্ষক মামুন হোসেন বলেন, “ওই সভায় শিক্ষকদের মারধরের প্রসঙ্গ নিয়েও আলোচনা হয়েছে।” স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক ও ডিজিএম তুষারকান্তি ঘোষ অবশ্য এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Thermal Power School Sagar Dighi Teacher Student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE