Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ছুটিতে ছুঁয়ে দেখা ইতিহাস

আগে থেকে ঠিক ছিল না। কিন্তু ডিসেম্বর পড়তেই বড়দিনের ছুটির দিকে তাকিয়ে ঘরকুনো মনটা ডানা মেলতে চাইল। ভরা শীত। কোথায় যাওয়া যায়?

ইন্দিরা গাঁধী মেমোরিয়াল

ইন্দিরা গাঁধী মেমোরিয়াল

সুদীপ জোয়ারদার
পাগলাচণ্ডী, নদিয়া শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:১২
Share: Save:

আগে থেকে ঠিক ছিল না। কিন্তু ডিসেম্বর পড়তেই বড়দিনের ছুটির দিকে তাকিয়ে ঘরকুনো মনটা ডানা মেলতে চাইল। ভরা শীত। কোথায় যাওয়া যায়?

এক সময় মনে হল, অত ভাবাভাবির কী আছে! দিল্লি তো হতেই পারে এ বারের গন্তব্য। কিন্তু হুট করে দূরে কোথাও যাওয়ার প্রথম হ্যাপা ট্রেনের টিকিট।

কিন্তু সময়টা যে হেতু হাড়কাঁপানো শীত, আর জায়গাটা যে হেতু দিল্লি, তাই দিন কুড়ি আগে টিকিট কেটেও যাওয়া-আসার টিকিট কনফার্ম হয়ে গেল শেষ অব্দি। আর পায় কে। জামাকাপড় লোটাকম্বল বেঁধে সপরিবার বেরিয়ে পড়লাম।

দিল্লি পৌঁছে কিন্তু দেখা গেল, শীত পড়েনি বললেই চলে। রাস্তাঘাটে ট্র্যাফিক জ্যামটাও একেবারে কলকাতার মতো। আমাদের গাড়ি যত না চলে, দাঁড়ায় তার থেকে বেশি। এক সময় গাড়ি এসে দাঁড়াল ইন্ডিয়া গেটের কিছুটা দূরে। নেমে এগোই। কাছে যাওয়া বারণ ছিল। দূর থেকেই দেখলাম। তাতে অবশ্য রোমাঞ্চিত হওয়া আটকাল না।

কী করে যাবেন: শিয়ালদহ ও হাওড়া স্টেশন ট্রেনে দিল্লি

কখন যাবেন: শীতকালটা এড়ানোই ভাল। কুয়াশায় জন্য এ সময় ট্রেন লেট করে।

কোথায় থাকবেন: প্রচুর হোটেল রয়েছে।

লালকেল্লায় দর্শনার্থীদের ভিড় কিছুটা বেশি। মিউজিয়ামে আগে ঢুকে তার পর এসে দাঁড়ালাম দেওয়ানি খাসে। ওখানে ফটো তোলার হিড়িক। আমরাও চটপট তুলে ফেললাম বেশ কয়েকটা ছবি।

রাজঘাটে ঢুকে আপনিই মাথা নত হয়ে আসে। ভিতরের দীর্ঘ পথে সবুজের মাখামাখি। নিস্তব্ধ পরিবেশ।

আলাই মিনার ও কুতুব মিনার

গেলাম প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর বাসস্থানে। ওখানের মিউজিয়ামে কত না পেপারকাটিং। খুঁজে চলি মাতৃভাষার অস্তিত্ব। এক সময় ‘ইউরেকা’ বলে চেঁচিয়ে উঠি। ‘ভারত পরমাণুশক্তিমান হল’— পুরনো আনন্দবাজারের হেডলাইন।

এর পর রোদ ঝলমলে দুপুরে কুতুবমিনারে দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটা। ভিতরে ঢুকে ইতিহাসকে স্পর্শ করা। বিজয়স্তম্ভ দেখলেই গায়ে কাঁটা দেয়। কুতুবমিনারের ভিতরে সম্রাট আলাউদ্দিনের কুতুব মিনারকে টপকানোর ব্যর্থ প্রয়াস— ‘আলাই মিনার’ ঘুরেফিরে দেখা। দেখলাম ইলতুৎমিসের সমাধিও।

মন কাড়ে লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দিরের উন্মুক্ত পরিচ্ছন্ন প্রাঙ্গনে মার্বেলর মেঝেতে বাচ্চাদের হুটোপাটি। আমরা যখন লোটাস টেম্পলে, দিনের আলো অনেকটাই নিভে এসেছে। কিছু ক্ষণ মন্দির চত্বরে ঘুরে ফের বাসে ওঠা।

অনুভব করলাম ইতিহাসের নীরব উপস্থিতি।

ছবি: লেখক ও ইন্টারনেটের সৌজন্যে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE