সরকারি কর্মীকে যে খুনের হুমকি দিয়েছিলেন হরিণঘাটার পুরপ্রধান রাজীব দালাল, বিডিও-র রিপোর্টে তা পরিষ্কার। জেলাশাসককে যে রিপোর্ট পাঠিয়েছেন বিডিও কিশোর বিশ্বাস, তাতে লেখা রয়েছে, হরিণঘাটা ব্লক অফিসের কর্মী জগদীশ ঘোষকে রাজীব ‘লাশ ফেলে দেব’ বলে হুমকি দিয়েছিলেন।
প্রশ্ন উঠছে, ঘটনার পরে দু’দিন পেরিয়ে গেলেও প্রশাসনের তরফে পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি কেন? জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত জানান, তাঁরা নিজেরাই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছেন। তার পরেই পদক্ষেপ করা হবে। আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি সেই তদন্ত শেষ হতে পারে বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর।
গত বুধবার হরিণঘাটা পুরসভার কাউন্সিলর বীণা সূত্রধরের মেয়ে স্বর্ণালী সূত্রধর ওবিসি সার্টিফিকেটের জন্য হরিণঘাটা ব্লক অফিসে যান। তফসিলি জাতি-জনজাতি সেলের অতিরিক্ত ইনস্পেক্টর জগদীশ ঘোষ স্বর্ণালীকে বলেন অভিভাবকদের ডাকতে। স্বর্ণালী রাজীবকে ফোন করেন। জগদীশের অভিযোগ, রাজীব তাঁকে ফোনে বলেন, ‘‘কত টাকা পেলে স্বর্ণালীর কাজটা করবেন?’’ উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘আপনার পুরসভায় কি টাকা দিয়ে কাজ হয়? আমার এখানে ও রকম হয় না।’’
অভিযোগ, এর কিছুক্ষণের মধ্যেই রাজীব ব্লক অফিসে এসে জগদীশকে গালিগালাজ করেন। তার প্রতিবাদ করতে গেলে গালিগালাজ করেন আরও এক কর্মীকে। বলেন, ‘‘আমার পুরসভা থেকে যত আবেদন আসবে, সব ছেড়ে দেবেন। তা না হলে লাশ ফেলে দেব।’’
রাজীবের এই হুমকির পরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ওই অফিসের সমস্ত কর্মী। বৃহস্পতিবার সব কর্মী পুরপ্রধানের আচরণের প্রতিবাদে মুখে কালো কাপড় বেঁধে অফিস করেন। জেলাশাসক হরিণঘাটার বিডিও-র কাছ থেকে গোটা ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠান। তদন্তের নির্দেশও দেন।
ব্লক অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, কল্যাণী মহকুমাশাসকের অফিসের এক জন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট তদন্ত শুরু করেছেন। তিনি ব্লক অফিসে গিয়ে জগদীশ ঘোষ ও অন্য কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সোমবার রাজীবের সঙ্গেও তিনি কথা বলবেন। আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি তাঁর রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা।
সরকারি কর্মীদের হুমকি দেওয়া, সরকারি অফিসে গুন্ডামির ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী যেখানে কঠোর হওয়ার বার্তা দিচ্ছেন, সেখানে জেলা প্রশাসন কি কালক্ষেপ করে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চাইছে? ক্ষুব্ধ সরকারি কর্মীরা চাইছেন, পুলিশে অভিযোগ জানান কর্তারা। জেলাশাসক বলেন, ‘‘একটা তদন্ত শুরু হয়েছে। সেটা শেষ হলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, দলের তরফে রাজীবকে ভর্ৎসনা করা হয়েছে। রাজীবও পাল্টা জানান, ব্লক অফিসের ওই কর্মীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। অন্য ভাবেও হস্তক্ষেপ করা যেতে পারত বলে জেলা নেতৃত্বের তরফে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy