প্রতীকী ছবি।
মাস ছ’য়েক আগে মহিলারা লাঠি দিয়ে হাতে বেআইনি মদের ঠেক গুঁড়িয়ে দেন। তার পরে কয়েক দিন বন্ধ ছিল অবৈধ মদের কারবার।
কিন্তু উৎসব-পার্বণের মুখে আবার শুরু হয়েছে সেই কারবার। ভগবানগোলা থানার বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় নতুন করে বেআইনি মদের কারবার রমরমিয়ে চলছে বলে অভিযোগ উঠছে।
ভগবানগোলা ১ ব্লকের আনন্দধারা মহাসঙ্ঘ গোষ্ঠীর সভানেত্রী বর্ণালী দাসের অভিযোগ, ‘‘প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও ফল হয়নি। ছ’মাস আগে গোষ্ঠীর মহিলারা মহিষাস্থলী পঞ্চায়েতের বাজিতপুর গ্রামের বেআইনি মদের ঠেক ভেঙে দেন। কিন্তু তারপরে কিছু দিন মদ বিক্রি বন্ধ ছিল। ফের ওই কারবার শুরু হয়েছে।’’
বিভিন্ন গ্রামে বেআইনি মদ বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাওয়ার অভিযোগ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের কথায়, ‘‘দিন মজুর বা রাজমিস্ত্রির কাজ করে বাড়িতে টাকা না দিয়ে সেই টাকায় মদ খাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছে এক শ্রেণির মানুষের। এছাড়াও গ্রামের অল্পবয়সীরা মদ্যপ অবস্থায় বেপরোয়া ভাবে মোটরবাইক চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।’’
সম্প্রতি ভগবানগোলা থানার মহম্মদপুর পঞ্চায়েতের বাগডাঙা গ্রামে মদ খাওয়া নিয়ে গণ্ডগোলের জেরে এক মহিলাকে তাঁর স্বামী শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। মারের চোটে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকেন ওই মহিলা। মেয়েটির দাদা এসে তাঁকে কানাপুকুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। গোটা ঘটনা জানিয়ে ভগবানগোলা থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের হলেও ওই মহিলার স্বামীকে পুলিশ থানায় ডেকে নিয়ে গিয়ে ‘পারিবারিক বিবাদ’ মেটানোর পরামর্শ দিয়ে ছেড়ে দেয় বলে অভিযোগ।
ওই মহাসঙ্ঘের সভানেত্রী জানান, ভগবানগোলা থানা এলাকার বিভিন্ন গ্রামে তাঁদের গোষ্ঠীর সদস্যারা রয়েছেন। ওই মহিলাদের অভিযোগ, বিভিন্ন এলাকায় বেআইনি মদের ব্যবসা রমরমিয়ে চলছে। সন্ধ্যার পর থেকেই গ্রামের বিভিন্ন মোড়ে বহিরাগতদের আনাগোনা শুরু হয়ে যায়। তাদের জন্য মহিলারা বাড়ির বাইরে বের হতে পারেন না।
বর্ণালী দাসের দাবি, বিশেষ করে মহিষাস্থলী পঞ্চায়েতের বাজিতপুর গ্রামের পাকুড়তলা মোড়ে ৫-৬টি বেআইনি মদের ঠেক রয়েছে। বহিরাগত মদ্যপদের অত্যাচারে ওই গ্রামের মানুষ অল্পবয়সীদের বিয়ে দিতে বাধ্য হন। পুলিশ ও প্রশাসনকে জানিয়ে কোনও কাজ না হওয়ায় এলাকার মানুষ জোর করে মদের ঠেকগুলি ভেঙে দেন। কিন্তু তার পরে ফের সেখানে অবৈধ ভাবে মদের কারবার শুরু হয়েছে।
ভগবানগোলার-১ ব্লকের বিডিও লোপসান সিরিং বলেন, ‘‘ওই মদ কারবারিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।’’ মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অংশুমান সাহা জানান, অভিযোগ পেলে পদক্ষেপ করা হবে।
যা শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, আর কত বার অভিযোগ জানালে পুলিশএর টনক নড়বে, কে জানে! এই মদের উৎপাত কবে শেষ হবে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy