শোকে ভেঙে পড়েছেন মৃতের আত্মীয়েরা। নিজস্ব চিত্র
দু’ জনেরই আনাজের কারবার। বাড়িও পাশাপাশি। ব্যবসার সুবাদে দু’জনের সম্পর্কও ভাল ছিল। তবে সম্প্রতি সম্পর্কে চিড় ধরেছিল। পুলিশের দাবি, আর সেই কারণেই ‘বন্ধু’র হাতে খুন হলেন যোগেশ মণ্ডল (৫৪)। রবিবার সন্ধ্যায় ইসলামপুরের শিবকৃষ্ণপুরের ওই ঘটনার পরে পশুপতি মণ্ডল অবশ্য বেপাত্তা। পুলিশ তাঁর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, এ দিন সন্ধ্যায় রণংদেহী পশুপতিকে দেখে চমকে ওঠে পাড়া। তাঁর হাতে একটা বড় হাঁসুয়া। মাথার উপরে সেটা বনবন করে ঘুরিয়ে তিনি হুঙ্কার দিচ্ছিলেন, ‘তোর জন্যই আমার ব্যবসা শেষ হয়ে গেল। তোকে ছাড়ব না।’ পশুপতির হুঙ্কার শুনে বাড়়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন যোগেশ। তিনি কিছু একটা বলতেও যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, কোনও কথায় কান না দিয়ে আচমকা সেই হাঁসুয়া দিয়ে যোগেশকে কোপ মারেন পশুপতি।
হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান যোগেশ। পড়শিদের দাবি, কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই পশুপতি এমন কাণ্ড করে বসেন। ডোমকলের এসডিপিও মাকসুদ হাসান বলেন, ‘‘দু’জনে দীর্ঘ দিন থেকে আনাজের ব্যবসা করতেন। ওঁদের সম্পর্কও প্রথমে ভাল ছিল বলেই জানতে পেরেছি। তবে ব্যবসার কারণে সেই সম্পর্ক খারাপ হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, ব্যবসা সংক্রান্ত কারণেই এই খুন।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘ দিন থেকে শিবকৃষ্ণপুর গ্রামে যোগেশ ও পশুপতি এক সঙ্গে আনাজের ব্যবসা করতেন। এলাকা থেকে আনাজ কিনে তাঁরা বহরমপুর নতুন বাজারে বিক্রি করতেন। যোগেশের পরিবার এমন ঘটনায় স্তম্ভিত। যোগেশের ছেলে তাপস মণ্ডল বলছেন, ‘‘ব্যবসা নিয়ে বড় কোনও গণ্ডগোল থাকলে আমরাও জানতে পারতাম। তবে কিছু দিন থেকে বাবার সঙ্গে পশুপতি কাকার দূরত্ব বেড়েছিল। কিন্তু তার জন্য যে বাবাকে লোকটা মেরেই ফেলবে, কে জানত!’’ পশুপতির এক আত্মীয়ের দাবি, ‘‘আমরাও এমন ঘটনায় অবাক। দু’জনের মধ্যে যদি গণ্ডগোল হয়েও থাকে তা একেবারেই তুচ্ছ। কারণ, সেটা বড় কিছু হলে আমরাও জানতে পারতাম।’’ পুজোর আগে এমন ঘটনায় ওই দুই পরিবার তো বটেই, মনখারাপ গোটা গ্রামের।
তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে ডোমকল মহকুমা এলাকায় গণ্ডগোল কিংবা খুন চেনা ঘটনা। শম্ভুনগরে বেড়া টপকে মুরগি চলে গিয়েছিল পড়শির বাড়িতে। তাড়া খেয়ে পালাতে গিয়ে মুরগির পায়ে চোট লাগে। সেই নিয়ে খুন হন এক জন। নসিপুরেও এক বাড়ির মুরগি গিয়ে ডিম পেড়েছিল পাশের বাড়িতে। তা নিয়েও তুলকালাম। শেষতক খুন। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘মানুষ আর কবে সচেতন হবে, বলুন তো?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy