Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
মিডডে মিল-১

মিড-ডি মিল ছাগলে খায়, আমরাও খাই

একই ক্যাম্পাসে দু’টি স্কুল। অথচ ফারাক আকাশ-পাতালের। এক স্কুলে যখন পড়ুয়ারা বেঞ্চে সার দিয়ে বসে ইলিশ চাখছে, তখনই পাশের স্কুলে পড়ুয়ারা মাঠে বসে সারছে মধ্যাহ্নভোজন। অদূরে চরে বেড়াচ্ছে ছাগল।

মাঠে বসে মিড-ডে মিল সারা। — নিজস্ব চিত্র

মাঠে বসে মিড-ডে মিল সারা। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডোমকল শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৬ ০১:৫০
Share: Save:

একই ক্যাম্পাসে দু’টি স্কুল। অথচ ফারাক আকাশ-পাতালের।

এক স্কুলে যখন পড়ুয়ারা বেঞ্চে সার দিয়ে বসে ইলিশ চাখছে, তখনই পাশের স্কুলে পড়ুয়ারা মাঠে বসে সারছে মধ্যাহ্নভোজন। অদূরে চরে বেড়াচ্ছে ছাগল। পড়ুয়াদের কেউ কেউ আবার সেই ছাগলের দিকে ছুড়ে দিচ্ছে দুপুরের খিচুড়ি! কেউ আবার জায়গা না পেয়ে স্কুলের শোচাগারের সামনে নোংরার সামনে দাঁড়িয়ে খাচ্ছে। দু’টি ছবি জলঙ্গির সাগরপাড়ার দেয়াল ঘেঁষা দু’টি স্কুলের। প্রথমটি সাগরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শেষেরটি সাগরপাড়া হাইস্কুল। সোমবারের দুপুরে গিয়ে দেখা গেল স্কুলের সামনে মাঠে থালা নিয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে পডুয়ারা খিচুড়ি খাচ্ছে।

স্কুল কর্তৃপক্ষ অবশ্য এর জন্য দায়ি করছেন শিক্ষা দফতরকে। তাঁদের দাবি, প্রায় সব স্কুলে মিড-ডে মিল খাওয়ার জন্য শেড তৈরি দিলেও ওই স্কুলে হয়নি। ফলে খাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় মাঠে বসে খেতে হয় পড়ুয়াদের। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক পুরবী দে বিশ্বাস জানান, বিষয়টি ডিপিও দেখেন। তবে তিনি যতদূর জানেন জেলায় প্রায় স্কুলেই শেড তৈরি হয়ে গিয়েছে। তবে তাঁর কাছে বেশ কিছু স্কুল শেডের জন্য আবেদনও জানিয়েছে। তাতে সাগরপাড়ার ওই স্কুল আছে কি না দেখে ব্যাবস্থা নেবেন। তবে তিনিও মানছেন, ‘‘ফাঁকা মাঠে এ ভাবে খাওয়া বাঞ্ছনীয় নয়।’’

পাশের ছোট স্কুলটি পেরেছে, কিন্তু বড় স্কুলটি পারেনি। মাঠে বসে খাওয়ার মধ্যেও কোনও শৃক্ষলা নেই। থালায় খাবার নিয়ে কেউ চড়া রোদে মাঠের মাঝে আবার কেউ শৌচাগারের সামনে নোংরা জায়গায় খিচুড়ি আর ডিম খাওয়াতে ব্যস্ত। পড়ুয়াদের দাবি, আগে হাত ধোওয়ার জন্য অনেকে শৌচাগারের সামনে দাঁড়িয়ে খায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রের কথায়, ‘‘খাবার সময় মাঠে ছাগল গরু চলে আসে। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। ফলে সকলে মিলে ওদের খেতে দিই। ওরাও মিড-ডে মিল খায়, আমরাও খাই।’’

কিন্তু এ নিয়ে তীব্র আপত্তি রয়েছে অভিভাবকদের। তাদের অভিযোগ, স্কুলের অনেক শ্রেণিকক্ষ আছে। যেখানে ক্লাস হয় না। সেখানে খেতে দিলেও এমন অবস্থার সামনে পড়তে হয় না পড়ুয়াদের।

প্রধান শিক্ষক ইয়াসিন আলির সাফাই, ‘‘শেড নেই। অনেকবার দরবার করেছি। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। শেড হলে এমন অবস্থা হত না।’’ যদিও অভিভাবকদের একাংশের দাবি, পাশের প্রাথমিক স্কুলটাকে দেখে শেখা উচিত হাইস্কুলের শিক্ষকদের। সব সময় সরকার দফতরের দিকে তাকিয়ে থাকলে হয় না। একটু আন্তরিক হলে অনেক কিছু করা যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mismanagement Midday meal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE