প্রতীকী চিত্র।
সন্দেহের অবসান।
ডিএনএ জানিয়ে দিল, এত দিন যিনি মেয়ে আগলে হাসপাতালে পড়ে ছিলেন, তিনিই আসল মা।
প্রায় এক বছর শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে কাটানোর পরে শেষ পর্যন্ত মায়ের সঙ্গে বাড়ি ফেরার সম্ভাবনা তৈরি হল টুকটুকির। আইনি জটিলতায় এত দিন মায়ের সঙ্গে এই হাসপাতালের একটা বেডই আশ্রয় হয়ে উঠেছিল তার। সেখানেই বড় হয়ে উঠছিল সে। বৃহস্পতিবার ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট পৌঁছয় রানাঘাট জিআরপি-র হাতে। সেখানে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এত দিন যে মহিলা তাকে নিজের সন্তান বলে দাবি করে হাসপাতালে থাকছিলেন, তিনিই জন্মদাত্রী মা।
রানাঘাট জিআরপি থানার আইসি দেবকুমার রায় বলেন, “আমরা আজই ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট হাতে পেয়েছি। সেখানে বলা হয়েছে, ওই মহিলাই শিশুটির জন্মদাত্রী মা। এ বার আদালত যা নির্দেশে দেবে, সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে।” শুক্রবারই রানাঘাট আদালতে ওই রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে।
গত বছর মার্চে শান্তিপুরগামী ট্রেনে ওই শিশুটিকে কোলে নিয়ে বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল এক মহিলাকে। তাঁর আচরণ দেখে সন্দেহ হয় অন্য যাত্রীদের। তাঁরা চেপে ধরলে মহিলা স্বীকার করে নেন, শিশুটি তাঁর না। যাত্রীরা শিশু এবং ওই মহিলাকে আরপিএফের হাতে তুলে দেন। জেরায় মহিলা দাবি করেন, তাঁর বাড়ি হাওড়ার উলুবেড়িয়ার চেঙ্গাইলে। প্রতিবেশী এক মহিলা এই কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। কিন্তু বেশি বয়সে সন্তান হওয়ায় তিনি বিষয়টি গোপন করে তাঁর হাতে শিশুটিকে তুলে দিয়েছেন বড় করার জন্য।
এর পরেই আরপিএফ ফোনে যোগাযোগ করে শিশুটির মায়ের সঙ্গে। তিনি এসে একই কথা জানান। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে আরপিএফ শিশুটিকে তার মায়ের হাতে তুলে দিতে পারে নি। যে মহিলার কাছে শিশুটিকে পাওয়া গিয়েছিল, তাঁকে গ্রেফতার করে রানাঘাট জিআরপি। আদালত নির্দেশ দেয়, ডিএনএ পরীক্ষা করতে হবে।
সেই থেকে শিশুটি তার মায়ের সঙ্গে শান্তিপুর হাসপাতালেই আছে। বাড়ি যেতে না পারা এই শিশুটিকে আপন করে নিয়েছিলেন চিকিৎসক, নার্স এবং অন্য কর্মী— সকলেই। এমনকী তার অন্নপ্রাশনও হয়েছে এই হাসপাতালেই। সুপার জয়ন্ত বিশ্বাস বলেন, “খবরটা শুনে খুব ভাল লাগছে। তবে একটু কষ্টও হচ্ছে। টুকটুকির সঙ্গে এত দিনের সম্পর্ক। আশা করছি, এ বার ও মায়ের সঙ্গে বাড়ি ফিরতে পারবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy