পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে বাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।
বিয়ে বাড়ির আনন্দ বদলে গেল বিষাদে। বৌভাতের ঠিক আগের দিন অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন নবদম্পতি-সহ মোট ছয় জন।
সোমবার সকালে নাকাশিপাড়ার যুগপুর কলোনির বাড়ি রীতিমতো গমগম করছিল অতিথিদের ভিড়ে। বিয়ে বাড়ি জুড়ে ছিল তুমুল ব্যস্ততা, হইচই। সেই সময় বাড়ির উঠোনে সকালের জলখাবার তৈরি করছিলেন পড়শি রেখা দাস। আচমকাই গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ভস্মীভূত হয়ে যায় লাগোয়া তিনটে ঘর। এক এক করে অগ্নিদগ্ধ হন নবদম্পতি পলাশ সিকদার ও মিনতি সিকদার-সহ মোট ছয় জন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে ওই দম্পতিকে কৃষ্ণনগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এলাকার লোকজন ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন দমকলের গাফিলতির বিরুদ্ধে। তাঁদের দাবি, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে দমকলকে খবর দেওয়া হলেও ঘণ্টা তিনেক পরে দমকল পৌঁছয়। সিকদার পরিবারের দাবি, আগুন নিভিয়েছেন পাড়ার লোকজন। সময় মতো দমকল এলে এতটা ক্ষতি হত না।
রবিবার রাতে নাকাশিপাড়ার কালিদাসপাড়ায় বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ করে নববধূকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন পলাশবাবু। সোমবার সকালে অতিথিদের অনেকে চলে গেলেও থেকে গিয়েছিলেন বেশ কিছু আত্মীয়। তাঁদের জন্যই তৈরি হচ্ছিল সকালের জলখাবার। রান্নার জন্য ভাড়া নেওয়া হয়েছিল গ্যাসের কয়েকটি সিলিন্ডার। পড়শি রেখাদেবী-সহ কয়েকজন রান্নার কাজ করছিলেন। তখনই বিপত্তি বাধে। রান্নার শুরুতেই আচমকা আগুন লেগে যায়। দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে। অগ্নিদগ্ধ হন রেখাদেবী। বাড়ির একটি ঘরে এক বৃদ্ধার সঙ্গে ছিলেন নববধূ মিনতিদেবী। তাঁদের বাঁচাতে এসে একে একে অগ্নিদগ্ধ হন পলাশবাবু, তাঁর জামাইবাবু ও পড়শি দুই যুবকও।
স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘আমরা সকলেই ওই বাড়ি থেকে একটু দূরে ছিলাম। হঠাৎ চিৎকার শুনে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখি দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। দিশেহারা হয়ে লোকজন ছোটাছুটি করছেন। আমাদেরই একজন তড়িঘড়ি খবর দেয় দমকলকে। কিন্তু ঘটনার অনেক পরে দুপুর নাগাদ দমকলের তিনটি ইঞ্জিন আসে। কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার তা হয়ে গিয়েছে।’’
বৌভাতের আগের দিন এমন ঘটনায় শোকস্তব্ধ দুই পরিবার। নবদম্পতির বাবা-মা কেউউ কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। তাঁরা সকলেই রয়েছেন হাসপাতালে। ঘটনার পরই সিকদার বাড়িতে যান যুগপুর এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য সিপিএমের সুমিত্রা মণ্ডল।
তিনি বলেন, ‘‘এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ভাবা যায় না। বিয়ের পরের দিনই এমন ঘটনায় অনুষ্ঠানের আনন্দটাই উধাও হয়ে গেল। বাড়ির সব কিছুই পুড়ে গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy