Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

চুঁচুড়া থেকে নদিয়া এসে ধৃত ‘ভুয়ো’ ডাক্তার

রাজ্যে বহু জায়গাতেই যে ভুয়ো ডাক্তারেরা জাল ছড়িয়ে বসে আছে, তা কিছু দিন আগে পর্যন্তও কারও ধারণায় ছিল না। বিষয়টি সামনে আসার পরে এখন নানা জায়গা থেকে এ রকম লোকজন ধরা পড়ছে। কিছু ক্ষেত্রে সত্যিই এমবিবিএস পাশ করা ডাক্তারকেও হেনস্থা করা হয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাঁসখালি শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৭ ০২:৪২
Share: Save:

ভুয়ো চিকিৎসক সন্দেহে এক ব্যক্তিকে বেধড়ক মারধর করে বুধবার পুলিশের হাতে তুলে দিলেন নদিয়ার হাঁসখালির বাসিন্দারা। পুলিশি জেরার মুখে তিনি নিজেকে ‘অলটারনেটিভ মেডিসিন’-এর ডাক্তার বলে দাবি করেছেন। তবে কেন তিনি ছাপানো প্রেসক্রিপশনে ‘এমবিবিএস’ ডিগ্রি লিখেছিলেন তার কোনও সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি। পুলিশ তাঁকে আটক করেছে।

রাজ্যে বহু জায়গাতেই যে ভুয়ো ডাক্তারেরা জাল ছড়িয়ে বসে আছে, তা কিছু দিন আগে পর্যন্তও কারও ধারণায় ছিল না। বিষয়টি সামনে আসার পরে এখন নানা জায়গা থেকে এ রকম লোকজন ধরা পড়ছে। কিছু ক্ষেত্রে সত্যিই এমবিবিএস পাশ করা ডাক্তারকেও হেনস্থা করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাঁসখালির মুড়াগাছায় একটি ক্লাবে স্বাস্থ্যশিবির হবে বলে মঙ্গলবার প্রচার করে গিয়েছিলেন দুই মহিলা। রোগীদের নাম লেখানোর জন্য তাঁরা ৩০ টাকা করে অগ্রিমও নেন। বুধবার বেলা ১০টা নাগাদ চার জনের একটি দল মুড়াগাছার কলোনিপাড়ায় আসে। স্থানীয় ক্লাবের বারান্দায় চেম্বার খোলা হয়। ‘ডাক্তারবাবু’ রোগী দেখতে শুরু করেন, বাকিরা তাঁকে সাহায্য করতে থাকেন। নানা বয়সের মহিলা ও পুরুষ ওই স্বাস্থ্যশিবিরে এসেছিলেন। রোগী দেখার জন্য দু’শো টাকা আর ওযুধের জন্য সাড়ে চারশো টাকা করে নেওয়া হতে থাকে। ৪১ জন রোগী দেখাও হয়ে গিয়েছেল।

কিন্তু রোগী দেখা চলতে-চলতেই প্রেসক্রিপশন ও ওষুধ দেখে সন্দেহ দানা বাঁধতে থাকে ক্লাবের সদস্যদের। স্থানীয় কল্লোল মজুমদার, বলাই ব্যাপারীরা বলেন, “প্রেসক্রিপশনে ‘এমবিবিএস’ লেখা থাকলেও উনি দিচ্ছিলেন আয়ুর্বেদিক ওষুধ। তখনই সন্দেহ হয়। খেয়াল করে দেখি, কোনও রেজিস্ট্রেশন নম্বর লেখা নেই। তখনই আমাদের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়।”

এক সময়ে তাঁরা ‘ডাক্তারবাবু’কে চেপে ধরেন। পুলিশের হাতে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়। চাপের মুখে তিনি ভেঙে পড়েন। তিনি যে ‘এমবিবিএস’ নন সেটা স্বীকার করে নেন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে মারধর শুরু করে দেন। বেগতিক বুঝে তাঁর দুই সঙ্গী আগেই পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। যে যুবকের মাধ্যমে তিনি শিবির করতে এসেছিলেন, তাকেও আটক করা হয়েছে। দু’জনকেই জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জেনেছে, বছর বিয়াল্লিশের ওই ‘ডাক্তার’ আদতে বেহালার সরশুনার বাসিন্দা। বর্তমানে থাকেন হুগলির চুঁচুড়ায়। স্থানীয় এক যুবকই মোটা টাকার লাভের কথা বলে তাঁকে প্রত্যন্ত এলাকায় স্বাস্থ্যশিবির করতে নিয়ে এসেছিল। কত দিন ধরে তিনি এ ভাবে ‘এমবিবিএস’ পরিচয় দিয়ে রোগী দেখছেন, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে অনেক রাত পর্যন্ত কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE