Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

তরুণীর অপমৃত্যু, বিক্ষোভ থানায়

এক তরুণীর মৃত্যুতে ধৃত স্বামী ও তাঁর আত্মীয়দের কঠোর শাস্তি চেয়ে থানা ঘেরাও করলেন গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, দাবি মতো টাকা না পেয়ে ওই মহিলাকে খুন করে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে দিয়েছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। সোমবার হরিণঘাটার দত্তপাড়ায় তরুণীর মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার থানা ঘেরাও করেন এলাকার লোকজন। খুনের অভিযোগে মহিলার স্বামী, শ্বশুর ও ভাসুরকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সাইফুদ্দিন ও সামিলা। —নিজস্ব চিত্র

সাইফুদ্দিন ও সামিলা। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কল্যাণী শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৬ ০২:১২
Share: Save:

এক তরুণীর মৃত্যুতে ধৃত স্বামী ও তাঁর আত্মীয়দের কঠোর শাস্তি চেয়ে থানা ঘেরাও করলেন গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, দাবি মতো টাকা না পেয়ে ওই মহিলাকে খুন করে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে দিয়েছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

সোমবার হরিণঘাটার দত্তপাড়ায় তরুণীর মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার থানা ঘেরাও করেন এলাকার লোকজন। খুনের অভিযোগে মহিলার স্বামী, শ্বশুর ও ভাসুরকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, মৃতার নাম সালিমা খাতুন (১৯)। বাড়ি দত্তপাড়া গ্রামের উত্তর দত্তপাড়ায়। ১১ মাস আগে গ্রামেরই মেঠোপাড়ার সাইফুদ্দিন মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের আগে দুজনের সম্পর্ক ছিল। সালিমার বাপের বাড়ি বেশ স্বচ্ছল। অন্য দিকে সাইফুদ্দিন প্রায় বেকার। পরিবারের আর্থিক অবস্থাও সুবিধের নয়। সালিমার বাড়ির লোকের এই বিয়েতে মত ছিল না। সালিমা জোর করাতেই তাঁরা বিয়ে দিতে বাধ্য হন। বিয়েতে সাইফুদ্দিনদের দাবি মতো নগদ দু’লক্ষ টাকা, পাঁচ ভরি গয়না এবং আসবাব দেওয়া হয় বলেও তাঁদের দাবি।

সালিমার দাদা ইরাদুল ইসলাম মণ্ডলের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে সাইফুদ্দিন বারবার সালিমাকে বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দিত। সালিমার বাবা বাড়ির অন্যদের না জানিয়ে বেশ কয়েক বার টাকা দিয়েওছেন। দিন-দিন চাহিদা বাড়তেই থাকে। সম্প্রতি সাইফুদ্দিন ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। সালিমা জানায়, সে আর বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে পারবে না।

পরিবার সূত্রের খবর, সালিমা সন্তানসম্ভবা ছিলেন। ওই অবস্থাতেই টাকার জন্য মারধরের কথা তিনি দিন কয়েক আগে বাপের বাড়িতে জানিয়েওছিলেন। বাড়ির লোকজন টাকা দেওয়ার কথা ভাবেছিলেন। ইরাদুলের আফশোস, ‘‘তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল!’’

সোমবার সকালে সাইফুদ্দিনের প্রতিবেশীরা সালিমার বাপের বাড়ির লোকজনকে তাঁর মৃত্যুর খবর দেয়। তাঁরা সঙ্গে-সঙ্গে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখেন, সালিমার দেহ সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছে। সাইফুদ্দিনরাই তাঁর দেহ নীচে নামান।

সালিমার দাদার অভিযোগ, গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চিহ্ন সালিমার দেহে ছিল না। তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। এই নিয়ে দীর্ঘক্ষণ দুই পরিবারের মধ্যে তর্ক-বিতর্কও হয়।

খবর পেয়ে পুলিশ সালিমার দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। পাড়ার বাসিন্দারা সাইফুদ্দিন, তাঁর দাদা বাকিবুল্লা মণ্ডল এবং তাদের বাবা সাহার আলি মণ্ডলকে আটকে রাখে। সোমবার রাতেই তাঁদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। যাতে তাঁদের কড়া শাস্তি হয়, সেই দাবিতে এ দিন সালিমার গ্রামের প্রায় শ’দুয়েক বাসিন্দা হরিণঘাটা থানায় বিক্ষোভ দেখায়। পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ার পরে তাঁরা নিরস্ত হন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Police Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE