বেদখল: স্কুলের মাঠে তৈরি হচ্ছে ক্লাব। নিজস্ব চিত্র
সে মাঠে এত দিন ছিল পড়ুয়াদের দাপাদাপি।
মাস কয়েক ধরে, সে মাঠে নাগাড়ে ইট-বালি-সুড়কি ফেলে আস্ত দালান কোঠা তুলে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা দেখিয়ে দিল, দাদাগিরির দাপাদাপিতে কম যায় না তারাও।
স্কুলের সেই চেনা খেলার মাঠে এখন তাই ফুলিয়ার ওই সরকারি অনুদান পাওয়া ক্লাবের পাকা দোতলা বাড়ির ছায়া।
ক্লাবের সভাপতি, ফুলিয়া উপনগরীর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান, তৃণমূলের উৎপল বসাক। যিনি নির্বিকার গলায় বলছেন, ‘‘কোনও অন্যায় তো হয়নি। যা হয়েছে সব নিয়ম মেনেই।’’ তার দাবি, ওই জমি স্কুলের নয়। এ ব্যাপারে সব কাগজপত্রও রয়েছে ক্লাবের কাছে।
তবে, বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকপিছিয়ে যাননি। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন তিনি।
দিন কয়েক আগে ওই ক্লাবের পক্ষ থেকে ওই জমিতে ইটের গাঁথনি দিয়ে ক্লাব ঘর তৈরির কাজ শুরু হয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পাশপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজনও তাদের স্কুলের জমিতে ক্লাব ঘর না করার জন্য অনুরোধ করে ছিলেন। লাভ যে হয়নি বলাই বাহুল্য। তোয়াক্কা না করেই চলতে থাকে ক্লাব ঘর তৈরির কাজ। শেষ পর্যন্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক অজয় গোস্বামী শান্তিপুর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অরুপরতন দাসকে বিষয়টি জানান। কিন্তু পিছনে শাসক দল রয়েছে দেখে ঘাঁটাতে সাহস করেনি কেউই।
বিষয়টি জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ রায়কে জানিয়েই দায় সেরেছিলেন অবর পরিদর্শক। তবে নড়াচড়াটা শুরু হয় প্রশাসনিক পর্যায়ে। মহকুমাশাসকের তরফেও খোঁজ খবর নেওয়া শুরু হয়। মহকুমাশাসক ভাষ্কর মজুমদার বলেন, “আমরা সরাসরি কোন অভিযোগ না পেলেও যেহেতু এটা স্কুলের বিষয়, তাই আমরাও খতিয়ে দেখছি।”
অজয় গোস্বামী অবশ্য এই বিষয়ে সরাসরি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। বলছেন, “উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে যা জানানোর জানিয়েছি।”
এলাকার বাসিন্দা সিপিএমের শান্তিপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক অনুপ বিশ্বাস বলেন, “এর আগে যখন স্কুলের জমি দখল করে পার্ক তৈরি করছিল তখন বাধা দিতে গিয়ে আমাদের দলের কর্মীরা মার খেয়েছিল।’’ তাই কী এ বার এগিয়ে গেলেন না? অনুপ বলছেন, ‘‘না না আমরা ক্লাব ঘর করতে দেব না।”
কিন্তু কাজ তো প্রায় শেষের পথে! তাদের দাপাদাপির দিন শেষ, ছুটির পরে, তারা এখন হাঁ করে দেখে ক্লাব ঘরের বেড়ে ওঠা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy