নির্মীয়মাণ একটি বাড়ি থেকে চুরি গিয়েছে পাম্প। তা নিয়ে দিন পনেরো ধরে অশান্তি লেগেই ছিল হোগলবেড়িয়ার সীমান্ত ঘেঁষা মানিকনগরে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেই অশান্তি চরমে ওঠে। ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে সুজন বিশ্বাস নামে গ্রামেরই এক যুবক। সুজনের মা নমিতাদেবী ছেলেকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে যান। অভিযোগ, চুরির সন্দেহে তাঁর সামনেই সুজনকে গুলি করেন ওই পাম্পের মালিক অশোক বিশ্বাস। গুরুতর জখম ওই যুবক এখন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ দিন রাতেই হোগলবেড়িয়া থানায় অশোক বিশ্বাস-সহ মোট ন’জনের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের করেন সুজনের বাবা সমর বিশ্বাস। পুলিশ অভিযুক্ত তিন ভাই অশোক বিশ্বাস, অনুপ বিশ্বাস ও বাবলু বিশ্বাসকে গ্রেফতার করে। শুক্রবার তেহট্ট আদালতে তোলা হলে বিচারক অশোককে তিন দিনের পুলিশ হেফাজত ও বাকিদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। তেহট্টের এসডিপিও কার্তিক মণ্ডল বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের বাড়ি থেকে একটি বৈধ রাইফেল উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশিও চলছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন পনেরো আগে বাবলুর নির্মীয়মাণ বাড়ি থেকে একটি পাম্প চুরি হয়ে যায়। সে বিষয়ে পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ না করে নিজেরাই গ্রামের সুজন বিশ্বাস-সহ নানা লোকজনকে সন্দেহ করতে শুরু করেন। অভিযোগ, স্রেফ সন্দেহের কারণেই গত দু’দিন ধরে বেশ কয়েক জন মারধরও করেন অশোক ও তাঁর ভাইয়েরা।
অভিযোগ, এ দিন সন্ধ্যায় বাড়ির সামনে সুজনকে ডেকে নিয়ে যান বাবলু ও তাঁর ভাই। উভয় পক্ষের মধ্যে শুরু হয় বচসা। বাড়ি থেকে ঘটনাস্থলে ছুটে যান সুজনের মা নমিতাদেবী। ছেলেকে বাড়ি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন তিনি। সেই সময় বাবলুর ভাই অশোক সুজনের কোমরে গুলি করে। সুজনকে প্রথমে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতাল ও পরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়।
শুক্রবার অভিযুক্তদের বাড়িতে কোনও পুরুষ সদস্যদের দেখা মেলেনি। অশোক বিশ্বাসের স্ত্রী তনুশ্রীদেবী বলেন, ‘‘স্বামী-সহ আমার পরিবারের লোকদের মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। আমাদের বাড়ি নির্মীয়মাণ বাড়ি থেকে একটি পাম্প চুরি যায়। সেই বিষয়েই এলাকার কয়েক জনকে ডেকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছিল। সেই সময় সুজন ও গ্রামের কিছু লোকজন এসে আমাদের বাড়ির সামনে অশান্তি শুরু করে। তখন ওদের মধ্যেই কেউ হয়তো গুলি চালিয়েছে।’’
গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, শুধু এই পাম্প চুরির বিষয় বলেই নয়, যে কোনও ব্যাপারে প্রায়ই এলাকার লোকজনকে মারধর করা বাবলু ও তাঁর ভাইদের দীর্ঘ দিনের অভ্যাস। পুলিশে অভিযোগ জানানোর কথা বললে বাড়িতে রাখা রাইফেল দিয়ে খুনের হুমকিও দেন। তবে সত্যিই সত্যিই যে তাঁরা এ ভাবে গুলি চালিয়ে দেবেন তা ভাবতে পারেননি কেউই। গ্রামে আর যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য বৃহস্পতিবার রাত থেকেই পুলিশি টহল চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy