শুভেন্দু অধিকারী। ছবি: সংগৃহীত
আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের আগে মুর্শিদাবাদে ঘর গোছাতে নামল তৃণমূল। এবং জেলার ৮০ শতাংশ নির্বাচিত সদস্য তৃণমূলের সঙ্গে থাকলেও বেশ কিছু এলাকায় এখনও সাংগঠনিক দুর্বলতা আছে বলে সতর্ক করলেন দলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী।
বুধবার কান্দিতে জেলা পরিষদের নির্মীয়মাণ অডিটোরিয়ামে তৃণমূলের বর্ধিত সভায় এসে শুভেন্দু বলেন, “রাজ্য নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে পঞ্চায়েত ভোটের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে।” কিন্তু মুর্শিদাবাদে দল যে এখনও পুরোপুরি প্রস্তুত নয়, সেই অস্বস্তিও তিনি গোপন করেননি।
রাজ্যে ক্ষমতায় আসা ইস্তক জেলা পরিষদ থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত পর্যন্ত সব স্তরে নেতাদের তৃণমূলমুখী দল বদলের জেরে বেশির ভাগ বোর্জ হাতে এসে গিয়েছে তৃণমূলের। কিন্তু সাধারণ কর্মী ও ভোটারদের একটা বড় অংশই ওই দলত্যাগী নেতাদের অনুগামী হননি বলে টানা দাবি করে আসছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ও তাঁর শিবির।
কংগ্রেসের এই দাবিতে যে কিছুটা হলেও সত্যতা আছে, তা ভাল মতোই জানেন তৃণমূলের নেতারা। ২০১৬-র বিধানসভা ভোটের আগে জেলায় যে কিছুই তাঁদের হাতে ছিল না তা মনে করিয়ে দিয়ে শুভেন্দু বলেন, “ওই ভোটের পরে ২৬টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ২০টি, আড়াইশো গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ২১৫টি আমাদের দখলে এসেছে। আটটি পুরসভা এবং জেলা পরিষদও। কিন্তু তবুও আমরা সাংগঠনিক ভাবে পিছিয়ে আছি। সেটা অস্বীকার করার কিছু নেই।” উদাহরণ হিসেবে তিনি নবগ্রাম, রেজিনগর, ভগবানগোলা, ভরতপুর, কান্দির কথা তোলেন। শুভেন্দু জানান, সাংগঠনিক প্রস্তুতি সারতে পঞ্চায়েত ভোটের আগে প্রতি মাসে জেলাস্তরে দু’টি ও প্রত্যেক ব্লকে দু’টি করে বৈঠক করতে হবে। অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে গরহাজির হওয়া চলবে না।
তৃণমূলের সংগঠন পোক্ত হওয়ার পথে অন্যতম প্রধান বাধা যে দলেরই অন্তর্কলহ এবং দুর্নীতি, তা ভাল করে জানেন শীর্ষনেতারা। শুভেন্দু বলেন, “মঞ্চে আসার সময় দেখলাম সৌমিক হোসেন ও শঙ্কর সিংহের নাম মোটা অক্ষরে লেখা, বাকিদের নাম সরু অক্ষরে। ওঁরা নিশ্চয়ই এমন নির্দেশ দেননি। যাঁরা এ সব করছেন, তাঁরা সাবধান হোন। আমাদের নেত্রী এক জন, তাঁর নির্দেশে আমরা কাজ করি। মিলেমিশে থাকুন।” জেলা সভাপতি মান্নান হোসেন বলেন, “পঞ্চায়েতের প্রধান বা সদস্যদের নামে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর বিলির টাকা তোলার অভিযোগ পাচ্ছি বহু জায়গা থেকে। আমরা এটা মেনে নেব না।” শুভেন্দু বলেন, “বিডিওর পাশে বসে সরকারি কাজকর্মে হস্তক্ষেপ করাও চলবে না। ব্লক অফিস নয়, দলের কার্যালয়ে বসে কাজ করুন।”
কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের জমি ছিনিয়ে নিতে জেলায় অতিরিক্ত পর্যবেক্ষক করা হয়েছে নদিয়ার দাপুটে নেতা, সদ্য কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে আসা শঙ্কর সিংহকে। তিনিও হাজির ছিলেন মঞ্চে। শঙ্কর বলেন, “কেউ আমায় ডাকলেই আমি চলে আসব।” শুভেন্দু জানান, পঞ্চায়েত ভোটে ব্যানারে শুধু নেত্রীর ছবিই থাকবে, আরও কারও ছবি দেওয়া চলবে না। ভোটের আগে কোন ব্লক সভাপতি বদল হবে না। তবে লালগোলা ব্লক সভাপতি ‘বিজেপি ভারত ছাড়ো’ কর্মসূচি পালন করেননি, ভোটার তালিকায় নাম সংযোজন-বিয়োজনেও সক্রিয় ভূমিকা নেননি, তাই তাঁকে পরিবর্তন করা হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy