Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

শ্লীলতাহানিতে ছাত্রী আত্মঘাতী, অবরোধ

ময়নাতদন্তের পর রবিবার রাতে রিঙ্কির দেহ গ্রামে ফিরতেই শুরু হয় জাতীয় সড়ক অবরোধ। চুয়াডাঙার কাছে, রাতভর চাকদহ-বনগাঁ সড়ক আটকে থাকায়, যান চলাচল থমকে যায়। শেষ পর্যন্ত, পুলিশ অভিযোগ নেওয়ায় সোমবার ভোরের দিকে অবরোধ ওঠে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৭ ০১:২১
Share: Save:

বাড়িতে ফিরেই কীটনাশক খায় দশম শ্রেণির ছাত্রীটি। স্থানীয় হাসপাতাল ঘুরে পাঠানো হয়েছিল কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে। লাভ হয়নি। শনিবার দুপুরে, সেখানেই মারা যায় রিঙ্কি হীরা (১৬)। আর তার পরেই উত্তেজনা ছড়ায় তার গ্রাম চুয়াডাঙায়। ভাঙচুর করা হয়, এক যুবকের বাড়িতে। গ্রামবাসীদের দাবি, ওই যুবক প্রকাশ্যে তার শ্লীলতাহানি করা সত্ত্বেও অভিযোগ পুলিশ নেয়নি।

ময়নাতদন্তের পর রবিবার রাতে রিঙ্কির দেহ গ্রামে ফিরতেই শুরু হয় জাতীয় সড়ক অবরোধ। চুয়াডাঙার কাছে, রাতভর চাকদহ-বনগাঁ সড়ক আটকে থাকায়, যান চলাচল থমকে যায়। শেষ পর্যন্ত, পুলিশ অভিযোগ নেওয়ায় সোমবার ভোরের দিকে অবরোধ ওঠে। পুলিশ কেন মুখ ফিরিয়ে থাকল? নদিয়ার পুলিশ সুপার শিসরাম ঝাঝারিয়া অবশ্য বলছেন, “অভিযোগ নেওয়া হয়নি এমন তো নয়, আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ নেওয়া হয়েছে। ছেলেটি পালিয়েছে, আমরা খোঁজ করছি।’’

গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, গ্রামের রাধাকৃষ্ণন পল্লির কার্তিক বিশ্বাসের সঙ্গে রিঙ্কির সম্পর্ক অবশ্য নতুন নয়। দু’ বাড়ির লোকজন বিয়েতে প্রাথমিক ভাবে সম্মতও ছিলেন। কিন্তু বিশ্বাস বাড়ির ‘হালচাল’ কিছু দিন ধরে তেমন পছন্দ হচ্ছিল না হীরা পরিবারের। ছেলেটি সম্পর্কেও ‘নানা কথা’ শোনা যাচ্ছিল, তাই পিছিয়েই এসেছিলেন তাঁরা। তা নিয়ে টানাপড়েনও চলছিল। রিঙ্কির বাবা প্রভাস বলেন,“আমরা বিয়েতে রাজি ছিলাম। ওঁদের ব্যবহারে পিছিয়ে আসি। ছেলেটির ব্যবহারও ভাল লাগছিল না। তার জন্য মেয়েকে প্রকাশ্যে শ্লীলতাহানি করা হবে!”

বিষ্ণুপুর বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীটি বিষ্ণুপুরে পড়তে গিয়েছিল শুক্রবার বিকেলে। তার বাড়ির লোকের দাবি, ওই সন্ধেয় একটি ছেলে তাকে ডেকে নিয়ে যায় বেলের মাঠ এলাকায়। সেখানে কার্তিক তার সাঙ্গোপাঙ্গদের সঙ্গে অপেক্ষা করছিল। সেখানে তার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করা হয়। সকলের সামনে এই অপমান সহ্য করতে না পেরে বাড়ি ফিরেই কীটনাশক খায় রিঙ্কি। চাকদহ এবং কল্যাণীর হাসপাতাল ঘুরে কলকাতার হাসপাতালে ভর্তির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মারা যায় সে।

তবে, কার্তিকের এক বন্ধুর দাবি, ‘‘শ্লীলতাহানির কোনও ঘটনাই ঘটেনি। বরং তাদের বিয়ে ভেঙে যাওয়া নিয়ে ওরা দু’জনেই খুব কান্নাকাটি করেছিল সে দিন।’’ তা হলে কি ভাঙা সম্পর্কের জেরেই আত্মঘাতী হল মেয়েটি? তার কোনও স্পষ্ট উত্তর অবশ্য মেলেনি।

রবিবার সকালে চাকদহ থানায় অভিযোগ করতে যায় তার পরিবারের কয়েক জন। বসিয়ে রাখলেও তা শেষ পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। গ্রামে উত্তেজনা বা়ড়ায় কার্তিকের নামে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suicide Death Harassment Road Blockade Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE